ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
মাতা-পিতা হয়েছেন বলে যে আপনি সন্তানের প্রতি আপনার কর্তব্য কর্ম সম্পাদন করবেন ব্যাপারটা এমন নয়। আপনি আপনার সন্তানের যাবতীয় অধিকার বুঝিয়ে দেবেন। আপনার প্রতি এটিই ইসলামের নির্দেশ।
কেননা মাতা পিতা হিসেবে আপনি অবশ্যই কামনা করবেন যে আপনার সন্তান আপনার জন্য পৃথিবীর জীবন ও পরকালের জীবনে গৌরবের কারণ হোক।
মাতা পিতার কাছে সন্তানের দাবি: মাতা পিতার কাছে সন্তানের প্রথম দাবি হল সন্তানকে মাতা পিতা নিজের উপর বোঝা মনে করবে না । আরাম-আয়েশ সুখ-সম্ভোগের পথে সন্তানকে অন্তরায় মনে করবে না।
বরং সন্তান যে আল্লাহ তাআলার অমূল্য নেয়ামত একথা মাতা-পিতা স্মরণে রাখবেন । মনে রাখতে হবে পৃথিবীতে আম্মু আব্বু ডাক শোনার সৌভাগ্য সবার হয়না । আল্লাহ অসীম অনুগ্রহ করে সন্তান দান করে থাকেন।
আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে সন্তান পুরস্কার হিসেবে আসে। সুতরাং সন্তানের মূল্য মর্যাদা মাতা পিতাকে অনুধাবন করতে হবে। মাতা-পিতার মনে রাখতে হবে সন্তান আল্লাহর অমূল্য নেয়ামত। সন্তান পৃথিবীতে আপনার মান-সম্মান মর্যাদা বৃদ্ধি করে সন্তান আপনার প্রতিষ্ঠিত নিয়ম নীতি ও আদর্শকে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়। আপনি পৃথিবীতে যে আদর্শ রেখে ইন্তেকাল করবেন সে আদর্শকে পরে জীবিত রাখবেন আপনার সন্তান।
মুসলিম মাতা-পিতার জঘন্যতম অপরাধ: সন্তানকে নিজের জীবনের জন্য মুসিবত মনে করা মারাত্মক অপরাধ। মানুষের হাতে গড়া নোংরা সভ্যতা মানুষের মস্তিষ্ক এক কথা বদ্ধমূল করে দিচ্ছে যে, এক বা দুইয়ের অধিক সন্তান দরিদ্রতা বয়ে আনে।
সন্তান সুখের পথে অন্তরায় সৃষ্টি করে সুতরাং সন্তানকে পৃথিবীতে আসতে দেওয়া যাবেনা। সন্তান যাতে গর্ভে প্রবেশ করতে না পারে প্রসবকালে গর্ভপাত ঘটানো অথবা গর্ভের সন্তানকে হত্যার ব্যবস্থা করতে হবে।
অতীতকালে জন্মনিয়ন্ত্রণের আধুনিক ঘৃণ্য ব্যবস্থা না থাকায় সন্তান জন্ম নেওয়ার সাথে সাথেই হত্যা করা হতো। ইসলাম এ জঘন্য পাপ থেকে মানুষকে শুধু বিরতই করেনি পিতা-মাতার হৃদয়ে সন্তানের জীবনের মূল্য ও মর্যাদার প্রবল অনুভূতি সৃষ্টি করে দিয়েছেন।
অতীতকালে সন্তান হত্যা করা প্রথায় পরিণত হয়েছিল। ইসলাম সেই নিষ্ঠুর প্রথা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। আরবে সন্তান হত্যার নিষ্ঠুর কাহিনী ইতিহাসের পৃষ্ঠা কলঙ্কিত করে রেখেছে।
ভারতে সেই প্রাচীনকাল হতে বর্তমান সময় পর্যন্ত সন্তানকে হত্যা করার অমানবিক নিষ্ঠুর প্রথা চালু রয়েছে। সন্তান থাকলে তার পেছনে অর্থ ব্যয় হবে এ ভয়ে বর্তমানে অনেকেই যেমন সন্তানকে আপদ মনে করে সন্তান গ্রহণ করতে চায় না। তেমনি অতীতেও এ ভয় করা হতো।
দরিদ্রতার ভয় হত্যা করা হতো নিষ্পাপ অবোধ শিশু সন্তানকে। ইসলাম এর নিন্দা জানিয়ে বলেছে, খাদ্যের মালিক তোমরা নও। আল্লাহর অসীম অনুগ্রহ করে তোমাদেরকে খাদ্য দান করেন।
সন্তানের বড় হয় ওঠা তার বুদ্ধির বিকাশ মানসিক গঠন যথাযথভাবে হওয়ার জন্য মাতা-পিতার যত্ম আদর ভালোবাসা মায়া-মমতা একান্ত প্রয়োজন। কারণ শিশুর জন্য তার শৈশবকাল অত্যন্ত অসহায়ের সময়।
এ সময় প্রতিটি প্রয়োজনে অন্যের মুখাপেক্ষী থাকে। এজন্য মাতা পিতার কাছে সন্তানের বড় অধিকার যে তাকে তার মাতা পিতা অন্তর দিয়ে প্রতিপালন করবে।
লেখক: সাংবাদিক ও সমাজ কর্মী
shorifamim54@gmail.com
