জাকাত-ফিতরার টাকায় কবরস্থানের উন্নয়ন করা যাবে?
প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২৫, ১০:৪৮ এএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
প্রশ্ন: জাকাত-ফিতরার টাকায় কবরস্থানের উন্নয়ন করা যাবে?
উত্তর: জাকাতের মূল উদ্দেশ্য হলো- গরিব-মিসকিন ও অন্যান্য আট শ্রেণির মানুষের হাতে টাকা বা সম্পদ পৌঁছে দেওয়া, যাতে তারা তার মালিক হয়ে উপকৃত হতে পারে।
তাই জাকাত বা জাকাতুল ফিতরার টাকা দিয়ে কবরস্থান, মসজিদ, মাদরাসা, হাসপাতাল কিংবা অন্য কোনো (জনকল্যাণমূলক) কাজে সরাসরি খরচ করা যাবে না। কেননা এসব কাজে “তামলিক” (অর্থাৎ গরিবকে মালিক বানানো) শর্ত পূরণ হয় না।
কবরস্থানের মাটি সমান করা দেওয়াল নির্মাণ করা বা অন্য কোনো উন্নয়নমূলক কাজে জাকাত খরচ করা জায়েজ নয়। তবে যদি কেউ নফল সদকা, ওয়াকফ বা অন্যান্য স্বেচ্ছা অনুদান দিতে চান, তাহলে এসব কাজে দেওয়া যাবে।
যাদের জাকাত দেওয়া যাবে
পবিত্র কুরআনে জাকাতের খাত নির্ধারিত করে দেওয়া হয়েছে। এ খাত ছাড়া অন্য কোথাও জাকাত প্রদান করা জায়েজ নয়।
ইরশাদ হয়েছে, ‘জাকাত তো শুধু নিঃস্ব, অভাবগ্রস্ত ও জাকাতের কাজে নিযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য, যাদের মনোরঞ্জন উদ্দেশ্য তাদের জন্য, দাসমুক্তির জন্য, ঋণগ্রস্তদের জন্য, আল্লাহর পথে জিহাদকারী ও মুসাফিরের জন্য। এ আল্লাহর বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।’ (সুরা : তাওবা, আয়াত : ৬০)
যে দরিদ্র ব্যক্তির কাছে অতি সামান্য সম্পদ আছে, অথবা কিছুই নেই, এমনকি একদিনের খোরাকিও নেই—এমন লোক ইসলামের দৃষ্টিতে গরিব। তাকে জাকাত দেওয়া যাবে। আর যে ব্যক্তির কাছে সোনা-রুপা, টাকা-পয়সা, বাণিজ্যদ্রব্য ইত্যাদি নিসাব পরিমাণ আছে সে ইসলামের দৃষ্টিতে ধনী। তাকে জাকাত দেওয়া যাবে না।
অনুরূপভাবে যে ব্যক্তির কাছে জাকাতযোগ্য সম্পদ নিসাব পরিমাণ নেই, কিন্তু অন্য ধরনের সম্পদ আছে, যাতে জাকাত আসে না; যেমন—ঘরের আসবাব, পরিধেয় বস্ত্র, জুতা, গার্হস্থ্যসামগ্রী ইত্যাদি প্রয়োজনের অতিরিক্ত এবং নিসাব পরিমাণ আছে তাকেও জাকাত দেওয়া যাবে না।
সূত্র: ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া (আলমগিরি): ১/১৮৮; আদ্দরুল মুখতার (রদ্দুল মুহতারসহ): ২/৪৪; ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া: ১০/৩৯৬; ফতোয়া, দারুল উলূম দেওবন্দ: ফতোয়া নং 198-145/B=03/14435।
লেখক: উস্তাযুল হাদিস জামিয়া মিফতাহুল উলূম নেত্রকোনা

