Logo
Logo
×

স্মরণীয়-বরণীয়

এমাজউদ্দীন আহমদ

Icon

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ ১৯৩৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর তৎকালীন মালদহ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের ‘গোহাল বাড়ি’ এলাকায় পরিবারসহ দীর্ঘদিন বসবাস করেন তিনি। এমাজউদ্দীন আহমদ শিবগঞ্জের আদিনা সরকারি ফজলুল হক কলেজ এবং রাজশাহী কলেজের ছাত্র ছিলেন। মহান ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে ১৯৫২-পরবর্তী সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ছাত্রনেতা হিসাবে কারাবরণ করেন তিনি।

অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ কর্মজীবনে শিক্ষকতাকে পেশা হিসাবে বেছে নেন। তার শিক্ষকতা জীবনের সূচনা হয় কলেজ থেকে। তিনি প্রথমে বাগেরহাটের প্রফুল্ল চন্দ্র কলেজে প্রভাষক হিসাবে যোগদান করেন। পরে তিনি নীলফামারী কলেজ, চুয়াডাঙ্গা কলেজ এবং রংপুর কলেজে অধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে সিনিয়র লেকচারার হিসাবে যোগদান করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকালীন তিনি বিভাগের চেয়ারম্যান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, হাজী মোহাম্মদ মুহসীন হলের প্রভোস্ট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য এবং ১৯৯২ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসরগ্রহণের পর তিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অফ ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভের (ইউডা) উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি ছিলেন।

অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে তুলনামূলক রাজনীতি, প্রশাসন ব্যবস্থা, বাংলাদেশের রাজনীতি, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি, দক্ষিণ এশিয়ার সামরিক বাহিনী সম্পর্কে গবেষণা করেছেন। এসব ক্ষেত্রে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় তিনি বিশেষজ্ঞ হিসাবেও প্রখ্যাত। তার লিখিত গ্রন্থের সংখ্যা অর্ধশতাধিক। দেশ-বিদেশের খ্যাতনামা সাময়িকীতে তার প্রকাশিত গবেষণামূলক প্রবন্ধের সংখ্যা শতাধিক। তার লিখিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-রাষ্ট্রবিজ্ঞানের কথা, মধ্যযুগের রাষ্ট্রচিন্তা, তুলনামূলক রাজনীতি : রাজনৈতিক বিশ্লেষণ, বাংলাদেশে গণতন্ত্র সংকট, সমাজ ও রাজনীতি, গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ ইত্যাদি।

শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান এবং সৃজনশীল লেখার জন্য তিনি দেশ-বিদেশে বিশেষভাবে সম্মানিত হয়েছেন। একুশে পদক, মাইকেল মধুসূদন দত্ত স্বর্ণপদক, শেরে বাংলা স্মৃতি স্বর্ণপদক, ঢাকা সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক স্বর্ণপদক, বাংলাদেশ যুব ফ্রন্ট স্বর্ণপদক, রাজশাহী বিভাগীয় উন্নয়ন ফোরাম স্বর্ণপদকসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বহু পুরস্কার ও সম্মাননা অর্জন করেছেন তিনি। অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ ২০২০ সালের ১৭ জুলাই মারা যান।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম