Logo
Logo
×

ইসলাম ও জীবন

কোরবানির পশু কেমন হবে

Icon

মুফতি আমজাদুল হক খান আরমানী

প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২০, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

কোরবানির পশু কেমন হবে

কোরবানি দিতে হবে শরিয়ত যে ধরনের পশু পছন্দ করে। যেমন- উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা ইত্যাদি দিয়ে।

এ ধরনের পশুকে কোরআনের ভাষায় বলা হয় ‘বাহিমাতুল আনআম অর্থাৎ অহিংস্র গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তু।’

এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য কোরবানির নিয়ম নির্ধারণ করে দিয়েছি। জীবনোপকরণ স্বরূপ তাদের যেসব ‘বাহিমাতুল আনআম’ দিয়েছি সেগুলোর ওপর তারা যেন আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে।’ (সূরা হজ, আয়াত ৩৪।)

কোরবানির পশু কেমন হবে এ সম্পর্কে হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা চেষ্টা করবে কোরবানির জন্য নির্দিষ্ট বয়সের পশু নির্বাচন করতে। যদি না পাও তাহলে ছয় মাসের দুম্বা কোরবানি করতে পার। (মুসলিম।)

ফকিহরা বলেছেন, উটের বয়স পাঁচ বছর, গরু বা মহিষ দুই বছর, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা এক বছরের হওয়া শর্ত। বয়স কম; কিন্তু দেখতে হৃষ্টপুষ্ট এমন পশু দিয়ে কোরবানি করা জায়েজ হওয়ার পক্ষে বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন।

রাসূল (সা.) উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা ছাড়া অন্য কোনো পশু কোরবানি করেননি কিংবা অনুমোদনও করেননি। তাই এসব পশু দিয়েই কোরবানি করা সুন্নাত।

শরিয়তের পরামর্শ হল, হৃষ্টপুষ্ট, বেশি গোশত, নিখুঁত এবং দেখতে সুন্দর পশু কোরবানি করা। কোরবানির পশু সব ধরনের দোষ-ত্রুটিমুক্ত হওয়া চাই।

বারা ইবনে আজেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, চার ধরনের পশু দিয়ে কোরবানি করা জায়েজ নয়। অন্ধ, রোগা, পঙ্গু এবং আহত।

নাসায়ির বর্ণনায় ‘আহত’ শব্দের জায়গায় ‘পাগল’ বলা হয়েছে। (সুনানে নাসায়ি।) শিং ভাঙা, কান কাটা, লেজ কাটা, ওলান কাটা, লিঙ্গ কাটা ইত্যাদি ধরনের পশু দিয়ে কোরবানি করাকে মাকরুহ বলেছেন ফকিহরা।

ভেড়া, দুম্বা, ছাগল এসব পশু একজন কোরবানি করতে পারবেন। উট, গরু, মহিষ সর্বোচ্চ সাতজন কোরবানি করতে পারবেন।

হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা হুদাইবিয়ায় রাসূল (সা.) এর উপস্থিতিতে গরুর ও উট সাত ভাগের কোরবানি করেছি। (ইবনে মাজাহ।) পশু জবাই করার সময় পশুকে খুব আদর করে কষ্ট না দিয়ে জবাই করার নির্দেশ দিয়েছেন রাসূল (সা.)।

হাদিসে বলা হয়েছে, তোমরা যখন জবাই করবে সুন্দরভাবে করবে। ছুরিতে ধার দিয়ে নেবে যেন পশুর কষ্ট কম হয়। (সহি মুসলিম।)

একটি হাদিসে বলা হয়েছে, অভাব-অনটন দুর্ভিক্ষের সময় তিন দিনের বেশি কোরবানির গোশত সংরক্ষণ করা জায়েজ নয়। তবে দুর্ভিক্ষ চলে গেলে এ হুকুম রহিত হয়ে যাবে। যেহেতু দেশে এখন অভাব এবং নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে, তাই এ হাদিসখানি কোরবানিদাতাদের মনে রাখা জরুরি।

লেখক : ইমাম ও খতিব, ময়নারবাগ জামে মসজিদ, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা

কোরবানি পশু কেমন হবে

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম