|
ফলো করুন |
|
|---|---|
চলছে শীতকাল। এই শীতের মৌসুমে চারদিকে পিঠার উৎসব। শীত এলেই চলে বাঙালির ঘরে ঘরে পিঠা খাওয়ার ধুম। আর সেই সঙ্গে বেড়ে যায় গুড়ের চাহিদা। ভাপা পিঠা, পুলিপিঠা, নুনে পিঠা।
রুটির সঙ্গে গুড়, দুধে সঙ্গে গুড় কিংবা পিঠার সঙ্গে গুড়ের স্বাদ অনেকেরই প্রিয়। তাই সব রকমের পিঠায় চাই গুড়। আর সে কারণে শীতকালে গুড়ের চাহিদাও থাকে বেশি।
তবে বর্তমান বাজারে যেসব গুড় বিক্রি হচ্ছে, তার বেশিরভাগই চিনি ও রঙ মিশিয়ে তৈরি ভেজাল গুড়। ফলে সঠিক পুষ্টি পাওয়া খুব কঠিন হয়ে পড়ে। আসল খেজুরের গুড়ের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ, যা দেহের সুস্থতা বজায় রাখতে সহায়ক।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের পুরোনো গুড় ব্যবসায়ী মোমিনুর রহমান মন্টু বলেন, ভেজাল গুড় খেলে ডায়াবেটিস বেড়ে যাবে। এর পাশাপাশি কোনো পুষ্টি পাওয়া যায় না। আসল গুড়ে থাকে আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়ামসহ নানা পুষ্টি উপাদান। কিন্তু কীভাবে আসল কিংবা নকল গুড় চিনবেন, তা জেনে নেওয়া যাক—
১. পানি দিয়ে পরীক্ষা
এক গ্লাস পানিতে এক টুকরো গুড় দিন। এরপর দেখবেন, আসল গুড় ধীরে ধীরে গলে পানি হালকা লালচে কিংবা বাদামি রঙ ধারণ করবে। আর ভেজাল গুড়, পানিতে সাদা স্তর ভাসবে বা পানি দুধের মতো সাদা হয়ে যাবে।
২. ভিনেগার দিয়ে পরীক্ষা
এক চামচ গুড়ে চার-পাঁচ ফোঁটা ভিনেগার মিশিয়ে দেখুন। যদি ফেনা বা বুদবুদ ওঠে, তবে তা শতভাগ ভেজাল। কারণ এতে চিনি ও বেকিং সোডা মেশানো থাকে। আসল গুড়ে কোনো বিক্রিয়া হয় না।
৩. রঙ গঠন ও গন্ধ পরীক্ষা
আসল গুড়ের রঙ গাঢ় কালচে-বাদামি ও হাতে চটচটে হয়, ভাঙলে খসখসে শব্দ করে এবং গন্ধে হালকা ধোঁয়া-মাটির সুবাস পাওয়া যায়। ভেজাল গুড় সাদাটে, হলদেটে অথবা অতিরিক্ত চকচকে হয়, হাতে লাগে না এবং গন্ধহীন বা রাসায়নিক গন্ধ থাকতে পারে।
৪. স্বাদে পার্থক্য
আসল গুড়ে মিষ্টির মধ্যে হালকা ঝাঁজ বা তিতকুটে স্বাদ থাকে। ভেজাল গুড়ে শুধু চিনির মিষ্টি, এতে কোনো ঝাঁজ নেই। যদি নোনতা স্বাদ পেয়ে থাকেন, তাহলে গুড় ফেলে দেওয়া উত্তম।
৫. চাপ দিয়ে পরীক্ষা
দুই আঙুল দিয়ে গুড় চেপে দেখুন। আসল গুড় নরম ও চটচটে হয়। ভেজাল গুড় সাধারণত শক্ত এবং চাপলে গুঁড়া হয়ে যায়।
সতর্কতা
গুড়ের দাম যদি খুব কম হয়, তবে ধরে নেবেন, এতে কোনো সমস্যা আছে। গ্রাম থেকে আনা আসল গুড়ে ছোট ছোট কালো দাগ কিংবা রসের ছিবড়ে থাকে, যা আসলের পরিচায়ক। প্যাকেটের লেবেলে ‘খাঁটি খেজুর গুড়’ লেখা থাকলেও নিজে পরীক্ষা না করলে বাছাই করা কঠিন। তাই ক্রেতাদের সচেতন হতে হবে, যেন ভেজাল গুড় থেকে বাঁচা যায়।
