Logo
Logo
×

ইসলাম ও জীবন

গার্লফ্রেন্ড বয়ফ্রেন্ড প্রথা নিয়ে কিছু কথা

Icon

মেহেদি হাসান সাকিফ

প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বিয়ে নিয়ে তরুণ-তরুণীদের জল্পনা-কল্পনা একটু বেশিই থাকে। অনেক তরুণ ছাত্রাবস্থায় বিয়ে করতে চাইলেও পরিবারের কারণে পারেন না। কোনো দ্বীনদার ছেলের পরিবারও তা মেনে নিতে পারেন না। এক হাদিসে আল্লাহর রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ওহে যুবক শ্রেণি! তোমাদের মধ্যে যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে, সে যেন বিয়ে করে এবং যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে না, সে যেন সিয়াম পালন করে। কেননা সিয়াম যৌনতাড়নাকে দমন করে। [সহিহ বুখারি : ১৯০৫; আহমাদ ৪০৩৩]।

বিয়ের কথা বলতে গেলেই প্রথমে আসে সামর্থ্যরে কথা। আমাদের সমাজে বলা হয়ে থাকে বিয়ে করে বউকে খাওয়াবে কী?

মনে হয় যেন বউ বড় ধরনের রাক্ষস। পরিবারের সব খাবার একাই খেয়ে ফেলবে। অথচ তিন-চারজন সদস্যের রান্না হওয়া পরিবারে অনায়াসেই একজনের খাবারের ব্যবস্থা করা যায়।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, তোমাদের সামর্থ্যানুযায়ী যেখানে তোমরা বসবাস কর সেখানে তাদেরও বাস করতে দাও, তাদের সংকটে ফেলে কষ্ট দিয়ো না। [সূরা তালাক : ০৬)।

আলোচ্য আয়াতে তালাকপ্রাপ্ত নারীর অধিকার বর্ণনা করা হয়েছে। এ আয়াতটি থেকে এই বিষয়টি সহজেই বোঝা যায়- যারা তালাকপ্রাপ্ত নয় তারাও স্বামীর সাধ্যানুসারে ভরণপোষণ ও বাসস্থান লাভ করবে।

সমাজের অধিকাংশ অভিভাবক অর্থনৈতিক এবং সন্তানের ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারের কথা ভেবে কলেজ-ইউনিভার্সিটি থাকাকালীন বিয়ে করতে বারণ করছেন।

অথচ পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা তোমাদের মধ্যকার অবিবাহিত নারী-পুরুষ ও সৎকর্মশীল দাস-দাসীদের বিবাহ দাও। তারা অভাবী হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের অভাবমুক্ত করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও মহাজ্ঞানী। (সূরা নুর-৩২)।

এ আয়াতে আল্লাহতায়ালা অবিবাহিত তরুণ-তরুণীদের বিবাহতে উৎসাহিত করেছেন।

হজরত আবু হুরাইরাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তিন ব্যক্তিকে সাহায্য করা আল্লাহতায়ালার ওপর আবশ্যক হয়ে যায়।

(১) ওই ব্যক্তি যে বিবাহের মাধ্যমে নিজেকে পূত পবিত্র রাখতে চায়।

(২) ওই গোলাম, যে তার মালিকের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ টাকা আদায় করার ইচ্ছা রাখে এবং (৩) আল্লাহতায়ালার পথে মুজাহিদ। (তিরমিযী হা: ১৬৫৫, নাসায়ী হা: ৩১২০, হাসান)।

আধুনিক যুগের প্রসিদ্ধ আরবি সাহিত্যিক বিয়েকে ক্ষুধার সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেছেন, এটাও এক ধরনের ক্ষুধা। ক্ষুধার্তকে খাবার দিতে হয়। নইলে সে চুরি করে হলেও খাদ্য খুঁজে নেয়। তেমনই বিয়ের দরকার হলে সামর্থ্য থাকলে বিয়ে করে নিতে হয়। নইলে সে অন্যভাবে ক্ষুধা মিটাবে। বর্তমান সময়ের অধিকাংশ তরুণ-তরুণীই পাপের পথে পা ফেলছে অর্থনৈতিক চিন্তা করে তারা বিবাহ থেকে দূরে থাকলেও গার্লফ্রেন্ড-বয়ফ্রেন্ডের চ্যাটিং, ডেটিং, একসঙ্গে দুজনে সময় কাটাচ্ছে, ঘুরতে যাওয়া, জন্মদিনসহ বিভিন্ন উপলক্ষে পরস্পরকে উপহার দেয়ার মাধ্যমে ঠিকই হাজার হাজার টাকা নষ্ট করছে। অথচ বিয়ে করছে না! তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করা অভিভাবকদের ধর্মীয় ও নৈতিক দায়িত্ব। নইলে সন্তানদের অবৈধ কর্মে জড়ানোর কারণে বাবা-মাকে পাপের সাজা ভোগ করতে হবে।

লেখক : প্রাবন্ধিক

 

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম