|
ফলো করুন |
|
|---|---|
প্রশ্ন: বর্তমানে আমার বয়স ২৫ বছর। আল্লাহর ওপর ভরসা করে আগামী বছর বিবাহ করার ইচ্ছা আছে। পরিবারের লোকজন এখন থেকে আমার জন্য মেয়ে দেখা শুরু করেছেন। কিন্তু এ বয়সেই আমার মাথার কিছু চুল সাদা হয়ে যাওয়ায় আমি তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। আমার এক বন্ধু সমাধান হিসেবে কালো খেযাব ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছে।
তাই জানতে চাই, এমতাবস্থায় শরীয়তের দৃষ্টিতে আমার জন্য কালো খেযাব ব্যবহার করা জায়েজ হবে কি?
উত্তর: আপনার যেহেতু বয়স কম। এখনো চুল-দাড়ি সাদা হওয়ার মতো পর্যায়ে পৌঁছায়নি, তাই এ অবস্থায় আপনার জন্য কালো খেযাব ব্যবহার করার সুযোগ রয়েছে।
কারণ, এটি কোনো রোগের কারণে হয়েছে। এ অবস্থায় তা কালো করে ফেললে কেউ আপনার বয়স নিয়ে সন্দেহে পড়বে না। তবে বয়স বেড়ে গেলে (অর্থাৎ যে বয়সে সাধারণত মানুষের চুল-দাড়ি সাদা হয়ে থাকে) আর কালো খেযাব লাগানো যাবে না।
হাদিস শরীফে এসেছে, জাবের রা. বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন আবু বকর রা.-এর পিতা আবু কুহাফা রা.-কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে উপস্থিত করা হল, তার চুল-দাড়ি ছিল ধবধবে সাদা।
তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন– বার্ধক্যের এই চিহ্নকে (চুল-দাড়ির সাদা রং) কোনো কিছু দিয়ে পরিবর্তন করে দাও। তবে কালো রং বর্জন করবে। (সহীহ মুসলিম, হাদিস ২১০২)
অপর এক হাদিসে এসেছে, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন– (খেযাবের মাধ্যমে) তোমাদের বার্ধক্যের চিহ্ন পরিবর্তন করো। ইহুদিদের সাদৃশ্য অবলম্বন করো না। তবে কালো রঙের খেযাব ব্যবহার থেকে বিরত থাকবে। (সুনানে কুবরা, বায়হাকী ৭/৩১১)
ইমাম যুহরী রাহ. বলেন– যখন আমাদের চেহারায় লাবণ্য ছিল (আমরা যুবক ছিলাম) তখন আমরা কালো রঙের খেযাব ব্যবহার করতাম। কিন্তু যখন চেহারা ম্লান হয়ে গেল ও দাঁত দুর্বল হয়ে পড়ল, তখন আমরা এর ব্যবহার ছেড়ে দিয়েছি। (ফাতহুল বারী ১০/৩৬৭)
অবশ্য কালো খেযাবের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি মূলত বয়স্কদের জন্য হলেও হাদিস শরীফে যেহেতু কালো খেযাব ব্যবহার সম্পর্কে সতর্কবাণী এসেছে, তাই অল্প বয়সে চুল পেকে গেলে সেক্ষেত্রেও পুরোপুরি কালো রঙের খেযাব ব্যবহার না করে কালোর সাথে কিছুটা মেহেদী রঙ বা লালচে রঙের খেযাব মিশিয়ে ব্যবহার করা সব ক্ষেত্রেই উত্তম।
সূত্র: রদ্দুল মুহতার ৬/৭৫৬; তুহফাতুল আহওয়াযী ৫/১৫৪; তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ৪/১৪৯; জাওয়াহিরুল ফিকহ ২/২২৮
