Logo
Logo
×

ইসলাম ও জীবন

স্ত্রীর ওয়াজিব কুরবানি কি স্বামী দিতে পারবে?

Icon

ইসলাম ও জীবন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ১১:০৩ পিএম

স্ত্রীর ওয়াজিব কুরবানি কি স্বামী দিতে পারবে?

প্রশ্ন: বিবাহিত নারীদের কি স্বামী কুরবানি দিলেও নিজের কুরবানি দিতে হয়। যদি সে সাড়ে ৭ ভরির বেশি স্বর্ণের মালিক হয়ে থাকে এবং নগদ টাকার মালিক হয়, অথবা বাবার বাড়ির সম্পদের মালিক হয়ে থাকে যার মূল্য সাড়ে সাত ভরির বেশি। উল্লেখ্য, ওই নারীর নিজের কোনো উপার্জন নেই। 

উত্তর: স্ত্রীর ওপর কুরবানি ওয়াজিব হলে স্ত্রীই কুরবানি দিবে। প্রয়োজনে স্বর্ণের বা অন্য সম্পদের কিছু অংশ বিক্রি করে কুরবানি দিবে।

তবে স্বামী যদি স্ত্রীর অনুরোধে বা অনুমতিক্রমে খুশি মনে তার কুরবানি দিয়ে দেন তাহলেও আদায় হয়ে যাবে এবং স্বামী সওয়াবের ভাগী হবেন। বরং সামর্থ্যবান স্বামীর জন্য অর্থের সঙ্গে জড়িত ফরজ-ওয়াজিবগুলো আদায়ের ক্ষেত্রে স্ত্রীর সহযোগিতা করাই বাঞ্ছনীয়। 

(মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৬/৪৭০, ৮/২৩০ আহকামুল কুরআন জাসসাস ৩/১০৭ আদ্দুররুল মুখতার ২/২৯৮)

সামর্থ্যবান নারীর ওপর কুরবানি অপরিহার্য। কিন্তু স্বামী, পিতা বা পুরুষ অভিভাবকের উচিত নারীর কুরবানির ব্যবস্থা করে দেওয়া। কারণ, সামর্থ্য থাকলেও অনেক নারীর পক্ষে কুরবানির ব্যবস্থাপনা অনেক কষ্টের হয়। 

নারী কুরবানি করতে আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান না হলেও পুরুষ অভিভাবক নিজের কুরবানির পাশাপাশি নারীর পক্ষ থেকে কুরবানি করতে পারেন। স্বামী নিজের কুরবানির পাশাপাশি স্ত্রীর পক্ষ থেকে কুরবানি করতে পারেন।

আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত,... ‘আমরা যখন মিনায় ছিলাম, তখন আমার কাছে গরুর গোশত নিয়ে আসা হলো। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এটা কী? লোকজন জবাবে বলল, রাসুলুল্লাহ (সা.) তার স্ত্রীদের পক্ষ থেকে গরু কুরবানি করেছেন।’ 

(বুখারি, অধ্যায় : কুরবানি, অনুচ্ছেদ : মুসাফির ও নারীর কুরবানি, হাদিস : ৫২২৮)

কুরবানি কাদের ওপর ওয়াজিব

প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যে ১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজন-অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানি করা ওয়াজিব। 

টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, অলঙ্কার, বর্তমানে বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র কুরবানির নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

আর নিসাব হল স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি। টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে নিসাব হল সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। 

আর সোনা বা রূপা কিংবা টাকা-পয়সা এগুলোর কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না থাকে কিন্তু প্রয়োজন অতিরিক্ত একাধিক বস্তু মিলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হয়ে যায় তাহলেও তার উপর কুরবানি করা ওয়াজিব। 

যেমন কারো নিকট কিছু স্বর্ণ ও কিছু টাকা আছে, যা সর্বমোট সাড়ে বায়ান্ন তোলা চাঁদির মূল্য সমান হয় তাহলে তার উপরও কুরবানি ওয়াজিব। 

সূত্র: বাদায়েউস সানায়ে- ২/৩৯২, রদ্দুল মুহতার- ৯/৪৫৩

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম