Logo
Logo
×

ইসলাম ও জীবন

বাবা-মা না স্বামী কার হক বেশি?

Icon

ইসলাম ও জীবন ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২৫, ০৫:৩১ পিএম

বাবা-মা না স্বামী কার হক বেশি?

প্রশ্ন: পিতা-মাতার চেয়ে স্বামীর হক কি বেশি? এ নিয়ে সমাজে নানান কথা প্রচলিত রয়েছে। সঠিক বিষয়টি জানানোর অনুরোধ রইলো। 

উত্তর: স্বামীর হক আদায় ও একইসঙ্গে মা-বাবার সন্তুষ্টির জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হয় একজন মুমিন নারীকে। কেননা মা-বাবাকে অসন্তুষ্ট রাখলে জাহান্নামে ঠিকানা করে নেওয়া হয়, অন্যদিকে স্বামীর হক আদায় না করলে কুরআন-সুন্নাহর নির্দেশ লঙ্ঘন করা হয়। তাই স্বামী ও বাবা-মা’র হক আদায়ে ভারসাম্য রক্ষা করা জরুরি।

খেদমত ও সেবার দৃষ্টিকোণে মায়ের হক সবচেয়ে বেশি এবং সেটি পিতার তুলনায় তিনগুন। অতঃপর পিতার হক।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক লোক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর কাছে এসে জিজ্ঞেস করল: হে আল্লাহ্‌র রাসুল! আমার কাছে কে উত্তম ব্যবহার পাওয়ার অধিক হকদার? 

তিনি বললেন: তোমার মা। লোকটি বললো- অতঃপর কে? নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন- তোমার মা। সে বললো- অতঃপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। সে বললো- অতঃপর কে? তিনি বললেন- অতঃপর তোমার বাবা। (সহিহ বুখারী, হাদিস ৫৯৭১)

শ্রদ্ধা ও আনুগত্যের দৃষ্টিকোণে স্বামীর হক সবচেয়ে বেশি।

ক্বায়িস ইবনু সা’দ (রা.) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, আমি (কুফার) আল-হীরা শহরে এসে দেখি, সেখানকার লোকেরা তাদের নেতাকে সিজদা করছে। আমি ভাবলাম, (তাহলে তো) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ই সিজদার অধিক হকদার। অতঃপর আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর খেদমতে এসে বলি যে, আমি আল-হীরা শহরে গিয়ে দেখে এসেছি, সেখানকার লোকেরা তাদের নেতাকে সিজদা করে। 

সুতরাং হে আল্লাহ্‌র রাসুল! (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনিই তো এর অধিক হকদার যে, আমরা আপনাকে সিজদা করি? তিনি বললেন- যদি (মৃত্যুর পর) তুমি আমার কবরের পাশ দিয়ে যাও তখন কি তুমি সেটাকে সিজদা করবে? আমি বললাম, না। 

তিনি বললেন- সাবধান! তোমরা এরূপ করবে না। আমি যদি কোন মানুষকে সিজদা করার অনুমতি দিতাম, তবে স্ত্রীদেরকে নির্দেশ দিতাম তাদের স্বামীদেরকে সিজদা করতে। কেননা আল্লাহ স্ত্রীদের ওপর স্বামীদের অধিকার দিয়েছেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ২১৪০)

দাম্পত্য জীবন সুখময় এবং পারিবারিক শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থেই স্বামীর আনুগত্য করা স্ত্রীর জন্য জরুরি। আল্লাহ তাআলা পুরুষকে পরিবারের পরিচালক বানিয়েছেন এবং স্ত্রীর উপর কর্তৃত্ব করার ক্ষমতা অর্পণ করেছেন। সুতরাং স্ত্রী যদি স্বামীর আনুগত্যকে উন্মুক্ত হৃদয়ে গ্রহণ না করে তাহলে পারিবারিক শৃঙ্খলা ভেঙ্গে যেতে বাধ্য। 

স্বামী-স্ত্রীর মাঝে পারস্পরিক বিশ্বাস, ভালোবাসা ও সুসম্পর্ক বজায় রেখে যে কোনো সমস্যা সহজে সমাধান করা যায়। এগুলো দাম্পত্য জীবনের অপরিহার্য দাবি। স্বামী-স্ত্রী একে অপরের চাহিদা ও হক আদায় করবে এবং অপরের প্রয়োজনের দিকে লক্ষ্য রাখবে। এতে নিজেদের মাঝে যে কোনো প্রকার মতবিরোধ ও মনোমালিন্য সৃষ্টি হওয়া থেকে বাঁচা যাবে।

এরপরও কোনো বিষয়ে মতবিরোধ হলে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও দাম্পত্য জীবনের বৃহত্তর স্বার্থে উভয়কে ধৈর্য ও সহনশীলতার পরিচয় দিতে হবে এবং যথাসম্ভব দ্রুত সমাধান করতে হবে। তাহলে দুজনের দাম্পত্য জীবন অবারিত সুখ, শান্তি ও অনাবিল ভালোবাসায় ভরে থাকবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তাআ'লা প্রতিটি মুসলমানের জীবনকে সুখময় ও শান্তিময় করে দিন।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম