আকস্মিক বিপদ ও দুর্ঘটনা থেকে বাঁচার দোয়া
ইসলাম ও জীবন ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০২৫, ০৪:৫৮ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
দোয়া মুমিনদের হাতিয়ার। দোয়ার মাধ্যমে অসম্ভবকেও সম্ভব করা যায়। এমনকি দোয়ার ফলে ভাগ্যও ঘুরে যায়।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আমার কাছে দোয়া করো। আমি তোমাদের দোয়া কবুল করব’ (সূরা মুমিন, আয়াত ৬০।)
আরবি দোয়া শব্দের অর্থ ডাকা, আহ্বান করা, প্রার্থনা করা, কোনো কিছু চাওয়া ইত্যাদি।
রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘দোয়া ছাড়া আর কিছুই আল্লাহর সিদ্ধান্তকে বদলাতে পারে না।’ (তিরমিজি, হাদিস নম্বর ২১৩৯।) দোয়া সব ইবাদতের মূল।
ইসলামের একটি অন্যতম সৌন্দর্য হলো জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সফলতা লাভের জন্য এটি আমাদেরকে বিভিন্ন দোয়া শিক্ষা দিয়েছে।
খাওয়া-দাওয়া, ঘুমাতে যাওয়া ও উঠা-বসা থেকে শুরু করে ভ্রমণ করা পর্যন্ত সবকিছুর জন্যই রয়েছে আলাদা আলাদা দোয়া।
হঠাৎ করে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা মাঝে মধ্যেই ঘটতে দেখা যায়। হঠাৎ ঘটে যাওয়া এসব বিপদ-আপদ ও ক্ষতি থেকে নিরাপদ থাকতে তাওবাহ-ইসতেগফারসহ নিয়মিত সকাল-সন্ধ্যায় একাধিক দোয়া ও আমল রয়েছে।
হজরত জুবাইর ইবনু আবু সুলাইমান ইবনু জুবাইর ইবনু মুত্বইম রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি ইবনু ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বলতে শুনেছি, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সকাল ও সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে এ দোয়াগুলো পড়া ছেড়ে দিতেন না-
اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ الْعَفْوَ وَالْعَافِيَةَ فِيْ الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ، اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ الْعَفْوَ وَالْعَافِيَةَ فِيْ دِيْنِيْ وَدُنْيَايَ وَأَهْلِيْ، وَمَالِيْ، اَللّٰهُمَّ اسْتُرْ عَوْرَاتِيْ، وَآمِنْ رَوْعَاتِيْ، اَللّٰهُمَّ احْفَظْنِيْ مِنْ بَينِ يَدَيَّ، وَمِنْ خَلْفِيْ، وَعَنْ يَمِيْنِيْ، وَعَنْ شِمَالِيْ، وَمِنْ فَوْقِيْ، وَأَعُوْذُ بِعَظَمَتِكَ أَنْ أُغْتَالَ مِنْ تَحْتِيْ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফওয়া ওয়াল আফিয়াতা ফিদ্দুনইয়া ওয়াল আখিরাতি। আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফওয়া ওয়াল আফিয়াতা ফি দ্বীনী ওয়া দুনইয়াইয়া, ওয়া আহলি ওয়া মালি। আল্লাহুম্মাসতুর আওরাতি ওয়া আমিন রাওআতি। আল্লাহুম্মাহফাজনি মিম্বাইনি ইয়াদাইয়্যা ওয়া মিন খালফি ওয়া আন ইয়ামিনি ওয়া শিমালি ওয়া মিন ফাওকি। ওয়া আউজু বিআজামাতিকা আন উগতালা মিন তাহতি।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে দুনিয়া ও আখেরাতের ক্ষমা ও নিরাপত্তা প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে ক্ষমা এবং নিরাপত্তা চাই আমার দ্বীন, দুনিয়া, পরিবার ও অর্থ-সম্পদের। হে আল্লাহ! আপনি আমার গোপন ত্রুটিসমূহ ঢেকে রাখুন; আমার উদ্বিগ্নতাকে নিরাপত্তায় রূপান্তরিত করুন। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে হেফাজত করুন- আমার সামনের দিক থেকে, আমার পেছনের দিক থেকে, আমার ডান দিক থেকে, আমার বাম দিক থেকে এবং আমার উপরের দিক থেকে। আর আপনার মহত্ত্বের ওসিলায় আমার নীচ থেকে হঠাৎ আক্রান্ত হওয়া থেকে আশ্রয় চাই।’ (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)
যে কোনো বিস্ফোরণ, পাহাড় ধ্বস, বজ্রপাত, ঝড়-জলোচ্ছ্বাস বন্যায় লঞ্চডুবির মতো যে কোনো দুর্ঘটনা থেকে নিরাপদ থাকতে হাদিসের বর্ণিত এ দোয়াটি সকাল-সন্ধ্যায় নিয়মিত আমল করা জরুরি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ দোয়ার মাধ্যমেই অনাকাঙ্ক্ষিত সব বিপদাপদ থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন।
আরেকটি দোয়া-
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাত তারাদ্দি ওয়াল হাদামি ওয়াল গারকি ওয়াল হারিক। ওয়া আউজুবিকা আন ইয়াতাখাব্বাতানি শায়তানু ইনদাল মাওতি, ওয়া আউজুবিকা আন আমুতা ফি সাবিলিকা মুদবিরা ওয়া আউজুবিকা আন আমুতা লাদিগা।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি ওপর থেকে পড়ে যাওয়া, ঘরচাপা পড়া, পানিতে ডুবে যাওয়া ও অগ্নিদগ্ধ হওয়া থেকে। আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি মৃত্যুকালে শয়তানের ছোঁ মারা থেকে।
আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি আপনার পথ থেকে পলায়ন অবস্থায় মারা যাওয়া থেকে এবং আপনার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি সাপের দংশনে মৃত্যু হওয়া থেকে।’
উপকার : আবুল ইয়াসার (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) এই দোয়া পড়তেন। (সুনানে নাসায়ি, হাদিস নম্বর : ৫৫৩১)
