Logo
Logo
×

লাইফ স্টাইল

ভূমিকম্প না হলেও ‘ভূমিকম্প-ভূমিকম্প’ লাগছে? জেনে নিন যে সমস্যা হচ্ছে আপনার

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৮ এএম

ভূমিকম্প না হলেও ‘ভূমিকম্প-ভূমিকম্প’ লাগছে? জেনে নিন যে সমস্যা হচ্ছে আপনার

ভূমিকম্পের পর মাথা ঘোরা - পোস্ট-আর্থকোয়েক ডিজিনেস সিনড্রোম (PEDS)। ছবি : সংগৃহীত

৩৬ ঘণ্টার এদিক ওদিকে বাংলাদেশ ৪টি ভূমিকম্পের সাক্ষী হয়েছে। তবে এই ভূমিকম্প নতুন এক সমস্যা জন্ম দিয়ে গেছে নাগরিক জীবনে। এখন তো ভূমিকম্প না হলেও মনে হচ্ছে এই বুঝি ভূমিকম্প হলো! সঙ্গে যোগ হয়েছে অনিদ্রাও। 

এই সমস্যার নাম কী?
ভূমিকম্পের পরও এমন হওয়াটা একটা বাস্তব শারীরিক ও মানসিক সমস্যা। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই অবস্থার নাম পোস্ট-আর্থকোয়েক ডিজিনেস সিনড্রোম বা পেড্‌স (PEDS)। 

জাপানে এই অবস্থাকে বলা হয় জিশিন-ইয়োই, যার মানে ‘ভূমিকম্প মাতলামি’। কারণ, ভূমিকম্পের পর অনেকের শরীর এমন আচরণ করে যেন সাগরে দুলছে।

আরও পড়ুন
ভূমিকম্পের সময় করণীয়

কেন এমন হয়?
ডাক্তাররা বলেন, কেন এমন হয় তার পুরো ব্যাখ্যা এখনও মিলেনি। তবে তারা মনে করেন, এর সঙ্গে কয়েকটি বিষয় জড়িত। কানের ভেতরের ভারসাম্য ধরে রাখা অংশ ঝাঁকুনি খাওয়ার পর কিছু সময় অস্থির থাকে। ভূমিকম্পের ভয় মানুষের মনে চাপ তৈরি করে। মস্তিষ্ক ঝাঁকুনির স্মৃতি ধরে রাখে। তাই দুলে ওঠা বা মাথা ঘোরা অনুভূতি থেকে যায়।

এই অবস্থার সঙ্গে পোস্ট্র ট্রম্যাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার বা পিটিএসডি (PTSD)-রও কিছু মিল আছে। অনেক সময় একই ধরনের লক্ষণ দেখা যায়।

এর ফলে কী কী হতে পারে?
পেড্‌সের সাধারণ লক্ষণের মধ্যে থাকে মাথা ঘোরা। চারপাশ নড়ছে মনে হতে থাকে। এই পর্যন্ত বিষয়টা মোটামুটি স্বাভাবিকই। তবে একটু বাড়তি সমস্যা হলে অনেকের হাঁটতে সমস্যা হতে পারে, বমি ভাব, ঘুম না হওয়ার সমস্যা হতে পারে, একা থাকতে ভয় পাওয়া শুরু হতে পারে, বিরক্তিভাব বা দুশ্চিন্তা বেড়ে যাওয়া।

করণীয় কী?
চিকিৎসকরা বলেন, এসব লক্ষণ থাকলে অবহেলা করা ঠিক নয়। কারণ, চিকিৎসা নিলে দ্রুত ভালো হওয়া যায়। কানের ভারসাম্য ফেরানোর ব্যায়াম, মানসিক চাপ কমানোর চিকিৎসা, প্রয়োজনে ওষুধ—এসবেই আরাম পাওয়া যায়।

ভূমিকম্পের মতো ঘটনা দেহ ও মনকে একসঙ্গে নাড়া দেয়। অনেক সময় শরীর কাঁপে, বুক ধড়ফড় করে, বমি পায়। এগুলো আসে স্নায়ুতন্ত্রের চাপ থেকে। তাই চিকিৎসা না নিলে দীর্ঘদিন মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

চিকিৎসকদের মতে, কিছু পরিস্থিতিতে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া জরুরি। যেমন, মাথা এমনভাবে ঘোরে যে দাঁড়ানো কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। বারবার বমি হয়। দুই চোখে একসঙ্গে দেখা যায় না। কথা জড়িয়ে যায়। হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিস থাকলে সতর্ক হওয়া দরকার।

মানসিক কিছু লক্ষণেও চিকিৎসা নেওয়া উচিত। যেমন, ভয় বা দুশ্চিন্তা কমছে না, দুঃস্বপ্ন দেখা, হঠাৎ ঘুম ভেঙে যাওয়া, ভূমিকম্পের জায়গা এড়িয়ে চলা, ঘাম, বুক ধড়ফড় বা শ্বাসকষ্ট। আগে থেকে মানসিক সমস্যা থাকলে তা আরও বেড়ে যেতে পারে।

নিজের যত্ন নিতে যা করতে পারেন
এমন পরিস্থিতিতে ২টি কাজ করা জরুরি। প্রথমটি হচ্ছে– খবর বা ভিডিও কম দেখা কমিয়ে দেওয়া, দ্বিতীয়টি হচ্ছে গভীর শ্বাস নেওয়ার অভ্যাস করা। সঙ্গে নিরাপদ জায়গায় থাকতে হবে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম