ভিনদেশি রসিকতা
পাখিওয়ালা আর বনরক্ষী
আশরাফুল আলম পিনটু
প্রকাশ: ১০ এপ্রিল ২০২১, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
দক্ষিণ আফ্রিকার এক হাইওয়ে। দু’পাশে গভীর জঙ্গল। মাঝের এ রাস্তায় গাড়ি চালাচ্ছিল লাল চুলের এক লোক। গাড়ির পেছনে ক্যারিয়ারে খাঁচাভর্তি নানা রকম পাখি। খুব সুন্দর। দুষ্প্রাপ্য।
পথে বনরক্ষীরা থামাল লোকটাকে। পেছনের পাখিগুলো দেখল তারা। বনরক্ষী প্রধান এগিয়ে এলেন। জানালায় ঝুঁকে জানতে চাইলেন, ‘পাখির ব্যবসা করেন নাকি? লাইসেন্স দেখান।’
‘না স্যার, ব্যবসা করি না।’ লোকটা জবাব দিল, ‘তবে এগুলোর জন্য কাগজপত্রের দরকার আছে বলে মনে করি না।’
বনরক্ষী প্রধান : মনে করেন না কেন?
লোকটা : কারণ, এগুলো আমার পোষা পাখি।
‘দুষ্প্রাপ্য এ পাখিগুলো আপনার পোষা?’ অবাক হলেন বনরক্ষী প্রধান। লোকটার কথা বিশ্বাস হচ্ছিল না তার।
‘হ্যাঁ স্যার, পোষা পাখি।’ লোকটা বলল, ‘সপ্তাহে একদিন এগুলো নিয়ে এ বনে আসি। খাঁচা খুলে দিই। ওরা এ গাছে ও গাছে ওড়াউড়ি করে। এদিক-ওদিক যায়। ডাকাডাকি করে। এভাবে খোলা আকাশে মুক্ত বাতাসে সময় কাটায় ওরা। তারপর আমি শিস দিয়ে ডাকি। ওরা খাঁচায় ফিরে আসে। ওদের নিয়ে বাড়ি চলে যাই।’
রেগে অবিশ্বাসের সুরে বনরক্ষী প্রধান বললেন, ‘যতসব গাঁজাখোরি কথা! আপনাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে।’
লোকটা বলল, ‘যা সত্যি তা-ই বললাম, স্যার। আমি প্রমাণ দিতে পারব। এটা আমি বরাবরই করে আসছি।’
‘বরাবরই করে আসছেন!’ ব্যঙ্গ করে হাসলেন বনরক্ষী প্রধান, ‘ঠিক আছে। প্রমাণ করে দেখান তবে!’
লোকটা গাড়ি থেকে বেরিয়ে এলো। খাঁচা থেকে মুক্ত করে দিল পাখিদের। ওরা উড়ে চলে গেল এদিক-ওদিক। বনের গভীরে চলে গেল ওরা। একসময় আর দেখা গেল না একটাকেও।
লোকটা সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিল। দাঁড়িয়ে ছিল বনরক্ষীরাও।
কয়েক মিনিট পর লোকটাকে বনরক্ষী প্রধান বললেন, ‘আচ্ছা। এখন কী করবেন?’
‘মানে! কী করব স্যার?’ লোকটা অবাক হয়ে জানতে চাইল।
বনরক্ষী প্রধান : শিস দিয়ে ওদের কখন ডাকবেন?
লোকটা : কাদের ডাকব?
বনরক্ষী প্রধান : পাখিগুলোকে।
লোকটা : পাখি! কোন পাখি স্যার?
