Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

ব্রাজিলে শুরু হচ্ছে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন, থাকছেন না পুতিন-শি জিনপিং

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৫, ০৭:৩০ পিএম

ব্রাজিলে শুরু হচ্ছে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন, থাকছেন না পুতিন-শি জিনপিং

ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরোতে শুরু হচ্ছে ব্রিকস জোটের নতুন শীর্ষ সম্মেলন। জোটের সদস্য দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা ইতোমধ্যে শহরটিতে জড়ো হচ্ছেন। তবে এবারের সম্মেলনে উপস্থিত থাকছেন না দুই প্রভাবশালী নেতা- চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

রোববার শুরু হওয়া এই সম্মেলনে জোটটি নিজেকে পশ্চিমা আধিপত্যের বিকল্প হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করলেও আলোচনায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি ও পশ্চিমা অর্থনৈতিক চাপই মূল প্রাধান্য পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ব্রিকস নামটি এসেছে প্রাথমিক পাঁচ সদস্য—ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা—এই দেশগুলোর নামের প্রথম অক্ষর থেকে।

২০০৯ সালের প্রথম সম্মেলনের পর জোটটি সম্প্রসারণের পথে এগিয়ে গেছে। বর্তমানে এর সদস্য সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০-এ, নতুন সদস্য হিসেবে যুক্ত হয়েছে মিশর, ইথিওপিয়া, ইরান, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। এছাড়া জোটের রয়েছে ১০টি কৌশলগত অংশীদার, যাদের মধ্যে রয়েছে বেলারুশ, কিউবা ও ভিয়েতনামের মতো দেশ।

তবে এবারই প্রথম শি জিনপিং কোনো ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে অনুপস্থিত থাকছেন। তার পরিবর্তে চীনের প্রতিনিধিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী লি চিয়াং।

এদিকে পুতিনের অনুপস্থিতির কারণ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। ২০২২ সালে ইউক্রেনে হামলার প্রেক্ষিতে এই পরোয়ানা জারি হওয়ায় আইসিসির সদস্য ব্রাজিলে গেলে তাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে পড়তে হতে পারে—এ জটিলতা এড়াতেই রুশ প্রেসিডেন্ট এ সম্মেলনে আসছেন না বলে মনে করা হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই দুই নেতার অনুপস্থিতি জোটের সংহতি, ঐক্য ও বৈশ্বিক প্রভাব নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলছে।

সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে রয়েছে বৈশ্বিক স্বাস্থ্যনীতি, জলবায়ু পরিবর্তন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও বাণিজ্য ব্যবস্থাপনায় গ্লোবাল সাউথের ভূমিকা। ব্রিকস নেতারা ট্রাম্প প্রশাসনের ‘বাছবিচারহীন’ শুল্কনীতিকে বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য হুমকি আখ্যা দিয়ে তার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানানোর প্রস্তুতিও নিচ্ছেন।

তবে মতবিভেদও কম নয়। সূত্রমতে, গাজা ও ইরান সংক্রান্ত ইস্যুতে কিছু সদস্য দেশ জোটের পক্ষ থেকে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণের দাবি জানালেও অন্যরা তা এড়িয়ে যেতে চাইছে।

সংবেদনশীলতা বিবেচনায় সূত্রটির নাম প্রকাশ করা হয়নি।

সম্মেলনে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান এবং মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি-র উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

আল-জাজিরার সাংবাদিক লুসিয়া নিউম্যান মনে করেন, ব্রিকস একটি সুসংগঠিত জোট নয়, বরং একে ‘বিশ্বব্যাপী বৈপ্লবিক প্রভাব’ ফেলার মতো ঐক্যবদ্ধ বলেও মনে করা যায় না। মূল প্রশ্ন হচ্ছে—বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও স্বার্থ থাকা দেশগুলো নিয়ে ক্রমশ প্রসারমান এই জোট আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে আদৌ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে কিনা।

ব্রিকস এখন বিশ্বের অর্ধেক জনসংখ্যা, মোট ভূমির ৩৬ শতাংশ এবং বিশ্ব অর্থনীতির এক চতুর্থাংশ প্রতিনিধিত্বের দাবি করলেও বাস্তবে এর কার্যকারিতা নির্ভর করছে ভবিষ্যতে সদস্যদের অভ্যন্তরীণ ঐকমত্য ও সমন্বয়ের ওপর।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম