ইসলামী জীবন
ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা, যা শুধু ইবাদত বা ধর্মীয় অনুশাসনেই সীমাবদ্ধ নয়—বরং সমাজের প্রতিটি স্তরে শান্তি, ন্যায়বিচার ও মানবিকতার বিস্তারে গুরুত্ব দেয়। একটি আদর্শ সমাজ গঠনে ইসলামের ভূমিকা গভীর, সুসংহত এবং সময়োপযোগী। ইসলামে প্রতিটি মানুষ সমান মর্যাদার অধিকারী। জাতি, বর্ণ, ভাষা বা শ্রেণিভেদে বৈষম্য করার সুযোগ নেই। কুরআনে বলা হয়েছে, “তোমাদের মধ্যে সেই শ্রেষ্ঠ, যে আল্লাহভীরু।” (সূরা হুজুরাত: ১৩)। ইসলাম একজন মুসলমানকে কেবল ব্যক্তিগত উন্নতির শিক্ষা দেয় না; বরং পাশের মানুষের প্রয়োজন, দুঃখ ও কষ্টে সাড়া দেওয়ার নির্দেশনা দেয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে কেউ তখনই প্রকৃত মুসলিম হবে, যখন সে তার ভাইয়ের জন্যও সেই ভালোবাসা প্রদর্শন করবে, যা সে নিজের জন্য চায়।” (বুখারি ও মুসলিম)
ইসলামে যাকাত, সদকা ও কর্জে হাসানা—এই তিনটি ব্যবস্থার মাধ্যমে ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে একটি ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়। সমাজের অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা এবং দারিদ্র্য বিমোচনে এই নীতিগুলি অত্যন্ত কার্যকর। ইসলাম নারীকে শুধুমাত্র ঘরকেন্দ্রিক জীবনেই সীমাবদ্ধ রাখেনি বরং তার শিক্ষা, উত্তরাধিকার, বিবাহ ও সামাজিক অংশগ্রহণ—সব ক্ষেত্রেই সমান গুরুত্ব দিয়েছে। ইসলাম নারীর মর্যাদা রক্ষা করে তাকে সম্মান ও নিরাপত্তা দিয়েছে। বর্তমান বৈষম্য, সহিংসতা ও মূল্যবোধের অবক্ষয়ের যুগে ইসলাম সমাজে নৈতিকতা, সহিষ্ণুতা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের এক স্থায়ী দৃষ্টান্ত। সন্ত্রাস বা চরমপন্থা ইসলামের নামে প্রচারিত হলেও প্রকৃত ইসলাম তা কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করে।
ইসলাম ও সমাজ পরস্পর সংযুক্ত। একটি আদর্শ সমাজ গঠনে ইসলামের নীতি ও আদর্শ শুধু প্রাসঙ্গিকই নয়, বরং অপরিহার্য। সহানুভূতি, দায়িত্ববোধ ও ন্যায়ের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা সমাজই হতে পারে একটি প্রকৃত ইসলামিক সমাজের প্রতিচ্ছবি।