Logo
Logo
×

বিচ্ছু

দেখে নিন ২০৫০-এর ঢাকা

গুণেমানে নয়, ঢাকা ঢাকবে জনগণে

মলাট বৃত্তান্ত

Icon

মো. রায়হান কবির

প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

কথায় আছে মর্নিং শো’স দ্য ডে। অর্থাৎ সকাল দেখেই দিনের বাকি অংশ বোঝা যায়। আমাদের তিলোত্তমা নগরী ঢাকাকে ২০২৫-এ বসেই আন্দাজ করা যাচ্ছে ২০৫০-এ বিশ্বের এক নম্বর শহর হবে, তবে তা গুণে বা মানে নয়, জনগণের সংখ্যা বিচারে। জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুসারে ঢাকায় এখন ৩ কোটি ৬৬ লাখ লোক বাস করে। ঢাকার জনসংখ্যা যে হারে বাড়ছে, তাতে ২০৫০-এ ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তাকে সরিয়ে বিশ্বের ১ নম্বার জনবহুল শহর হবে ঢাকা! কিন্তু কেন এবং কিভাবে?

ঢাকায় এখন চায়ের দোকানের চেয়ে রাজনৈতিক দলের সংখ্যা বেশি। এসব দলে কর্মী যা-ই থাকুক না কেন, নেতা থাকে প্রচুর। ফলে এভাবে জনসংখ্যা বাড়বে। তাছাড়া আজকাল বড় বড় সমাবেশের সংখ্যা বাড়ছে, ফলে ‘ম্যান পাওয়ার’ সাপ্লাই শিল্পও ভালো করছে। দলগুলোর জন্য ‘ভাড়ায়’ খাটা কর্মীর সাপ্লাইয়ের জন্য যে স্টক লাগবে তার জন্যও ঢাকার ওপর চাপ বাড়বে।

অন্যদিকে যদিও এখন ঢাকায় প্রচুর পরিমাণে অটোরিকশা চালক আছেন, তবে নজরে না পরলেও জীবিকার তাগিদে টিকটক করে এরচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ। আর ঢাকার রাস্তার আনাচে-কানাচে প্রচুর কন্টেন্ট, এমনকি ঢাকার একটা ‘ড্রেন’ পরিষ্কার করতে থাকলেও টিকটকাররা সেখানে ভিড় জমায়। ড্রেন পরিষ্কারকারীর গলায় মাথায় ঝুলিয়ে দেয় ডিজিটাল মাইক্রোফোন! এমনকি ড্রেন পরিষ্কারের এ দৃশ্য ধারণ করা হয় ড্রোন দিয়ে, যাতে পাবলিক খায়। অন্যদিকে ২০৫০ সালে টিকটকের চেয়েও আকর্ষণীয় অ্যাপ থাকবে এটা ধরেই নেওয়া যায়, ফলে জীবিকার তাগিদে তখন হয়তো আরও বেশি বেশি কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ঢাকায় এসে হাজির হবে, ফলে জনগণ তো হু হু করে বাড়বেই।

তাছাড়া ঢাকায় আছে মধু। না, কাওরান বাজারের তরমুজ বিক্রেতার তরমুজের মধু না। কিংবা নিজস্ব খামারের খাটি মধুও না। এটা চাঁদার মধু! ২০৫০ সালে ঢাকার রাস্তায় অটোরিকশার চেহারা টেসলার ইলেক্ট্রিক গাড়ির মতো না হলেও আরও আধুনিক হবে। অন্তত সেখান থেকে চাঁদা তোলার মতো চেহারা পাবে সেটা ধরেই নেওয়া যায়। ফলে দেশের চতুর্দিক থেকে চাঁদাবাজের একটা ফোয়ারা ঢাকার দিকে ছুটবেই, কারণ এ মধু উপেক্ষা করা অসম্ভব। সুতরাং ঢাকার জনগণ হু হু করে বাড়বে। তাছাড়া চাঁদা তোলার আগের খাতগুলো তো থাকবেই!

সুতরাং ২০৫০-এর ঢাকা জনগণ দিয়ে ঢাকা থাকবে এটা বলাই বাহুল্য। তবে তা ঠেকানোর উপায়ও কিন্তু আছে। দেশের প্রতিটা ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকটক বা কন্টেন্ট ক্রিয়েটের ব্যবস্থা রাখতে হবে। জাতীয় ইস্যুগুলো ভাগ করে শুধু ঢাকায় নয়, প্রতিটি বিভাগে পর্যায়ক্রমে আয়োজন করতে হবে। যেমন, দেশের প্রতিটি বিভাগীয় প্রেস ক্লাব ঢাকার মতো জমজমাট করতে হবে। মোট কথা বিনোদন ঢাকার বাইরেও যদি ছড়িয়ে দেওয়া যায়, তবে কিছুটা হলেও জনগণ আসা ঠেকানো সম্ভব হবে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম