লাউয়ের শখা শোল মাছ, জানুন পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:১৩ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বাংলাদেশের জলাশয়গুলোতে বহুল পরিচিত ও অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি মাছ— শোল মাছ। যার বৈজ্ঞানিক নাম চেন্না স্ট্রাইয়াটা (Channa striata)। সুস্বাদু এ মাছে কাঁটা কম থাকার কারণে যেমন ভোজনরসিকদের প্রিয়, ঠিক তেমনই এর অসাধারণ স্বাস্থ্য উপকারিতাও রয়েছে। কেবল স্বাদেই নয়, নিরাময়কারী গুণের জন্য ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসাপদ্ধতিতে শোল মাছের কদর রয়েছে বহু প্রাচীনকাল থেকেই।
সুস্বাদু দেশি শোল মাছ, শুধু খাদ্য হিসেবেই নয়, এর নিরাময় ক্ষমতা এবং গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদানের জন্য একটি অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর পছন্দ। লাউয়ের সঙ্গে শোল মাছের শখা। এই মাছ দিয়ে লাউ খাওয়া বেশ মজাদার। কারণ শোল মাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন, অ্যামিনো অ্যাসিড ও ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, শোল মাছের উল্লেখযোগ্য উপকারিতা কী—
রান্না এবং পরিবেশন
শোল মাছ সাধারণত ঝোল বা ঝাল করে রান্না করা হয়ে থাকে। শীতকালে এটি সবজির সঙ্গে কিংবা কচি লাউ ডগার সঙ্গে রান্না করলে এর স্বাদ ও পুষ্টিগুণ আনেক বেড়ে যায়। এর কাঁটা তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় এটি ছোট শিশু এবং বয়স্কদের জন্যও নিরাপদ।
বাজারে প্রচুর পরিমাণে শোল মাছ পাওয়া যায়। কেনার সময় খেয়াল রাখতে হবে মাছটি যেন তাজা থাকে। এর ঔষধি গুণাগুণ অক্ষুণ্ন রাখতে অতিরিক্ত তেল কিংবা মসলার ব্যবহার এড়িয়ে হালকা রান্না করা ভালো। আর শোল মাছের মাংসপেশী সাধারণত নরম হয় এবং এর ফাইবার গঠন দ্রুত হজম হতে সাহায্য করে। অসুস্থ এবং দুর্বল রোগীদের জন্য এটি একটি আদর্শ খাদ্য। কারণ এটি পরিপাকতন্ত্রে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে না।
যদিও সামুদ্রিক মাছের মতো বেশি নয়, তবু শোল মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এই ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্ক ও চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং সার্বিকভাবে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
অন্যান্য মাছের মতোই শোল মাছে রয়েছে সহজে হজমযোগ্য এবং উচ্চমানের প্রোটিন। এই প্রোটিন মানবদেহের পেশি গঠন, হরমোন উৎপাদন এবং এনজাইম তৈরির জন্য অপরিহার্য। এটি শরীরকে দীর্ঘ সময়ের জন্য শক্তি সরবরাহ করে থাকে।
শোল মাছে আয়রন এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান রয়েছে, যা রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে এটি রক্তাল্পতা প্রতিরোধে এবং রক্তস্বল্পতার রোগীদের জন্য উপকারী হতে পারে।
শোল মাছ বিশেষভাবে এর ক্ষত নিরাময়কারী গুণের জন্য বিখ্যাত। এর মাংসপেশী, ত্বক এবং ডিমে এমন কিছু বিশেষ ফ্যাটি অ্যাসিড ও উচ্চমানের প্রোটিন রয়েছে, যা শরীরের কাটা-ছেঁড়া দ্রুত শুকাতে এবং ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু মেরামত করতে সাহায্য করে। অপারেশনের পর রোগীদের দ্রুত আরোগ্যের জন্য এটি অত্যন্ত কার্যকর।
গর্ভাবস্থায় এবং সন্তান প্রসবের পর মায়ের স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের দুধের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য ঐতিহ্যগতভাবে শোল মাছ সেদ্ধ বা ঝোল রান্না করে খাওয়ানো হয়। এটি মায়ের শরীরের দুর্বলতা কাটাতেও সহায়ক।
