শীতে শিশুদের জ্বর পেটব্যথা ডায়রিয়া, যা জানা জরুরি
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:৪৪ পিএম
ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
শীত নামলেই শিশুদের মধ্যে পেটের সমস্যা, ভাইরাস জ্বর ও ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়তে শুরু করে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চের (আইসিএমআর) সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, এ সময়ে ঘরে ঘরে বাড়ছে ভাইরাস জ্বর ও গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল সংক্রমণ। বাইরে থেকে খাবার না খেলেও খাদ্যনালিতে সংক্রমণ, এমনকি খাবার বিষক্রিয়ার ঘটনাও বাড়ছে। এর মূল কারণ কী?
মৌসুম বদলের সময় বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ বেড়ে যায়। ঠান্ডা পড়লে সাধারণ সর্দি-জ্বরের পাশাপাশি সক্রিয় হয়ে ওঠে নোরোভাইরাস; যা শীতকালে বিশেষভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
আইসিএমআর জানিয়েছে, নোরোভাইরাসের কিছু স্ট্রেইনে সাম্প্রতিক সময়ে মিউটেশন হয়েছে ফলে ভাইরাস আরও সংক্রামক হয়ে উঠেছে।
এই ভাইরাস দেহে প্রবেশ করলে অন্ত্রে প্রদাহ হয়। এর ফলে হঠাৎ ঘন ঘন বমি, ডায়রিয়া, পেটব্যথা শুরু হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে নোরোভাইরাসের সংক্রমণ আরও গুরুতর জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে। অনেক সময় দেখা যায়, ভাইরাসজনিত সংক্রমণ পেটে বিষক্রিয়ার মতো পরিস্থিতিও তৈরি করে।
আক্রান্তের হাঁচি-কাশি বা বর্জ্য থেকে সংক্রমণ ঘটতে পারে। কাজেই বাড়িতে কেউ সংক্রমিত হলে তাকে আলাদা রাখাই শ্রেয়। আক্রান্তের সঙ্গে একই থালায় খাওয়া বা তার খাওয়া খাবার খেলে সংক্রমণ দ্রুত ঘটতে পারে।
শীতের সময়ে নোরোভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ে। বিশেষ করে নভেম্বর-এপ্রিল অবধি এই ভাইরাসের প্রকোপ থাকে। এই সময়ে তাই বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। সবজি, ফল বা কাঁচা মাছ-মাংস ভাল করে ধুয়ে তবে রান্না করতে হবে। শাকপাতা লবন দেওয়া গরম পানি দিয়ে ধুয়ে রান্না করা উচিত। রাস্তায় বিক্রি হওয়া নরম পানীয়, লেবুর শরবত, রঙিন শরবত, লস্যি থেকে ভাইরাস ছড়াতে পারে। তাই ছোটদের এই ধরনের পানীয় কিনে দেবেন না। খাবার খাওয়ার আগে ভাল করে হাত ধুতে হবে। ঘরবাড়ি পরিচ্ছন্ন রাখা জরুরি। ঘরের ভিতরের বাতাস যাতে বিশুদ্ধ থাকে সে খেয়াল রাখতে হবে।
নোরোভাইরাসকে অনেকে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন, আসলে তা নয়। খাদ্যনালিতে অনেক ভাল ব্যাক্টেরিয়াও থাকে যারা খাবার পরিপাকে সাহায্য করে। কিন্তু বাইরে থেকে কোনও সংক্রামক ভাইরাস সেখানে ঢুকে পড়লে তীব্র প্রদাহ শুরু হয়। খাবার ঠিকমতো হজম হয় না, পেটে যন্ত্রণা শুরু হয়। পেটখারাপ, বমি এবং তা থেকেই জ্বর চলে আসে। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে এই ভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত ঘটবে। তাই শিশু ও বয়স্কদের সাবধানে রাখতে হবে। যাদের হার্টের রোগ, লিভার বা কিডনির রোগ, ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের আরও বেশি সতর্ক থাকা উচিত। জ্বর ও পেটের সমস্যা ঘন ঘন হতে থাকলে নিজে থেকে ওষুধ না খেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

