|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বৃদ্ধ সম্রাট আকবর তার পাকা চুলে মাঝে মাঝে কলপ করাতেন। কলপ দিলে নাকি বয়স খুব কম দেখায়।
একদিন সম্রাট নির্জন ঘরে বসে সবেমাত্র নিজের মাথায় কলপ লাগাবার সামগ্রীগুলো বের করেছেন, এমন সময় বীরবল কী এক রাজকার্যে সম্রাটকে খুঁজতে খুঁজতে সেখানে এসে হাজির। সম্রাট একটু যেন রেগে গেলেন।
বীরবল অবস্থা বুঝতে পেরে বললেন, ‘হুজুর, না জেনে হঠাৎ বিশেষ দরকারে আপনাকে খুঁজতে খুঁজতে এখানে এসেছি। এজন্য আমাকে ক্ষমা করে দিন। এ সময় আসা সত্যিই আমার অন্যায় হয়েছে।’
সম্রাট সে কথায় কান না দিয়ে প্রশ্ন করলেন, ‘আচ্ছা বীরবল, মাথার চুলে কলপ মাখলে মস্তিষ্কের কোষের কি কোনো অনিষ্ট হয়?’
বীরবল অতি ধূর্ত।
একবার তিনি বাঁকা চোখে ওই সামগ্রীগুলোর দিকে তাকালেন। তারপর বললেন, ‘মহারাজ, ভয়ের কিছু নাই।’
‘ভয় নাই মানে?’ সম্রাট কৌতূহল ভরে বীরবলের দিকে তাকালেন।
বীরবল সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে বললেন, ‘একটু সুবিধা কী জানেন সম্রাট, যারা চুলে কলপ মাখে, তাদের মস্তিষ্ক নামক পদার্থই নেই। সেইজন্য মস্তিষ্ক অনিষ্টের কোনো প্রশ্নই ওঠে না।’
সম্রাট আশ্চর্য হয়ে গেলেন। বললেন, ‘এ কী বলছ বীরবল? কেমন করে জানলে তাদের মস্তিষ্ক নেই?’
বীরবল একটু হাসলেন। বললেন, ‘হুজুর, মস্তিষ্ক থাকলে কী তারা বাজে কাজে সময় নষ্ট করত? পাকা কি কখনও কাঁচা হয়? বার্ধক্য কি কখনও যৌবন ফিরিয়ে এনে দেয়? নদীর জল কি কখনও ফিরে যায় পাহাড়ে?’
সম্রাট আর কথা না বাড়িয়ে কলপের সামগ্রীগুলো দূরে ঠেলে দিয়ে বললেন, ‘চলো তবে, রাজকার্যে যাওয়া যাক।’
