রমজানের প্রস্তুতি নিন রজব মাস থেকে
জাহিদ হাসান
প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
চলছে রজব মাস। রজব মাসকে রমজানের দরজা বলা হয়। রজব আর রমজানের মাঝে শুধু শাবান মাসের দূরত্ব। এ মাস রমজানুল মুবারককে স্বাগত জানানোর জন্য রুহানি ও শারীরিক প্রস্তুতি শুরু করার সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। রমজানুল মুবারকের প্রকৃত ফায়দা সেই লোকেরাই পেতে পারেন, যারা পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে এতে প্রবেশ করেন। কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করে আমরা এ প্রস্তুতি শুরু করতে পারি-
আত্মসমালোচনা
বিগত দিনগুলোতে যেসব গুণাহ হয়ে গেছে, সেগুলোর আত্মসমালোচনা করতে পারেন। গুনাহের আত্মোপলব্ধি করে এ মাসকে কাজে লাগাতে পারেন আল্লাহর দিকে ফিরে আসার জন্য, তওবা করার জন্য এবং অতীতের ভুল-ত্রুটিগুলোর আন্তরিক অনুতাপ করার জন্য।
মুহাসাবা বা আত্মসমালোচনা মুমিনের অনেক বড় গুণ। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন : ‘বুদ্ধিমান সেই ব্যক্তি, যে তার নফসের হিসাব নেয় এবং মৃত্যুপরবর্তী জীবনের জন্য কাজ করে; আর দুর্বল ওই ব্যক্তি, যে নিজের নফসের কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করে এবং আল্লাহর কাছেও আশা-আকাঙ্ক্ষা রাখে।’ (তিরমিযি, হাদিস নং-২৪৫৯)।
রোজার অভ্যাস গড়ে তুলুন
সপ্তাহে এক দুদিন রোজা রাখা শুরু করতে পারেন। এতে শরীর ও মন দুটিই রমজানে পূর্ণ মাস রোজার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে।
কুরআন তিলাওয়াত
প্রতিদিন কুরআনের একটি নির্দিষ্ট অংশ পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। এর ফলে রমজানে খতমে কুরআনের পথ সহজ হয়ে যাবে।
কুরআন শেখা
যদি এখনো কুরআনের হরফ ও তাজবিদ শিখে না থাকেন, তাহলে আজ থেকেই এর চিন্তা করুন যাতে রমজানে সহিহ-শুদ্ধ তিলাওয়াত করতে পারেন এবং তিলাওয়াতের বরকত লাভ করতে পারেন। মনে রাখবেন, সঠিক তাজবিদসহ কুরআন পড়া প্রত্যেক মুসলমানের ওপর ফরজ। এ থেকে উদাসীনতা গুনাহের কারণ হয়।
গুনাহ বর্জন
রজব মাসে যতটা সম্ভব গুনাহ, অপ্রয়োজনীয় কথা ও কাজ ত্যাগ করা উচিত। এতে রমজানে অন্তর পবিত্র, পরিচ্ছন্ন ও ইবাদতের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবে। জীবন থেকে অহেতুক ও সময় নষ্টকারী কাজগুলো বাদ দিন। যেমন : স্মার্টফোনের অযথা ব্যবহার, হোয়াটসঅ্যাপ, সোশ্যাল মিডিয়া, টেলিভিশন, নিউজ চ্যানেল ইত্যাদি বাদ দিন। সম্পূর্ণরূপে বাদ দিতে না পারলে যথাসম্ভব ব্যবহার কমিয়ে দিন। এতে একাগ্র এবং পবিত্র অন্তর নিয়ে রমজানে প্রবেশ করা যাবে।
দোয়া
রাসূলুল্লাহ (সা.) এ মাসে বিশেষ দোয়া পড়তেন : ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শা’বানা ওয়া বাল্লিগনা রামাদান’ (হে আল্লাহ! আমাদের জন্য রজব ও শাবানে বরকত দান করুন এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন)। (শুআবুল ঈমান : ৩৫৩৪)। বেশি বেশি এ দোয়ার আমল শুরু করুন।
রজব থেকে শুরু করলে শাবানে আরও বেশি প্রস্তুতি নেওয়া সহজ হয়ে যায়, আর পুরোপুরি প্রস্তুত অবস্থায় রমজানে প্রবেশ করা যায়। আল্লাহ আমাদের সবাইকে রজব-শাবানে উত্তম প্রস্তুতি নিয়ে রমজানে পৌঁছার এবং পূর্ণ বরকত হাসিল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
