রাত জাগার অভ্যাস অজান্তেই আপনার যে ক্ষতি করছে
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৪২ এএম
ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
অনেকেরই বড় সমস্যা—রাতে ঘুম কম হওয়া। কাজের চাপ কিংবা অতিরিক্ত দুশ্চিন্তায় এ সমস্যা হয়ে থাকে। তবে রাতের পর রাত যদি ঘুম কম হয়, তাহলে বড় সমস্যা। রাত জেগে অফিসের কাজ, আবার কখনো বেশি রাত অবধি টিভি দেখা, ল্যাপটপ অথবা মোবাইল ঘাঁটাঘাঁটি করে কাটিয়ে দেন অনেকেই। সব মিলিয়ে ঘুমের সময় বদলাচ্ছে প্রতিনিতই।
কিন্তু আপনার শরীরের ঘড়ি কি দ্রুত সময় পাল্টাতে পারছে? ঘুমের অভাবে ক্লান্তি ও অবসাদ গ্রাস করছে। আরও একটি জটিল সমস্যা— কম ঘুম পুরুষের শুক্রাণুর মান কমিয়ে দিচ্ছে। ফলে বন্ধ্যত্বের সমস্যা আরও দিন দিন বাড়ছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কেন এ সমস্যা দেখা দিচ্ছে —
হার্ভার্ডের গবেষকরা জানিয়েছেন, যে ব্যক্তি প্রতি রাতে জেগে থাকেন, ভোরের দিকে মাত্র ৪ ঘণ্টা ঘুমান, তার শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের ভারসাম্য ঠিক থাকে না। আর এই হরমোনের ভারসাম্য বিগড়ে গেলে শুক্রাণুর উৎপাদন এবং তার গুণগত মানও নষ্ট হয়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বন্ধ্যত্বের সমস্যা বাড়তে থাকে।
আপনার দেহঘড়ি বিগড়ে গেলে কর্টিসল হরমোনের ক্ষরণও বাড়িয়ে তোলে। একে বলা হয় ‘স্ট্রেস হরমোন’। কর্টিসল বেড়ে গেলে টেস্টোস্টেরনের ক্ষরণ কমে যায়। ফলে ‘অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া’র ঝুঁকি বাড়ে। এই রোগে ঘুমের মধ্যে বারবার শ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। প্রদাহ বাড়ে, যা থেকে অনিদ্রার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ঘুম ও হরমোন
‘জৈবিক ঘড়ি’ নামে শরীরেরও একটি ঘড়ি আছে। এই ঘড়ি নির্দিষ্ট ছন্দে চলে। দেহঘড়ির এই ছন্দ মেনে ২৪ ঘণ্টা ধরে নানা গুরুত্বপূর্ণ শারীরবৃত্তীয় কার্যকলাপ চলতে থাকে। রাতে নির্দিষ্ট সময় ঘুম আসে, সকালে ঘুম ভাঙে এবং নির্দিষ্ট সময় খিদে পায়। এই জৈবিক সময়ছন্দকে বলা হয় ‘সার্কাডিয়ান রিদম’ বা ‘বায়োলজিক্যাল ক্লক’। সেই মতো হরমোনের ক্ষরণও নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে।
এ বিষয়ে হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের গবেষকরা বলেছেন, মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসের ভেতরে হাজার হাজার নিউরন নিয়ে গঠিত ‘সুপ্রাকিয়াসম্যাটিক নিউক্লিয়াস’ শরীরের কেন্দ্রীয় ঘড়ি হিসেবে কাজ করে থাকে। সেই ঘড়ির সঙ্গে তাল মিলিয়ে শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াগুলো নিয়ন্ত্রিত হয় এবং বাইরের সময়চক্রের সঙ্গে শরীরের সামঞ্জস্য বজায় রাখে।
তারা আরও বলেন, যদি কোনো কারণে ঘড়ির ছন্দ বিগড়ে যায়, তাহলে শরীরের ভেতরে তৈরি প্রোটিন ও হরমোনগুলোর ভারসাম্যও নষ্ট হয়। জৈবিক ঘড়ির নিয়মানুযায়ী, একজন প্রাপ্তবয়স্কের রাতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো ভীষণ জরুরি। ওই সময়ে শরীরে নানা হরমোনের ক্ষরণ এবং তাদের ক্রিয়াকলাপ চলতে থাকে। যদি সময়টাকে কমিয়ে ২-৪ ঘণ্টায় নিয়ে আসা হয়, তখনই গুরুত্বপূর্ণ হরমোনগুলোর কাজকর্ম নষ্ট হয়ে যায়। এর মধ্যে টেস্টোস্টেরন হরমোনও রয়েছে।

