Logo
Logo
×

বিচ্ছু

মলাট বৃত্তান্ত

গাধায় গাধায় টক্কর

শুনলাম চিড়িয়াখানায় গাধার সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে? * চিড়িয়াখানার বাইরের সংখ্যাটাও কিন্তু কম না!

Icon

মো: রায়হান কবির

প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পত্রিকায় তো কত খবরই আসে। তার মধ্যে কিছু খবর দেখে চমকে যেতে হয়। এমনই এক খবরে চোখ আটকে গেল। দেশে নাকি গাধার সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে! আর তা এমন পর্যায়ে বেড়েছে, স্থান সংকুলান না হওয়ায় রীতিমতো গাধা বিক্রি করার কথা ভাবা হচ্ছে। অথচ আমরা জানি বাঙালি গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি ছাড়া তেমন কিছু পালে না। তাহলে গাধার আধিক্য এলো কোথা থেকে?

হ্যাঁ, যেখানে হওয়ার কথা সেখান থেকেই। মানে জাতীয় চিড়িয়াখানায় বেড়েই চলেছে গাধা। অথচ সেখানে সিংহ, বাঘ থেকে শুরু করে আরও অনেক প্রাণী আছে। কিন্তু তাদের টেক্কা দিয়ে এগিয়ে চলছে গাধা। এমনকি প্রাণিকুলের মধ্যে সবচেয়ে চতুর বা চালাক ধরা হয় যে শেয়ালকে, সেই শেয়ালও কিন্তু গাধার সঙ্গে টক্কর দিয়ে পারেনি। পারেনি শক্তিধর বাঘ কিংবা সিংহ। এমনকি বাঁদরামিতে সেরা বাঁদরও কিন্তু রেসে হেরে গেছে!

যারা চাকরি করে জীবন ধারণ করেন, তাদের অধিকাংশের অভিযোগ, অফিসে প্রমোশন বা বেতন বৃদ্ধিতে সব সময় গাধা শ্রেণির লোকরা প্রাধান্য পায়। এ বেলায় কেউ ভেবে বসবেন না, গাধা শ্রেণির লোকরা বেশ পরিশ্রমী মানে অরিজিনাল গাধার মতো! এ বেলায় বোঝান হয়েছে কাজ করার বা বোঝার দক্ষতার অভাবকে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে গাধা পরিশ্রমী প্রাণী হিসাবে বিবেচিত এবং ব্যবহৃত হলেও আমরা গাধাকে কোনোকালেই সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারিনি। গাধা এ দেশে সবচেয়ে অবহেলিত প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম। অথচ আফগানিস্তান, পাকিস্তান কিংবা অন্যান্য দেশেও বন্ধুর পথে গাধা অন্যতম বাহন হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে, এমনকি এখনো।

আর আমরা কোনোকালেই আসল গাধার সঠিক ব্যবহার করতে পারিনি। একটা সময় গুলিস্তান থেকে সদরঘাট ঘোড়ার গাড়ির ব্যাপক প্রচলন ছিল। এখন কমতে কমতে হাতেগোনা যায় এমন। নেই বললেই চলে। অথচ পুরান ঢাকার ঘিঞ্জি পথে মালপত্র বহনের জন্য আমরা গাধার সঠিক ব্যবহার করতে পারিনি।

যেমনি পারিনি জাতীয় পর্যায়ের অফিসিয়াল গাধাদেরও। এ দেশে গাধা শব্দটা পরিশ্রমী হিসাবে ব্যবহার হয় না! যেসব গাধারা ছোটখাটো ভুল পেলে মানুষকে হয়রানি করতে অভ্যস্ত তারা বিরাটা বিরাট ভুল থাকা সত্ত্বেও শুধু চিঠি লিখে দায় সারার কারণে রেস্তোরাঁয় প্রাণ হারাতে হয় অসংখ্য মানুষকে। তারা যদি চিঠি না লিখে অব্যবস্থাপনার দায়ে পুরো বিল্ডিং সিল করে দিত তাহলে হয়তো এতগুলো তাজা প্রাণ হারাতে হতো না। এভাবেই অনেক জায়গায় গাধাকাণ্ডের অসংখ্য উদাহরণ আছে। তাই দায়িত্ব অবহেলা করা গাধাদের উপযুক্ত ব্যবহার করার সময় এসেছে। যেসব গাধার কারণে মানুষের জান মালের ক্ষতি হয়, তাদের চিড়িয়াখানায় স্থানান্তর করে প্রাণী গাধাদের ঢাকার রাস্তায় ছেড়ে দিলে হয়তো গাধা সমস্যার সমাধান হতো। সমস্যা হলো এ দেশে গাদা গাদা গাধা! ফলে চিড়িয়াখানায় তখনো গাধার থাকার জায়গার সংকট হবে। সেক্ষেত্রে এসব গাধা রপ্তানি করে সংকটে থাকা বৈদেশিক মুদ্রা বাড়ানো যায় কিনা ভেবে দেখা যেতে পারে!

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম