ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ব্যস্ত জীবনযাপন, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস এবং মানসিক চাপ—এই সবকিছুর কারণে হজমের সমস্যা, ওজন বৃদ্ধি ও নানা শারীরিক জটিলতা এখন সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব সমস্যার সমাধানে অনেকেই ক্রমে প্রাকৃতিক বিকল্পের দিকে ঝুঁকছেন। তাদের মধ্যে সোনা পাতা গুঁড়া একটি পরিচিত উপাদান। আয়ুর্বেদ ও প্রাকৃতিক চিকিৎসায় বহু যুগ ধরে ব্যবহৃত এই পাতা বিশেষ করে কোষ্ঠকাঠিন্য ও অন্ত্র পরিষ্কার করার জন্য জনপ্রিয়।
সোনা পাতার বৈশিষ্ট্য
সোনা পাতা দেখতে মেহেদি পাতার মতো হলেও এটি আসলে Cassia Angustifolia, যা ‘ভারতীয় সেনা’ নামেও পরিচিত। শুকনো অবস্থায় এর রঙ হালকা হলুদ-সোনালি। এই পাতায় খনিজ, লবণ, ক্যালসিয়াম এবং ফ্ল্যাভোনয়েডসহ বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে। মূলত এটি রেচক বা জোলাপ হিসেবে কাজ করে, যা হজম ও অন্ত্রের কার্যক্রম দ্রুত উন্নত করতে সাহায্য করে।
সোনা পাতা খেলে যেসব উপকার পাবেন
১. অন্ত্রের কার্যক্রম উন্নত করে
সোনা পাতা অন্ত্রের পেশিকে সক্রিয় করে, ফলে জমে থাকা বর্জ্য সহজে দেহ থেকে বের হয়। এটি অন্ত্রের স্বাভাবিক সঙ্কোচন-প্রসারণ প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে হজমকে সহজ করে তোলে।
২. কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রাকৃতিক সমাধান
এর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য অন্ত্রের প্রদাহ কমায় এবং বৃহদন্ত্রে পানি ও ইলেকট্রোলাইট শোষণ কমিয়ে বর্জ্যের পরিমাণ বাড়ায়। এতে কোলনের সঞ্চালন বাড়ে এবং মলত্যাগ সহজ হয়। তাই কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য সোনা পাতা একটি প্রাকৃতিক মহৌষধ হিসেবে পরিচিত।
৩. পাচনতন্ত্রের সামগ্রিক স্বাস্থ্য রক্ষা
সোনা পাতা গ্যাস, অম্বলসহ বিভিন্ন পেটের সমস্যা কমাতে সহায়তা করে। এর অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করে এবং এনথ্রানয়েড হজমে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
৪. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
সোনা পাতার হাইপোগ্লাইসেমিক বৈশিষ্ট্য রক্তে শর্করা কমাতে সাহায্য করতে পারে। একটি ছোট গবেষণায় দেখা যায়, কয়েক মাস সোনা পাতা চা পান করার পর অংশগ্রহণকারীদের রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
ব্যবহারবিধি
সোনা পাতা আস্ত অথবা গুঁড়া—দুইভাবেই ব্যবহার করা যায়।
১. গুঁড়া ব্যবহার
> এক থেকে দেড় চা চামচ সোনা পাতা এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে ৪–৫ ঘণ্টা রাখতে হবে।
> সকালে খালি পেটে পান করতে হবে।
> দিনে ২০–৩০ গ্রামই যথেষ্ট; এর বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়।
২. পাতার চা
> দুই কাপ পানিতে এক টেবিল চামচ শুকনা পাতা ফুটিয়ে এক কাপ করে নিতে হবে।
> প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পান করতে হবে।
> পেট স্বাভাবিক হলে ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
সতর্কতা: যাদের জন্য ব্যবহার অনুপযোগী
> হৃদরোগী
> অন্ত্রের ক্ষত/প্রদাহের রোগী
> অ্যাপেন্ডিসাইটিস
> যকৃতের ক্যান্সারের রোগী
> জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবহারে সতর্কতা
সোনা পাতায় উপস্থিত কিছু উপাদান এস্ট্রাডিওল শোষণে বাধা দিতে পারে, যা জন্মনিয়ন্ত্রণ ওষুধের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে।
