Logo
Logo
×

বিচ্ছু

অন্তরঙ্গ সাক্ষাৎকারে চেয়ার

‘খুঁটির জোর না থাকলে চেয়ার মূল্যহীন’

যত কাণ্ড, অকাণ্ড, কুকাণ্ড তার বেশিরভাগই সংঘটিত হয় চেয়ার নিয়ে। চেয়ার এমন বস্তু প্রতিদিনই ঘরে-বাইরে এর বহুল ব্যবহার। অতি-চেনা, বহু আকাঙ্ক্ষার বস্তুটির সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আজন্ম চেয়ারলোভী

Icon

শফিক হাসান

প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

* চেয়ার ভাই, কেমন আছেন?

* শুরুতেই চান্দি গরম প্রশ্ন করলেন! চেয়ার কখনো ভাই হয়? যদি ভাই বানানই, বোনকেও রাখতে হবে। নইলে এটা হবে বৈষম্যমূলক আচরণ। চেয়ারের নিজস্ব কোনো ক্ষমতা নেই। চেয়ার কমন জেন্ডার। নারী বসলে চেয়ার আপা, পুরুষ বসলে চেয়ার ভাই। ক্ষমতার চেয়ার আছে, মমতার চেয়ার নাই। সমতার চেয়ারও নাই!

* পূর্বসূরিরা বলেছেন-সর্বস্তরে বাংলা চালু কর। অথচ আমরা কখনোই চেয়ারকে কেদারা বানাতে পারিনি। কেন?

* এ প্রশ্নের জবাব যদি আমিই দিই, দেশের বুদ্ধিজীবীরা কী করবে! যে দেশে কত কিছুর নাম জায়গায়-বেজায়গায় গিয়ে পালটে যেতে থাকে, সেখানে চেয়ারের দুইটা নাম থাকা কি বেশি কিছু? ভালো বাংলা না জানার কারণে লজ্জিত হয় না, অথচ দুই-চার বাক্য ইংরেজি বলতে পারলে অহংকারে মাটিতে পা পড়ে না; এরা কেদারার পরিবর্তে চেয়ারই বলবে-অস্বাভাবিক কী? বিনে বিদেশি ভাষা/ পুরে কি মনের আশা!

* কেদারা না হয় বুঝলাম, কিন্তু আরামকেদারা কী?

* সব কেদারাই মূলত আরামের। বসে বা হেলান দিয়ে শুয়ে আরাম পাওয়া যায় না, এমন চেয়ার একটাও নেই। তবে ক্ষমতার চেয়ারে বসার মজাই আলাদা। খুঁটির জোর নেই এমন চেয়ার মূল্যহীন। আবার সততার কারণে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা কামাতে পারে না-এমন লোককেও কেউ পোছে না। সততা ধুয়ে পানি খাওয়ার যুগ এটা নয়। বোতলজাত পানি প্রচলনের যুগে সততা ভীষণ সস্তা বস্তু।

* নওগাঁয় নাকি আপনাকে কেন্দ্র করে বিরাট কামড়াকামড়ি চলছে...?

* কলেজে অধ্যক্ষ থাকার পরও আরেকজন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের আবির্ভাব ঘটেছে-এটাই তো বলতে চান? এমন চর্চা কোন জায়গায় না হয়? এই যে আপনি কষ্ট করে বিচ্ছুর হয়ে আমার সাক্ষাৎকার নিতে এলেন চেয়ারের দাপট দেখিয়ে, বিভাগীয় সম্পাদক যদি এটা প্রকাশ না করেন-কিছু করতে পারবেন? সবার ওপরে চেয়ার সত্য। চেয়ার মানেই আরামদায়ক ঘুম! নিদ্রাকুসুম তেল ছাড়াই ঘরর...ঘরর... শান্তি!

* চেয়ার নিয়ে বিবদমান সব পক্ষকে কী করা যায়?

* বাংলা সিনেমার গানটা একটু রদবদল করে গাওয়াতে হবে। বিধি তুমি বলে দাও আমি কার/দুটি মানুষ একটি চেয়ারের দাবিদার...। পরে উন্মুক্ত মঞ্চে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা যেতে পারে। যিনি যত বেশি দরদ দিয়ে তুলনামূলক সুন্দরভাবে গানটা পরিবেশন করতে পারবেন তিনিই হবেন চেয়ারধারী। বিজয়ের পর অন্য কেউ চেয়ারের মালিকানা দাবি করলে এ পন্থায় ‘নির্বাচন’ হবে।

* চেয়ার নিয়ে অশ্রুত কথা কোনটি?

* চেয়ারে বসলেই কেউ চেয়ারম্যান হয়ে যায় না। নদী পার হলেই কেউ মাঝি নয়। যেহেতু পারাপারের জন্য নির্দিষ্ট মানুষ আছে।

* চেয়ারবিষয়ক ভালো কোনো কবিতা নেই কেন?

* সেটা তালুকদার কবি কিরণ্ময় কিমাংশু’র ব্যর্থতা হতে পারে। এমন পাওয়ারফুল একজন কবি, তারপরও চেয়ারের দিকে তাকাননি! সমকালীন বাংলা কবিতার অন্যতম মুরব্বি কবি হিসাবে তার উচিত চিয়ার্স... স্যরি চেয়ারের দিকে মনোযোগ বাড়ান।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম