Logo
Logo
×

স্মরণীয়-বরণীয়

আমির খসরু

Icon

প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

আবুল হাসান ইয়ামিন উদ-দিন খসরু (১২৫৩-১৩২৫) একজন সুফি কবি। তিনি আমির খসরু নামেই পরিচিত। তিনি ফার্সি ও উর্দু দুই ভাষায় লিখেছিলেন। তিনি শুধু কবি ছিলেন না, ছিলেন এক অনন্য গায়ক, তিনি প্রাচীনতম জ্ঞাত মুদ্রিত অভিধান লিখেছিলেন। তাকে ‘কাওয়ালির জনক’ বলে গণ্য করা হয়। তিনি প্রথম ভারত ও পাকিস্তানে গজল-গান চালু করেন। তিনি ফার্সি, আরবি এবং তুর্কি উপাদান অন্তর্ভুক্ত করে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতকে সমৃদ্ধ করে তোলেন। খসরুকে কখনো কখনো ‘ভারতের কণ্ঠস্বর’ বা ‘ভারতের তোতাপাখি’ এবং ‘উর্দু সাহিত্যের জনক’ বলা হয়।

তিনি উত্তরপ্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আমির সাইফ উদ-দিন মাহমুদ, তিনি ছিলেন একজন তুর্কি। তার মা ছিলেন এক রাজপুত কন্যা। আমির খসরু আট বছর বয়সে প্রথম কবিতা লিখেন। ১২৭১ সালে তার নানা ১১৩ বছর বয়েসে মারা যাওয়ার পর তিনি দুঃখ ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েন। ১২৯৮ সালে তার মা ও ভাই মারা যান। এটি ছিল তার জন্য বড় এক ধাক্কা। বলা হয় যে, তাকে সংগীত এ অবস্থা থেকে বের হতে সাহায্য করে। ১২৬৫ খ্রিষ্টাব্দে তুর্কি বংশোদ্ভূত গিয়াসউদ্দিন বলবান দিল্লির সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন। খসরু এ সুলতানের পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেন। অল্প বয়সে কবিতা রচনা করে তিনি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হন। ১২৭৬ খ্রিষ্টাব্দের দিকে তিনি বলবানের পুত্র বুগরা খাঁর সঙ্গে কবিতা রচনায় মনোযোগী হন। বলবানের পুত্র বুগরা খাঁ বঙ্গদেশের শাসনকর্তা নিযুক্ত হওয়ার পর তার অনুরোধে তিনি বঙ্গদেশে ভ্রমণ করেন।

ভারতীয় ধ্রুপদী সংগীতের একজন পথিকৃৎও ছিলেন আমির খসরু। তিনি ‘তারানা’ আবিষ্কারের জন্য বিখ্যাত, যা একটি দ্রুতগতির কণ্ঠস্বর, যা ধ্রুপদী সংগীত প্রশিক্ষণ এবং পরিবেশনার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। তবলা আবিষ্কারের জন্যও খসরুকে কৃতিত্ব দেওয়া হয়। কবিতার পাশাপাশি তিনি গদ্য রচনার জন্যও খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। আমির খসরু সুফি কবিতার একটি সংগীত পরিবেশনা-কাওয়ালির স্রষ্টা হিসাবে জনপ্রিয়। তার

জীবদ্দশায় তিনি হিন্দবী তৈরি করেন, যা উর্দু ভাষার একটি উপ-ভাষা যা উর্দু এবং হিন্দির মিশ্রণ।

১৩১০ সালে, খসরু সুফি সাধক নিজামুদ্দিন আউলিয়ার শিষ্য হন। নিজামুদ্দিন আউলিয়ার মৃত্যুর ছয় মাস পর, ১৩২৫ সালের অক্টোবরে খসরু মারা যান। দিল্লির নিজামুদ্দিন দরগায় তার আধ্যাত্মিক গুরুর সমাধির পাশেই খসরুর সমাধি অবস্থিত। আমির খসরু ছিলেন দিল্লি সালতানাতের সাতজনেরও বেশি শাসকের রাজসভার সঙ্গে যুক্ত একজন সমৃদ্ধ ধ্রুপদী কবি। তিনি অনেক কৌতুকপূর্ণ ধাঁধা, গান এবং কিংবদন্তি লিখেছেন, যা দক্ষিণ এশিয়ার জনপ্রিয় সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম