শবেবরাতের করণীয় ও বর্জনীয়
শাইখুল ইসলাম আল্লামা তাকী উসমানী
২১ এপ্রিল ২০১৯, ২১:০৪:৩৫ | অনলাইন সংস্করণ
শবেবরাত সম্পর্কে এ কথা বলা একেবারেই ভুল যে, শবেবরাত কোন হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়। বরং আসল সত্য হল, ১০ জন সাহাবি থেকে এই হাদিস বর্ণিত আছে। যে হাদিসগুলোয় নবী করীম (সা.) এই রাতের ফজিলত বর্ণনা করেছেন।
সেই হাদিসগুলোর মধ্যে কিছু হাদিস সনদের দিক থেকে যদিও কিছুটা দূর্বল। যার কারণে কয়েকজন আলেম বলেছেন এই রাতের ফজিলতের কথা ভিত্তিহীন। কিন্তু এর স্বপক্ষে অন্য অনেক হাদিস পাওয়া যায়। যার মাধ্যমে সেগুলোর দূর্বলতা দূর হয়ে যায়।
তাই এই রাতের ফজিলতের কথাকে ভিত্তিহীন বলা মারাত্মক ভুল।
শবেবরাতের ইবাদত
উম্মতে মোহাম্মাদীর সোনালী তিন যুগেও অর্থাৎ সাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈন, তাবে তাবেঈনের যুগেও এই রাতের ফজিলত অর্জনের চেষ্টা করা হত। সুতরাং এটাকে বেদআত বলা ঠিক না।সঠিক কথা হল, এটা ফজিলতের রাত। এ রাতে ইবাদত করা সওয়াব অর্জনের মাধ্যম। তাই এ রাতে ইবাদতের বিশেষ গুরুত্ব আছে
ইবাদতের কোন বিশেষ পদ্ধতি নেই
তবে এ রাতে ইবাদতের এমন বিশেষ কোন পদ্ধতি প্রমাণিত নেই যে সে পদ্ধতিতেই আমল করতে হবে। যেমন শবেবরাতে বিশেষ পদ্ধতিতে নামাজ পড়তে হবে। প্রথম রাকাতে অমুক সূরা পড়তে হবে দ্বিতীয় রাকাতে অমুক সূরা পড়তে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। এগুলোর কোন ভিত্তি নেই। এগুলো ভিত্তিহীনকথা। বরং এই রাতে যতটুকু সম্ভব নফল ইবাদত করতে হবে। নফল নামাজ, কোরআন শরীফ পড়তে হবে। জিকির, তাসবিহ ও দোয়া করতে হবে। কিন্তু এর জন্যে বিশেষ কোন পদ্ধতি শরীয়তে প্রমাণিত নেই।
শবেবরাতে কবরস্থানে যাওয়া প্রসঙ্গ
এ রাতের আরও একটি আমলের কথা হাদিসের একটি রেওয়ায়েত দ্বারা প্রমাণিত আছে। সেটি হলো, নবী করীম (সা.) এই রাতে জান্নাতুন বাকীতে গিয়েছিলেন। যেহেতু নবীজি কবরস্থানে গিয়েছিলেন। তাই অনেক মুসলমান শবেবরাতে কবরস্থানে যায়। এ বিষয়ে আমার পিতা মুফতি মুহম্মাদ শফি রহ. এর একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে। তিনি বলেছেন, নবীজি থেকে যে কাজ যেভাবে যে পদ্ধতিতে প্রমাণিত হয়েছে সেই আমলকে সেই পর্যায়ে আর সেই পদ্ধতিতেই বাকি রাখতে হবে। এরচেয়ে অগ্রসর হওয়া যাবেনা। সুতরাং নবী করীম (সা.) থেকে কবরস্থানে যাওয়ার আমল যেহেতু একবার পাওয়া গেছে। তাই কেউ যদি জীবনে একবার কবরস্থানে যায় তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু প্রত্যেক শবেবরাতে কবরস্থানে যাওয়া, সেটিকে জরুরি মনে করা, এই আমলকে শবেবরাতের অংশ ধরে নিয়ে 'এটা ছাড়া শবেবরাত অসম্পূর্ণ' মনে করা রাসূল সা. থেকে বর্ণিত নিয়মের বাহিরে চলে যাওয়ার অন্তর্ভুক্ত।
অনুবাদ: আসিফ আসলাম
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
শবেবরাতের করণীয় ও বর্জনীয়
শবেবরাত সম্পর্কে এ কথা বলা একেবারেই ভুল যে, শবেবরাত কোন হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়। বরং আসল সত্য হল, ১০ জন সাহাবি থেকে এই হাদিস বর্ণিত আছে। যে হাদিসগুলোয় নবী করীম (সা.) এই রাতের ফজিলত বর্ণনা করেছেন।
সেই হাদিসগুলোর মধ্যে কিছু হাদিস সনদের দিক থেকে যদিও কিছুটা দূর্বল। যার কারণে কয়েকজন আলেম বলেছেন এই রাতের ফজিলতের কথা ভিত্তিহীন। কিন্তু এর স্বপক্ষে অন্য অনেক হাদিস পাওয়া যায়। যার মাধ্যমে সেগুলোর দূর্বলতা দূর হয়ে যায়।
তাই এই রাতের ফজিলতের কথাকে ভিত্তিহীন বলা মারাত্মক ভুল।
শবেবরাতের ইবাদত
উম্মতে মোহাম্মাদীর সোনালী তিন যুগেও অর্থাৎ সাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈন, তাবে তাবেঈনের যুগেও এই রাতের ফজিলত অর্জনের চেষ্টা করা হত। সুতরাং এটাকে বেদআত বলা ঠিক না। সঠিক কথা হল, এটা ফজিলতের রাত। এ রাতে ইবাদত করা সওয়াব অর্জনের মাধ্যম। তাই এ রাতে ইবাদতের বিশেষ গুরুত্ব আছে
ইবাদতের কোন বিশেষ পদ্ধতি নেই
তবে এ রাতে ইবাদতের এমন বিশেষ কোন পদ্ধতি প্রমাণিত নেই যে সে পদ্ধতিতেই আমল করতে হবে। যেমন শবেবরাতে বিশেষ পদ্ধতিতে নামাজ পড়তে হবে। প্রথম রাকাতে অমুক সূরা পড়তে হবে দ্বিতীয় রাকাতে অমুক সূরা পড়তে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। এগুলোর কোন ভিত্তি নেই। এগুলো ভিত্তিহীন কথা। বরং এই রাতে যতটুকু সম্ভব নফল ইবাদত করতে হবে। নফল নামাজ, কোরআন শরীফ পড়তে হবে। জিকির, তাসবিহ ও দোয়া করতে হবে। কিন্তু এর জন্যে বিশেষ কোন পদ্ধতি শরীয়তে প্রমাণিত নেই।
শবেবরাতে কবরস্থানে যাওয়া প্রসঙ্গ
এ রাতের আরও একটি আমলের কথা হাদিসের একটি রেওয়ায়েত দ্বারা প্রমাণিত আছে। সেটি হলো, নবী করীম (সা.) এই রাতে জান্নাতুন বাকীতে গিয়েছিলেন। যেহেতু নবীজি কবরস্থানে গিয়েছিলেন। তাই অনেক মুসলমান শবেবরাতে কবরস্থানে যায়। এ বিষয়ে আমার পিতা মুফতি মুহম্মাদ শফি রহ. এর একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে। তিনি বলেছেন, নবীজি থেকে যে কাজ যেভাবে যে পদ্ধতিতে প্রমাণিত হয়েছে সেই আমলকে সেই পর্যায়ে আর সেই পদ্ধতিতেই বাকি রাখতে হবে। এরচেয়ে অগ্রসর হওয়া যাবেনা। সুতরাং নবী করীম (সা.) থেকে কবরস্থানে যাওয়ার আমল যেহেতু একবার পাওয়া গেছে। তাই কেউ যদি জীবনে একবার কবরস্থানে যায় তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু প্রত্যেক শবেবরাতে কবরস্থানে যাওয়া, সেটিকে জরুরি মনে করা, এই আমলকে শবেবরাতের অংশ ধরে নিয়ে 'এটা ছাড়া শবেবরাত অসম্পূর্ণ' মনে করা রাসূল সা. থেকে বর্ণিত নিয়মের বাহিরে চলে যাওয়ার অন্তর্ভুক্ত।
অনুবাদ: আসিফ আসলাম