Logo
Logo
×

স্মরণীয়-বরণীয়

খান মুহম্মদ মঈনুদ্দীন

Icon

প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

খান মুহম্মদ মঈনুদ্দীন ছিলেন কবি ও সাহিত্যিক। তিনি ১৯০১ সালের ৩০ অক্টোবর মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর উপজেলার চারিগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে তিনি পিতামাতা হারান। তার বাবা-মা তাদের উত্তরাধিকারীদের জন্য কোনো ভূসম্পত্তি বা অন্য কোনো সহায়-সম্পদ রেখে যাননি। ফলে অল্প বয়সেই মঈনুদ্দীনকে জীবিকার অনুসন্ধান করতে হয় এবং এ উদ্দেশ্যে তিনি কলকাতা গিয়ে সেখানে পুস্তক-বাঁধাই কর্মী হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। কাজের পাশাপাশি তিনি নৈশকালীন বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে থাকেন এবং প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে কলকাতা করপোরেশন শিক্ষক প্রশিক্ষণ মহাবিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে তিনি কলকাতা করপোরেশন ফ্রি প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতায় নিয়োজিত হন। সেখানে বিশ বছর দায়িত্ব পালন করেন। শিক্ষকতাকালীন তিনি শিশুদের জন্য লেখার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন।

১৯২৩ সালে মুহম্মদ মঈনুদ্দীন সাপ্তাহিক মুসলিম জগত পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হন। পত্রিকায় ‘বিদ্রোহ’ শীর্ষক এক সম্পাদকীয় প্রকাশের দায়ে তাকে ছয় মাস কারাভোগ করতে হয়। হুগলি জেলখানায় থাকাকালীন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের পর মুহম্মদ মঈনুদ্দীন ঢাকায় চলে আসেন। ১৯৪৮ সালে তিনি ঢাকায় ‘আলহামরা লাইব্রেরি’ নামে একটি প্রকাশনা সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। সেখান থেকে তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের জন্য পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন ও প্রকাশ করতেন।

১৯৫০ ও ১৯৬০-এর দশকে মুহম্মদ মঈনুদ্দীন শিশুতোষ কবি হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেন। তার রচিত অনেক ছড়া এখনো প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের মুখে উচ্চারিত হয়। তার রচিত শিশুতোষ গ্রন্থের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো-আমাদের নবী (১৯৪১), খোলাফা-ই-রাশেদীন (১৯৫১), আরব্য রজনী (১৯৫৭), বাবা আদম (১৯৫৮), স্বপন দেখি (১৯৫৯), লাল মোরগ (১৯৬১), শাপলা ফুল (১৯৬২)। তিনি অনেক কবিতা, গল্প ও উপন্যাস লিখেছেন। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-পালের নাও (কবিতা), হে মানুষ (কবিতা), আর্তনাদ (কবিতা); অনাথিনী (উপন্যাস; সহচর পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছিল), নয়া সড়ক (উপন্যাস); ঝুমকোলতা (ছোটগল্প)। তিনি যুগস্রষ্টা নজরুল (১৯৫৭) শিরোনামে একটি জীবনীগ্রন্থ রচনা করেছেন। তিনি শিশুসাহিত্যের জন্য বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬০), যুগস্রষ্টা নজরুল রচনার জন্য ইউনেস্কো পুরস্কার (১৯৬০) পেয়েছেন। তিনি ১৯৭৮ সালে একুশে পদক লাভ করেন। খান মুহম্মদ মঈনুদ্দীন ১৯৮১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি মারা যান।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম