শিশুর জন্য রঙিন পোশাক
jugantor
শিশুর জন্য রঙিন পোশাক

  হাবীবাহ্ নাসরীন   

১৪ মার্চ ২০২৩, ১৩:৫৭:৫৬  |  অনলাইন সংস্করণ

ঈদের আনন্দ সবচেয়ে বেশি অনুভব করে শিশুরা। কারণ তাদের ভুবনটাই যে বর্ণিল! বড়দের মতো দায়িত্ব পালনের চাপ নেই, নেই অযথা দুশ্চিন্তা। মানুষের জীবনের সবচেয়ে সুন্দর অংশ মনে করা যেতে পারে শৈশবকে। আর সেই শৈশবের ঈদ রঙিন হবে না? নতুন জামার গন্ধ, রাত পোহালেই ঈদ, কোনো শাসন-বারণ নেই, পড়তে না বসলে মায়ের বকুনি খাওয়া নেই, ইচ্ছামতো ঘুরে বেড়ানো আর বড়দের কাছ থেকে সালামি পাওয়ার আনন্দ ঈদ ছাড়া পাওয়া যায়? তাই তো ঈদের কেনাকাটার চিন্তা করলে সবার আগে আসে শিশুর পোশাকের কথা। রোজা তো এসেই গেল, ঈদের কেনাকাটার তালিকা তৈরি করবেন নিশ্চয়ই? তাহলে শিশুর পোশাক কেনার আগে কিছু বিষয় মাথায় রাখুন।

কাপড়টা কেমন হবে
শিশুর পোশাক কেনার ক্ষেত্রে সবার আগে প্রাধান্য দিন পোশাকের কাপড়কে। কারণ শিশু তার অস্বস্তির কথা ঠিকভাবে বলতে পারে না। তাই পোশাকের কারণে শিশুর অস্বস্তি হলে মুশকিলে পড়ে যাবেন। শিশুর পোশাক কেনার সময় আগে পরখ করে দেখুন পোশাকের কাপড়টা আরামদায়ক কি না। অনেকে অনেক বেশি দাম দিয়ে শিশুকে ভারী ভারী পোশাক কিনে দেন। সেসব পোশাক শিশু খানিকক্ষণ গায়ে রেখে এরপর খুলে ফেলতে চায়। যদিও সেটি পরার কারণে শিশুকে দেখতে ভালোলাগে তবু আরামদায়ক না হলে সে সেটি পরে বেশিক্ষণ থাকতে চাবে না। এদিকে গরমের সময়ে ঈদ হওয়ার কারণে মোটা কিংবা ভারী কাজ করা পোশাক বাদ দিতে হবে। সুতি, মসলিন, সিল্ক, লিনেন, খাদি ইত্যাদির তৈরি পোশাক বেছে নিতে পারেন।

পোশাকের রং
শিশুর ঈদটাকে রঙিন করে তুলতে পোশাকের রঙের দিকে নজর তো আপনাকে দিতেই হবে। শিশুর পোশাকের ক্ষেত্রে নানা রঙের বাহার থাকলেই দেখতে বেশি ভালোলাগে। বর্তমানে অনেক ফ্যাশন হাউজ মা-বাবার সঙ্গে মিলিয়ে শিশুর পোশাক তৈরি করছে।

সেখান থেকেও কিনে নিতে পারেন পছন্দসই কোনো পোশাক। যেহেতু গরমের সময়, একটু উজ্জ্বল রং-ই দেখতে বেশি ভালোলাগবে। গাঢ় রংগুলো এড়িয়ে শিশুকে কিনে দিন সাদা, গোলাপি, আকাশি, নীল, বেগুনি, হালকা সবুজ, হলুদ জাতীয় রঙের পোশাক। এতে শিশু যেমন পরে আরাম পাবে তেমনই তাকে দেখেও হবে চোখের আরাম।

অপচয় না হোক
শিশুর জন্য অনেক ধরনের পোশাক আপনার কিনতে ইচ্ছা হতেই পারে। কিন্তু সেই সঙ্গে খেয়াল রাখবেন, অপচয় যেন না হয়। আপনি এখন যা কিছু আচরণ করছেন, শিশু সেখান থেকেই শিখছে। তাই ছোট বয়স থেকেই তাকে বুঝেশুনে খরচ করা শেখান। শিশুকে অবশ্যই পছন্দসই পোশাক কিনে দেবেন, তবে না চাইতেই অফুরন্ত দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ কোনো জিনিস প্রত্যাশার চেয়ে বেশি পাওয়ার অভ্যাস হয়ে গেলে শিশু সেভাবেই অভ্যস্ত হয়ে উঠবে। শিশুকে ঈদের পোশাক দেওয়ার পাশাপাশি অন্য কোনো সুবিধাবঞ্চিত শিশুকেও ঈদের পোশাক কিনে দিন। আর সেই কাজটি করুন আপনার সন্তানের হাত দিয়েই। এতে সে মানবিক গুণাবলিও সহজে আয়ত্ব করতে পারবে। ঈদ যে কেবল ভোগ করার জন্য নয়, বরং সবার সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করার বিষয় এটি শিশুকালেই বুঝতে শিখান।

শিশুর পছন্দ হচ্ছে তো?
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, শিশুর পছন্দ-অপছন্দকে তেমনভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। পোশাক কেনার ক্ষেত্রেও মা-বাবার পছন্দই শেষ কথা। কিন্তু শিশু ছোট হলেও একজন আলাদা মানুষ। তারও কিছু পছন্দ-অপছন্দ থাকতে পারে সে কথাও মাথায় রাখতে হবে। তাই পোশাক কেনার ক্ষেত্রে শিশুর মত নিতে পারেন। তার পছন্দ হচ্ছে কি না কিংবা কোন ধরনের পোশাক সে কিনতে চাচ্ছে তা জেনে নিতে পারেন। যদি তার পছন্দের পোশাকটি তার জন্য সঠিক না হয় তবে তা সহজভাবে বুঝিয়ে বলুন। ঈদ মানেই তো আনন্দ, শিশুর সেই আনন্দে যেন ভাটা না পড়ে। উপহার, ভালোবাসা, সম্প্রীতি আর সৌহার্দ্যে রঙিন হয়ে উঠুক শিশুর ঈদ!

[প্রিয় পাঠক, আপনিও দৈনিক যুগান্তর অনলাইনের অংশ হয়ে উঠুন। লাইফস্টাইলবিষয়ক ফ্যাশন, স্বাস্থ্য, ভ্রমণ, নারী, ক্যারিয়ার, পরামর্শ, এখন আমি কী করব, খাবার, রূপচর্চা ও ঘরোয়া টিপস নিয়ে লিখুন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ছবিসহ মেইল করুন-jugantorlifestyle@gmail.com-এ ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।]

শিশুর জন্য রঙিন পোশাক

 হাবীবাহ্ নাসরীন  
১৪ মার্চ ২০২৩, ০১:৫৭ পিএম  |  অনলাইন সংস্করণ

ঈদের আনন্দ সবচেয়ে বেশি অনুভব করে শিশুরা। কারণ তাদের ভুবনটাই যে বর্ণিল! বড়দের মতো দায়িত্ব পালনের চাপ নেই, নেই অযথা দুশ্চিন্তা। মানুষের জীবনের সবচেয়ে সুন্দর অংশ মনে করা যেতে পারে শৈশবকে। আর সেই শৈশবের ঈদ রঙিন হবে না? নতুন জামার গন্ধ, রাত পোহালেই ঈদ, কোনো শাসন-বারণ নেই, পড়তে না বসলে মায়ের বকুনি খাওয়া নেই, ইচ্ছামতো ঘুরে বেড়ানো আর বড়দের কাছ থেকে সালামি পাওয়ার আনন্দ ঈদ ছাড়া পাওয়া যায়? তাই তো ঈদের কেনাকাটার চিন্তা করলে সবার আগে আসে শিশুর পোশাকের কথা। রোজা তো এসেই গেল, ঈদের কেনাকাটার তালিকা তৈরি করবেন নিশ্চয়ই? তাহলে শিশুর পোশাক কেনার আগে কিছু বিষয় মাথায় রাখুন।

কাপড়টা কেমন হবে
শিশুর পোশাক কেনার ক্ষেত্রে সবার আগে প্রাধান্য দিন পোশাকের কাপড়কে। কারণ শিশু তার অস্বস্তির কথা ঠিকভাবে বলতে পারে না। তাই পোশাকের কারণে শিশুর অস্বস্তি হলে মুশকিলে পড়ে যাবেন। শিশুর পোশাক কেনার সময় আগে পরখ করে দেখুন পোশাকের কাপড়টা আরামদায়ক কি না। অনেকে অনেক বেশি দাম দিয়ে শিশুকে ভারী ভারী পোশাক কিনে দেন। সেসব পোশাক শিশু খানিকক্ষণ গায়ে রেখে এরপর খুলে ফেলতে চায়। যদিও সেটি পরার কারণে শিশুকে দেখতে ভালোলাগে তবু আরামদায়ক না হলে সে সেটি পরে বেশিক্ষণ থাকতে চাবে না। এদিকে গরমের সময়ে ঈদ হওয়ার কারণে মোটা কিংবা ভারী কাজ করা পোশাক বাদ দিতে হবে। সুতি, মসলিন, সিল্ক, লিনেন, খাদি ইত্যাদির তৈরি পোশাক বেছে নিতে পারেন।

পোশাকের রং
শিশুর ঈদটাকে রঙিন করে তুলতে পোশাকের রঙের দিকে নজর তো আপনাকে দিতেই হবে। শিশুর পোশাকের ক্ষেত্রে নানা রঙের বাহার থাকলেই দেখতে বেশি ভালোলাগে। বর্তমানে অনেক ফ্যাশন হাউজ মা-বাবার সঙ্গে মিলিয়ে শিশুর পোশাক তৈরি করছে।

সেখান থেকেও কিনে নিতে পারেন পছন্দসই কোনো পোশাক। যেহেতু গরমের সময়, একটু উজ্জ্বল রং-ই দেখতে বেশি ভালোলাগবে। গাঢ় রংগুলো এড়িয়ে শিশুকে কিনে দিন সাদা, গোলাপি, আকাশি, নীল, বেগুনি, হালকা সবুজ, হলুদ জাতীয় রঙের পোশাক। এতে শিশু যেমন পরে আরাম পাবে তেমনই তাকে দেখেও হবে চোখের আরাম।

অপচয় না হোক
শিশুর জন্য অনেক ধরনের পোশাক আপনার কিনতে ইচ্ছা হতেই পারে। কিন্তু সেই সঙ্গে খেয়াল রাখবেন, অপচয় যেন না হয়। আপনি এখন যা কিছু আচরণ করছেন, শিশু সেখান থেকেই শিখছে। তাই ছোট বয়স থেকেই তাকে বুঝেশুনে খরচ করা শেখান। শিশুকে অবশ্যই পছন্দসই পোশাক কিনে দেবেন, তবে না চাইতেই অফুরন্ত দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ কোনো জিনিস প্রত্যাশার চেয়ে বেশি পাওয়ার অভ্যাস হয়ে গেলে শিশু সেভাবেই অভ্যস্ত হয়ে উঠবে। শিশুকে ঈদের পোশাক দেওয়ার পাশাপাশি অন্য কোনো সুবিধাবঞ্চিত শিশুকেও ঈদের পোশাক কিনে দিন। আর সেই কাজটি করুন আপনার সন্তানের হাত দিয়েই। এতে সে মানবিক গুণাবলিও সহজে আয়ত্ব করতে পারবে। ঈদ যে কেবল ভোগ করার জন্য নয়, বরং সবার সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করার বিষয় এটি শিশুকালেই বুঝতে শিখান।

শিশুর পছন্দ হচ্ছে তো?
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, শিশুর পছন্দ-অপছন্দকে তেমনভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। পোশাক কেনার ক্ষেত্রেও মা-বাবার পছন্দই শেষ কথা। কিন্তু শিশু ছোট হলেও একজন আলাদা মানুষ। তারও কিছু পছন্দ-অপছন্দ থাকতে পারে সে কথাও মাথায় রাখতে হবে। তাই পোশাক কেনার ক্ষেত্রে শিশুর মত নিতে পারেন। তার পছন্দ হচ্ছে কি না কিংবা কোন ধরনের পোশাক সে কিনতে চাচ্ছে তা জেনে নিতে পারেন। যদি তার পছন্দের পোশাকটি তার জন্য সঠিক না হয় তবে তা সহজভাবে বুঝিয়ে বলুন। ঈদ মানেই তো আনন্দ, শিশুর সেই আনন্দে যেন ভাটা না পড়ে। উপহার, ভালোবাসা, সম্প্রীতি আর সৌহার্দ্যে রঙিন হয়ে উঠুক শিশুর ঈদ!

[প্রিয় পাঠক, আপনিও দৈনিক যুগান্তর অনলাইনের অংশ হয়ে উঠুন। লাইফস্টাইলবিষয়ক ফ্যাশন, স্বাস্থ্য, ভ্রমণ, নারী, ক্যারিয়ার, পরামর্শ, এখন আমি কী করব, খাবার, রূপচর্চা ও ঘরোয়া টিপস নিয়ে লিখুন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ছবিসহ মেইল করুন-jugantorlifestyle@gmail.com-এ ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।]
যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন