|
ফলো করুন |
|
|---|---|
টেলিভিশনই পৃথিবীর একমাত্র বৈষম্যমূলক যন্ত্র, যেটা ছেলে-বুড়ো, শিশু-কিশোর সবার জন্যই অভিন্ন অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে। অথচ প্রয়োজন ছিল বিশেষায়িত টেলিভিশনের। ব্যক্তিভেদে সবাই যার যার চাহিদামতো চ্যানেলে দৃষ্টি দেবে। কেমন হতে পারে সেই কাঙ্ক্ষিত, চ্যানেলগুলো? দেখুন রূপরেখা-
বহুরূপী টেলিভিশন
শ্বেত চন্দনের সঙ্গে হলুদের গুঁড়ার মিশ্রণে সৃষ্টি হয় নতুন ধরনের ক্রিম; যা রং ফর্সায় বিশেষ কার্যকরী! কচি ধানের ‘হুং’ মুখে ঘষলে দূর হয়ে যায় সব ধরনের বলিরেখা! রূপচর্চার জন্য এমন সব সুন্দরীতমা-মার্কা আয়োজন যে টেলিভিশনে থাকবে সেটার টিআরপি বাড়ানোর জন্য বাড়তি কোনো প্রচেষ্টাই লাগবে না! ‘বহুরূপী টেলিভিশন’কে খুঁজে বের করবে বিজ্ঞাপনদাতারাই;
দলে দলে!
শিখে কী হবে টেলিভিশন
ছাত্র হয়েছি বাবা-মায়ের ইচ্ছায়-তাই বলে পড়াশোনা কেন! এমনই চিন্তা থাকে অধিকাংশ ফাঁকিবাজ শিক্ষার্থীর। বই সামনে রেখেও অভিভাবককে ফাঁকি দেওয়া যায়। কিছু না পড়েও শিক্ষকদের বোঝানো যায় জ্ঞানের গভীরতা! এমন বিষয়গুলোই শিখিয়ে দিক ‘শিখে কী হবে টেলিভিশন’! এতে পুরোনো সংলাপ ‘জানার কোনো শেষ নাই, জানার চেষ্টা বৃথা তাই’ নতুন করে আলোচনায় আসবে।
আমরা অদম্য টেলিভিশন
মাস্তানি হচ্ছে মূলত কৌশলের বিষয়। নিত্যনতুন উপায়ে যে মাস্তান উদ্ভাবন করতে পারে, সে-ই এগিয়ে যায় পেশায়। বর্তমানে চলছে আইডিয়া-খরা। ডিজিটাল হ্যাকার বাড়ায় মাস্তানির বাজারও মন্দা। এমন বন্ধ্যকালে মাস্তানবান্ধব টেলিভিশনই দিতে পারে সঠিক পথের দিশা! ‘আমরা অদম্য টেলিভিশন’ হয়ে উঠবে সন্ত্রাসী-মাস্তানদের নির্ভরযোগ্য পরামর্শক।
অলস টিভি
চাকরিজীবীদের অনেকেই আছেন অফিসে দিবানিদ্রা যেতে বিশেষ পছন্দ করেন। ‘অলস টিভি’ বাতলাতে পারে নতুন ধরনে নিদ্রাযাপনের তরিকা। অলস টিভি দেখে দেখে এবার যত পারুন অলস সময় কাটান।
ঘন পরিবহণ টেলিভিশন
যে নিয়মই করা হোক জিতব আমরাই- পরিবহণকর্মীরা বরাবরই এমন ধারণা পোষণ করে। বর্তমানেও সড়কপথে দেখা যাচ্ছে অভিন্ন নৈরাজ্যের। যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া আদায়ের কৌশল, যুক্তিতর্ক ও যুক্তিবিদ্যার ভ্রাম্যমাণ ক্লাস নেবে প্রত্যেক কন্ডাক্টর; ‘ঘন পরিবহণ টেলিভিশন’ ক্ষণে ক্ষণে দিয়ে যাবে তেমন নির্দেশনা!
হিরো-ইন টেলিভিশন
টেলিভিশনের নায়িকা হলে একরকম, সিনেমার হলে আরেক-এত বগিজগি কেন! স্থানভেদে কেন পোশাকের দৈর্ঘ্য পাল্টাবে! একজন নায়িকা একইসঙ্গে ছোট পর্দা ও বড় পর্দায় দাপিয়ে বেড়াবেন, এমনটা হয় না কেন! ‘হিরো-ইন টেলিভিশন’ দেবে সেই নিশ্চয়তা। কী ধরনের কাজ করলে একই সঙ্গে ঘরের ও বাইরের পর্দার দর্শক মনোরঞ্জন করা যাবে, ফি বছর পাওয়া যাবে শ্রেষ্ঠ নায়িকার শিরোপা!
হ-তে হকার টেলিভিশন
বাইছা লন ৪২০, দেইখা লন ১৮০-এমন সব স্লোগান দেওয়ার দিন ফুরিয়েছে। খাঁটি লবণের অভাবে গলার অবস্থাও ভালো না। ‘হ-তে হকার টেলিভিশন’ হাতে-কলমে শিখিয়ে দেবে কম কথায় কীভাবে কার্যসিদ্ধি করতে হয়। বিশেষ করে কোন সিজনে কী ধরনের পণ্য তুলতে হয়, ক্রেতার মনে চাহিদা সৃষ্টির মন্ত্রটাও বুনে দিতে হয়! এই টেলিভিশন যুগপৎ হকার ও ভোক্তাবান্ধব। ভোক্তার কখন কী প্রয়োজন, সেটাও বলে দেয় এই ধুর-দর্শনেই!
ভাইরাল টিভি
ফেসবুক, ইউটিউবের এ যুগে আজকাল সবাই ভাইরাল হতে চায়। ভাইরাল হয়ে হতে চায় রাতারাতি বিখ্যাত। তো ‘ভাইরাল টিভি’ এহেন লোকজনের জন্য হতে পারে নির্ভরযোগ্য ঠিকানা। কীভাবে ভাইরাল হতে হয়, কী করলে খুলে যেতে পারে ভাইরাল দুনিয়ার দরজা-এসব নানা অনুষ্ঠান দিয়ে ভাইরাল হতে ইচ্ছুক লোকজনকে এ টিভি দিতে পারে মুক্তির দিশা। তারা শিখবে এবং টপাটপ ভাইরাল হবে। আর শটকাটে হয়ে উঠবে বিখ্যাত অথবা কুখ্যাত!
