Logo
Logo
×

লাইফ স্টাইল

ডিম্বাশয়ে সিস্ট কী, কোন নারীদের হতে পারে?

Icon

লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৫, ০২:৫৭ পিএম

ডিম্বাশয়ে সিস্ট কী, কোন নারীদের হতে পারে?

সংগৃহীত ছবি

সিস্টকথাটি শুনলে অনেকের মনে অজানা আতঙ্ক বাসা বাঁধে। নারীরা এই ভেবে ভয় পান যে, ডিম্বাশয়ে সিস্ট মানে তা ক্যানসারের কারণ হয়ে উঠবে কিনা। আর সিস্ট থাকলে সন্তানধারণে সমস্যা হতে পারে ভেবেও চিন্তা করে থাকেন অনেকেই।

সিস্ট মানেই আতঙ্ক নয়। কাদের সিস্ট হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে, সিস্ট ঠিক কোথায় হয় এবং তা প্রতিকারের উপায়ই বা কী, তা জেনে রাখা ভালো। সিস্ট ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রেই বিনাইন অর্থাৎ ক্যানসারহীন। তবে সিস্ট হলে সংশ্লিষ্ট অংশে ব্যথা-যন্ত্রণা হতে পারে।

আর ডিম্বাশয়ে সিস্ট হলে তার কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। তাতেই বিভ্রান্তি বাড়ে। তবে অহেতুক ভয় পেয়ে লাভ নেই। বরং সিস্ট ঠিক কী, কাদের হতে পারে এবং প্রতিকারের উপায় সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকা জরুরি।

সিস্ট হলো পানিভরা থলি।ওভারিয়ান সিস্টডিম্বাশয়ের ভেতরে হয়। থলির মতো গ্রোথ যার মধ্যে ঘোলা পানি, নোংরা বা সংক্রমিত পানি, রক্ত বা যে কোনো ধরনের ফ্লুইড থাকতে পারেএমনটিই জানিয়েছেন ভারতের স্ত্রীরোগ চিকিৎসক মল্লিনাথ মুখোপাধ্যায়।

সাধারণ পানি থাকলে সেগুলোকেসিম্পল সিস্টবলা হয়। আর রক্ত ভরা থাকলে সেগুলোই হয়ে ওঠেহেমারেজিক সিস্ট তিনি বলেন, সিস্ট মানে টিউমারের মতো গ্রোথ, তবে তা ক্যানসারে বদলে যাবে, এমন নয়। টিউমার ম্যালিগন্যান্ট (ক্যানসার) বিনাইন (ক্যানসারহীন) দুই রকমেরই হয়। সিস্টের দেয়াল মোটা হলে, তার মধ্যে কোষের অনিয়মিত বিভাজন হতে হতে তা পুরু হয়ে গেলে এবং ভেতরে রক্ত বা পুঁজ জমা হতে থাকলে, তখন তা ক্যানসারের চেহারা নিতে পারে। না হলে তেমন ভয়ের কারণ নেই। আলট্রাসোনোগ্রাফি, এমআরআই বা সিটিস্ক্যান করলেই সিস্ট ধরা পড়বে।

কাদের হতে পারে? বিষয়ে স্ত্রীরোগ চিকিৎসক রূপশ্রী দাশগুপ্ত বলেন, বিশেষ করে নারীর ক্ষেত্রে  বিভিন্ন বয়সে সিস্ট হতে পারে। ঋতুস্রাব চলাকালীন হরমোনের ওঠানামার কারণে সিস্ট হতে পারে। আবার রজোনিবৃত্তি পর্ব এসে গেলে তখন হরমোনের ওঠানামা বৃদ্ধি পায়। আসলে ইস্ট্রোজেন হরমোনের ভারসাম্য বিগড়ে গেলেই সিস্ট হয়। আবার ওজন অতিরিক্ত হলেও সিস্ট হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

তিনি বলেন, এন্ডোমেট্রিয়োসিসের কারণে সিস্ট হয় অনেকের। জরায়ুর ভেতরের একটি স্তর হলো এন্ডোমেট্রিয়াম। প্রতি মাসে জরায়ুর এই এন্ডোমেট্রিয়াম অংশের স্তর খসেই ঋতুস্রাব হয়। সেই রক্ত জরায়ু থেকে বেরিয়ে শরীরের বাইরে চলে আসে। কিন্তু এন্ডোমেট্রিয়াম জরায়ুর বাইরে, তলপেটের যে কোনো জায়গায় বা শরীরের অন্য কোথাও চলে এলে, তাকে বলে এন্ডোমেট্রিয়োসিস। তখন জরায়ুর ভেতরের স্তরের বৃদ্ধি বের হতে থাকে। ওই স্তর খসে যে রক্তপাত হয়, তা বেরোতে না পেরে সেই স্থানেই জমাট বাঁধতে শুরু করে। আশপাশের কোষগুলোতে চাপ তৈরি হয়। এর থেকে সিস্ট হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। ডিম্বাশয়, তলপেটের পেছনে, মূত্রথলি, বর্জ্য নির্গমনের পথে সিস্ট হতে পারে।

রূপশ্রী দাশগুপ্ত বলেন, সিস্ট ভয়ের কিনা তা জানতে কিছু টিউমার মার্কার টেস্ট করা হয়। ডিম্বাশয়ের সিস্ট বিনাইন না ম্যালিগন্যান্ট জানতে সিএ১২৫ রক্ত পরীক্ষা করা হয়। আলট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে সিস্টের পানি বের করে নেওয়া হয়। ক্যানসার হলে সার্জারি করে সিস্ট বাদ দিতে হয়। বড় সিস্ট অস্ত্রোপচারে বাদ না দিলে অন্যান্য অঙ্গের ক্ষতি হতে পারে। সাধারণ সিস্টের মধ্যে রক্ত চলাচলের শিরা ছিঁড়ে রক্ত জমলে হেমারেজিক সিস্ট হতে পারে। পাঁচ সেন্টিমিটারের কম সিস্টের জন্য কিছু করতে হয় না। তারচেয়ে বড় সিস্ট যন্ত্রের সাহায্যে বাদ দেওয়া হয়। শুধু তরল বার করে নিলে সেই সিস্ট আবার তরলে ভরে উঠতে পারে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম