জীবন যদি এমন হতো
জান্নাতুল ফেরদৌস লাবণ্য
প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
মাঝে মাঝে ভাবি, আমাদের জীবন যদি ভারতীয় সিরিয়াল অথবা সিনেমার মতো হতো তাহলে কেমন হতো?
* ভাবি রান্না বসিয়ে কোথাও গেছে। সেই সুযোগে আমি গিয়ে ভাবির রান্না করা তরকারিতে বেশি করে মরিচের গুঁড়া মিশিয়ে দিয়ে চলে এলাম। আব্বু, ভাইয়া খেতে বসে বারবার পানি খাচ্ছে আর ভাবি অবাক হয়ে ভাবছে- আমি তো ঝাল কমই দিয়েছিলাম! আড়াল থেকে আমি ভিলেনের মতো হাসি দিচ্ছি।
* আমি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি। হঠাৎ কয়টা বখাটে ছেলে এসে আমাকে ‘সুন্দরী, আমাদের সঙ্গে চলো’ বলেই আমার ওড়না ধরে টানাটানি শুরু করেছে! সেই সময় আকাশ থেকে পড়ল আমার নায়ক! কয়টা ভ্যানগাড়ি উল্টে ফেলে, চুড়ির দোকান ভেঙে, ঠেলাওয়ালার ঠেলা উল্টে ফেলে তাদেরকে মেরে আধমরা করে আমাকে উদ্ধার করল। পুরো সময়টা আমি সুস্থভাবেই দাঁড়িয়ে ছিলাম। নায়ক আমার সামনে আসা মাত্র অজ্ঞান হয়ে তার গায়ে ঢলে পড়লাম।
* নায়কের সঙ্গে আমার আবার দেখা। রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আমি হঠাৎ উস্টা খেয়ে পড়েছি নায়কের গায়ে। তারপর চোখাচোখি, বাতাসে চুল ওড়াওড়ি!
* বাড়িতে আমি আমার পছন্দের কথা বলছি,‘আমি আসলে তোমাদের একটা কথা বলতে চাই, আমি একজনকে পছন্দ করি!’ মুহূর্তে আব্বুর মুখে ফোকাস-সাদাকালো ফিল্টার, ভাইয়ার মুখে ফোকাস-সাদাকালো ফিল্টার, ভাবির মুখে ফোকাস-সাদাকালো ফিল্টার! ব্যাকগ্রাউন্ডে মেঘ গর্জনের সাউন্ড।
* নায়কের সঙ্গে আমার সম্পর্কে বাড়ির লোক রাজি না। নায়ক আব্বুর সঙ্গে দেখা করতে এসেছে। আব্বু বলছে,‘আমরা খান বংশ! তুমি এইটা কী করে ভাবতে পারলে আমার মেয়ের সঙ্গে তুমি! আমার মেয়ের মাসিক হাত খরচ কত জান! তোমার সারা বছরের ইনকামের থেকেও বেশি!’ নায়ক বলছে,‘খান সাহেব, টাকা দিয়ে ভালোবাসা কেনা যায় না!’ ইত্যাদি।
* আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। বড়লোকের বডিবিল্ডার ছেলের সঙ্গে! বিয়ের কার্ডও ছাপা হয়ে গেছে। বিয়ের দিন বিয়ের শাড়ি-গয়না পরে আমি নায়কের সঙ্গে পালিয়ে গেলাম। আব্বু গুন্ডা পাঠালো। নায়ক তাদের ধোলাই করে দিল। অতঃপর আমার হাত ধরে টানতে টানতে আব্বুর কাছে নিয়ে গিয়ে আব্বুকে লেকচার দিল,‘কেমন বাবা আপনি? নিজের মেয়ের ভালোবাসা বোঝেন না!’
* নায়কের লেকচার শুনে আব্বুর মন নরম হল! বললেন,‘যাও, নিয়ে যাও তোমার ভালোবাসাকে!’ অতঃপর নায়ক-নায়িকার মধুর মিলন।
