Logo
Logo
×

ইসলাম ও জীবন

মুর্শিদ মুহাম্মদের নাম

Icon

আদিল মাহমুদ

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২১, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

মুর্শিদ মুহাম্মদের নাম

যখন পুরো পৃথিবী নিকষ আঁধারে ছেয়ে ছিল, আল্লাহতায়ালার উপাসনা করার মতো কেউ ছিল না পৃথিবীতে। ঠিক তখনই মানবজাতিকে অন্ধকারের ঘোর অমানিশা থেকে আলোর মিনারায় স্থানান্তরিত করার জন্য সর্বপুণ্যময় ভূমি, পৃথিবীর কেন্দ্রস্থল, মক্কা নগরীর কুরাইশ বংশে জন্মগ্রহণ করেছেন নবীজি মুহাম্মদ (সা.)।

তিনি বর্বরতার অতল গহ্বরে তলিয়ে যাওয়া আরবের মানুষগুলোকে সোনালি সময় এবং নতুন জীবন দান করেছেন। মানব গোলামির জিঞ্জির ভেঙে একনিষ্ঠ ইবাদতের সুযোগ করে দিয়েছেন।

তার আনিত ধর্ম ‘ইসলাম’ গ্রহণ করে, তার পরশে থেকে ‘সাহাবি’ হওয়ার সৌভাগ্য লাভের সুযোগ পেয়েছেন। আর তিনি প্রেম ও ভালোবাসার প্রতীক হয়ে উঠেছেন।

মানুষ যখন কাউকে ভালোবাসে, তার রঙে জীবন রঙিন করে, তখন তাকে প্রেম ও আদরের অনেক নামে ডাকে।

এমনিভাবে নবীজিকে সাহাবায়ে কেরাম, ওলামায়ে কেরাম ও কবি-সাহিত্যিকরা হরেক রকম নামে, বিভিন্ন কিছুর সঙ্গে উপমা দিয়ে নিজের মনের মতো করে ডেকেছেন। তবে তাদের সবাই নবীজির জন্মগত নাম ‘মুহাম্মদ’ ও ‘আহমদ’-এর কথা জানেন। এই দুই নামেই বেশিরভাগ ডাকেন। কিন্তু অনেকে জানেন না, নবীজির ‘মুহাম্মদ’ ও ‘আহমদ’ নামের রহস্য!

‘মুহাম্মদ’ নামের অর্থ প্রশংসিত। নবীজির ‘মুহাম্মদ’ নামের রহস্য হলো, আল্লাহতায়ালা তার মাখলুকাতের মধ্যে নবীজির সবচেয়ে বেশি প্রশংসা করেছেন। এত প্রশংসা তিনি অন্য কোনো নবী-রাসূলের করেননি।

তার মতো করে অন্য কাউকে জগদ্বাসীর জন্য সুন্দরতম নমুনা হিসাবে প্রেরণ করেননি, একমাত্র তাকেই করেছেন। শারীরিক গঠন কাঠামোর দিক দিয়েও নজিরবিহীনভাবে বানিয়েছেন। তার মতো অঙ্গ সৌষ্ঠবের অধিকারী এত সুন্দর আর কেউ ছিল না, কিয়ামত পর্যন্ত হবেও না।

আল্লাহ তাকে অনুপম চরিত্র মাধুরী দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। চারিত্রিক সৌন্দর্যেও তিনি ছিলেন সৃষ্টির সেরা। আল্লাহ তার চরিত্রের প্রশংসা করে বলেছেন, ‘নিঃসন্দেহে আপনি মহান চরিত্রের অধিকারী’। (সূরা আল কালাম ৪)।

অসংকোচ, অনাড়ষ্ট, দ্ব্যর্থবোধক ও অর্থপূর্ণ কথা। সহিষ্ণুতা, ধৈর্য ও ক্ষমাশীলতার গুণবৈশিষ্ট্যসহ হাজারও গুণাবলি তার মধ্যে ছিল। এ সবই ছিল প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর পক্ষ থেকে পাওয়া গুণরাজি, আল্লাহর প্রশংসার অংশ।

আর তিনিই পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি প্রশংসিত ব্যক্তি ছিলেন, আছেন, কিয়ামত পর্যন্ত থাকবেন এবং হাশরের মায়দানেও বেশি প্রশংসিত ব্যক্তি হবেন। এই জন্য নবীজির নাম ‘মুহাম্মদ’ রাখা হয়েছে।

‘আহমদ’ নামের অর্থ প্রশংসাকারী। নবীজির ‘আহমদ’ নামের রহস্য হলো, আসমান-জমিনের মধ্যে যা কিছু আছে, মানুষ, জিন ও ফেরেশতারা মিলেও আল্লাহর এত বেশি প্রশংসা করেননি, যতটা প্রশংসা নবীজি একা করেছেন। তিনি (সা.) সর্বাবস্থায় আল্লাহর প্রশংসা করতেন।

তার মতো করে আল্লাহর প্রশংসা কেউ করতে পারেনি এবং কিয়ামত পর্যন্ত পারবে না। এমনকি হাশরের ময়দানে নবীজি সিজদায় পড়ে আল্লাহর প্রশংসা করতে থাকবেন। এই জন্য নবীজির নাম ‘আহমদ’ রাখা হয়েছে।

নবীজি ‘মুহাম্মদ’ (সা.) নাম রেখেছেন তার সম্মানিত দাদা আব্দুল মুত্তালিব। আর ‘আহমদ’ নাম রেখেছেন সম্মানিত মাতা আমেনা।

লেখক : প্রাবন্ধিক

 

মুর্শিদ মুহাম্মদ নাম

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম