শীতে প্রজনন স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে ৭ উপায়ে
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:২৫ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
শীতকালে রোগবালাই একটু বেশিই হয়। এ সময় আপনার শরীরে নানা পরিবর্তন নিয়ে আসে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়ে পুরুষের প্রজনন স্বাস্থ্যব্যবস্থাতেও। অনেক পুরুষই বুঝতে পারেন না যে, শীতকালে দৈনন্দিন রুটিন, খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক কার্যকলাপ, ঘুম এবং মানসিক চাপের পরিবর্তনের কারণে নীরবে শুক্রাণুর স্বাস্থ্যে প্রভাব পড়তে পারে।
শীতকালে জীবনযাপনে সামান্য পরিবর্তন আনলেই পুরুষের উর্বরতায় বড় ধরনের ইতিবাচক প্রভাব দেখা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন নার্চারের স্ত্রীরোগ ও আইভিএফ বিশেষজ্ঞ ডা. অর্চনা ধাওয়ান বাজাজ। তিনি বলেন, প্রতিদিনের কিছু সহজ অভ্যাস মেনে চললে এ মৌসুমে প্রজনন স্বাস্থ্য রক্ষা করার পাশাপাশি তা আরও উন্নত করা সম্ভব।
পুরুষের প্রজনন ব্যবস্থায় কিছু পরিবর্তন দেখা দেয় তা তাপমাত্রা কমে গেলে, যা অনেক সময় অগোচরেই থেকে যায়। শীতের সময় হরমোনের ভারসাম্য, বিপাকক্রিয়া, দৈনন্দিন অভ্যাস— এমনকি রক্ত সঞ্চালনেও প্রভাব পড়ে। এর ফলে শুক্রাণুর গুণগতমান ও কার্যকারিতাও কমে যেতে পারে। তবে এ সময়টিই সামান্য কার্যকর পরিবর্তনের মাধ্যমে পুরুষের উর্বরতা বাড়ানোর উপযুক্ত সুযোগ থাকে।
আর শীতকালে পুরুষের উর্বরতা রক্ষার একটি পূর্ণাঙ্গ পথ তৈরি করে সাতটি সহজ অভ্যাস। শুধু চিকিৎসা নয়, দৈনন্দিন জীবনযাপনও প্রজনন স্বাস্থ্যে বড় ভূমিকা রাখে। মৌসুমি যত্ন শুক্রাণুর মান উন্নত করে এবং সামগ্রিক সুস্থতা বাড়ায়।
তবে হ্যাঁ, নিয়মিত এসব অভ্যাস মেনে চললে বেশিভাগ পুরুষ কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ইতিবাচক পরিবর্তন অনুভব করতে পারেন। শীতকাল ধীরগতির মনে হলেও, এটি আসলে শরীরকে নতুনভাবে সাজানোর একটি বিশেষ সুযোগ।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, যে সাতটি বিষয় শুক্রাণু বাড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ
১. শরীর উষ্ণ রাখা উচিত
শীতকালে শরীর, বিশেষ করে পেলভিক বা নিম্নাঙ্গ উষ্ণ রাখা অত্যন্ত জরুরি। কারণ অতিরিক্ত ঠান্ডায় শুক্রাণুর গতিশীলতা কমে যায়। সুতরাং পর্যাপ্ত গরম পোশাক পরা রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
২. পানিশূন্যতা
শীতকালে পানির তৃষ্ণা কম লাগায় অনেকেই প্রয়োজনের তুলনায় কম পানি পান করে থাকেন। কিন্তু পর্যাপ্ত পানি শুক্রাণুর তরলের পরিমাণ ঠিক রাখা এবং কোষের কার্যকারিতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৩. পুষ্টিকর খাবার
শীতকালে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার—যেমন সাইট্রাস ফল, আখরোট, টমেটো ও সবুজ শাকসবজি শুক্রাণুর ওপর অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে, যা কম উর্বরতার অন্যতম কারণ।
৪. ব্যায়াম ও হরমোনের ভারসাম্য
শীতকালে অলস জীবনযাপন বেড়ে যায়। নিয়মিত ব্যায়াম টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়ায়, বিপাকক্রিয়া উন্নত করে এবং শুক্রাণু উৎপাদনে সহায়তা করে।
৫. ঘুম ও উর্বরতার সম্পর্ক
হরমোন নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত ঘুম অত্যন্ত জরুরি। শীতে রাত জেগে স্ক্রিন দেখা বা অনিয়মিত রুটিনের কারণে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটলে উর্বরতায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
৬. মানসিক চাপ
বছরের শেষ দিকে মানসিক চাপ বাড়ে, যা হরমোনের স্বাভাবিক সংকেতকে ব্যাহত করে তোলে। গভীর শ্বাস নেওয়া, ধ্যান কিংবা দিনের আলোতে হাঁটার মতো অভ্যাস কর্টিসল হরমোন নিয়ন্ত্রণে রাখে, যা শুক্রাণু বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৭. অতিরিক্ত তাপ এড়িয়ে চলা
শীতকালে দীর্ঘ সময় গরমপানিতে গোসল ও গাড়ির হিটেড সিট ব্যবহার বা কোলে ল্যাপটপ রাখার অভ্যাস এড়িয়ে চলা উচিত। অতিরিক্ত তাপ শুক্রাণুর সংখ্যা ও গঠন ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

