Logo
Logo
×

স্মরণীয়-বরণীয়

হামিদা বানু বেগম

Icon

প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

মোগল সম্রাট হুমায়ুনের স্ত্রী এবং সম্রাট আকবরের মা হামিদা বানু বেগম ‘মরিয়ম মাকানি’ উপাধিতে ভূষিত হয়েছিলেন। হামিদা বানু ১৫২৭ সালে পারসিয়ান এক শিয়া পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম শেখ আলী আকবর জামি। আলী আকবর প্রথম মোগল সম্রাট বাবরের কনিষ্ঠ পুত্র হিন্দল মির্জার বন্ধু ও শিক্ষক ছিলেন। হামিদার মা মাহনা আফরাজ বেগম আলী আকবরকে সিন্ধুর পাট শহরে বিয়ে করেন। আলওয়ার শহরে বাবরের স্ত্রী ও হুমায়ুনের সৎমা দিলদার বেগম আয়োজিত এক ভোজসভায় হুমায়ুনের সঙ্গে ১৪ বছরের বালিকা হামিদার প্রথম দেখা হয়। শের শাহ সুরির আক্রমণে হুমায়ুন তখন নির্বাসিত। যখন হুমায়ুন ও হামিদার বিয়ের প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়, তখন হামিদা ও হিন্দল উভয়েই এতে আপত্তি করেন। ধারণা করা হয়, হামিদা হিন্দলকে ভালোবাসতেন, যদিও এর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। হিন্দলের বোন ও হামিদার ঘনিষ্ঠ সখী গুলবদন বেগম ‘হুমায়ুননামা’ বইতে উল্লেখ করেন, সেই সময় হিন্দলের প্রাসাদে এবং দিলদার বেগম আয়োজিত সভায় হামিদাকে প্রায়ই দেখা যেত। প্রথমে হামিদা বাদশাহর সঙ্গে দেখা করতে অস্বীকার করেন। ৪০ দিন চেষ্টার পর দিলদার বেগমের প্ররোচনায় অবশেষে তিনি হুমায়ুনকে বিয়ে করতে রাজি হন।

শের শাহ সুরি ১৫৪৫ সালে মৃত্যুবরণ করেন এবং তার উত্তরসূরি ইসলাম শাহও ১৫৫৪ সালে মারা যান। এভাবে সুরি সাম্রাজ্য ভেঙে পড়ে। ১৫৫৪ সালের নভেম্বরে হুমায়ুন ভারতের উদ্দেশে রওয়ানা হলে হামিদা কাবুল গিয়ে থাকেন। হুমায়ুন ১৫৫৫ সালে দিল্লি পুনরুদ্ধার করতে পারলেও ফিরে আসার বছরখানেকের মধ্যে পাঠাগারের সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

১৫৫৬ সালে ঘটে যাওয়া এই অকালমৃত্যুর সময় তার বয়স ছিল ৪৭ আর তার উত্তরাধিকারী পরবর্তীকালের বিখ্যাত সম্রাট আকবরের বয়স ছিল মাত্র ১৩। রাজত্বের দ্বিতীয় বছরেই হামিদা আকবরের কাছে কাবুলে চলে আসেন এবং তার কাছে থেকে যান। হামিদা তখন বিভিন্ন দরবারি কাজেও হস্তক্ষেপ করতেন।

হামিদা ১৬০৪ সালের ২৯ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন। তাকে দিল্লিতে সম্রাট হুমায়ুনের সমাধিসৌধে কবর দেওয়া হয়। তিনি আকবরের মৃত্যুর এক বছর আগে এবং স্বামী হুমায়ুনের মৃত্যুর প্রায় অর্ধশত বছর পরে মারা যান। ইংরেজ পর্যটক টমাস করিয়টের ভাষ্যমতে, আকবর হামিদা বানুকে যথেষ্ট সম্মান প্রদর্শন করতেন। একবার লাহোর থেকে আগ্রা যাওয়ার পথে আকবর নিজে তার পালকি টেনে নদী পার করেছিলেন। যুবরাজ জাহাঙ্গীর যখন পিতা আকবরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন, হামিদা বানু তখন বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে বিষয়টি সামাল দেন।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম