Logo
Logo
×

ইসলাম ও জীবন

পশুর শিং ভেঙে বা ফেটে গেলে কুরবানি হবে?

Icon

ইসলাম ও জীবন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৫:১৮ পিএম

পশুর শিং ভেঙে বা ফেটে গেলে কুরবানি হবে?

প্রশ্ন: বাজারে কুরবানির গরু কিনতে গেলে দেখা যায়, কোনো কোনো গরুর জন্মগতভাবেই শিং থাকে না, তবে কুরবানির বয়স হয়েছে। কোনো কোনো গরুর শিং-এর অগ্রভাগ ভাঙ্গা থাকে। জানার বিষয় হল, এ দু ধরনের গরু দ্বারা কুরবানি করলে তা সহিহ হবে কি না?

উত্তর: যে পশুর শিং ওঠেনি সে পশু দ্বারাও কুরবানি করা জায়েজ। কুরবানি সহিহ হওয়ার জন্য শিং থাকা জরুরি নয়। 

তদ্রূপ যে পশুর শিংয়ের অগ্রভাগ ভেঙে গেছে তা দ্বারাও কুরবানি করা জায়েজ। 

হুজ্জিয়াহ ইবনে আদী বলেন, আমি হজরত আলীকে (রা.) জিজ্ঞাসা করলাম, শিং ভাঙ্গা পশু দ্বারা কুরবানি করার বিধান কী? তিনি বললেন, এতে অসুবিধা নেই।

যে পশুর শিং একেবারে গোড়া থেকে ভেঙে গেছে, যে কারণে মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সে পশুর কুরবানি জায়েজ নয়। পক্ষান্তরে যে পশুর অর্ধেক শিং বা কিছু শিং ফেটে বা ভেঙে গেছে বা শিং একেবারে উঠেইনি সে পশু কুরবানি করা জায়েজ। 

(জামে তিরমিযী ১/২৭৬, সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৩৮৮, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৬, রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৪, আলমগীরী ৫/২৯৭)

কুরবানির পশুর বয়স কত হতে হবে

কুরবানির জন্য উট কমপক্ষে ৫ বছর বয়সের হতে হবে। গরু ও মহিষ কমপক্ষে ২ বছরের। আর ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা কমপক্ষে ১ বছরের হতে হবে। তবে ন্যূনতম ৬ মাস বা তার বেশি বয়সের কোনো ভেড়া বা দুম্বা যদি হৃষ্টপুষ্টতার কারণে ১ বছরের মতো মনে হয় তাহলে তা দ্বারাও কুরবানি করা জায়েজ। ৬ মাসের কম হলে জায়েজ হবে না।


উল্লেখ্য, ছাগলের বয়স ১ বছরের  কম হলে তা দ্বারা কোনো অবস্থাতেই কুরবানি করা জায়েজ হবে না। -ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৪৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৫-২০৬ 

কুরবানি কাদের ওপর ওয়াজিব

প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যে ১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজন-অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানি করা ওয়াজিব। 

টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, অলঙ্কার, বর্তমানে বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র কুরবানির নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

আর নিসাব হল স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি। টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে নিসাব হল সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। 

আর সোনা বা রূপা কিংবা টাকা-পয়সা এগুলোর কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না থাকে কিন্তু প্রয়োজন অতিরিক্ত একাধিক বস্তু মিলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হয়ে যায় তাহলেও তার উপর কুরবানি করা ওয়াজিব। 

যেমন কারো নিকট কিছু স্বর্ণ ও কিছু টাকা আছে, যা সর্বমোট সাড়ে বায়ান্ন তোলা চাঁদির মূল্য সমান হয় তাহলে তার উপরও কুরবানি ওয়াজিব। আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৫৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪০৫

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম