আমরা সবাই ভাই ভাই মিলে মিশে তাবলিগে যাই
মেরাজুল ইসলাম
প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২০, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
মুসলমানদের শক্তি খর্ব করার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হল বিভাজন। আর এই বিভাজন সৃষ্টি করার জন্য সবচেয়ে ভয়ংকর পথ হচ্ছে ক্ষমতা, অর্থ এবং নারী, যাতে মুসলমানদের অর্থের লোভে, ক্ষমতার মোহে এবং নারীর প্রলোভনে ইমানি শক্তি থেকে দূরে এবং ঐক্য থেকে সরিয়ে রাখা যায়। কারণ ইসলাম ষড়যন্ত্রকারীরা কোরআন রিসার্চ করে কোরআন থেকে যা উপলব্ধি করতে পেরেছে; তা হল বিভাজন এবং এই বিভাজনের মাধ্যমেই মুসলমানদের দুর্বল করে গোলাম বানিয়ে রাখা যাবে। কারণ, আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন, তোমরা সবাই একসঙ্গে আল্লাহর রজ্জুকে সুদৃঢ় হস্তে আঁকড়িয়ে ধর (শোন) পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না (সূরা আল ইমরান, আয়াত-১০৩)। (বিচ্ছিন্ন হয়ো না, কেন জান? তাহলে ষড়যন্ত্রকারীরা তোমাদের দুর্বল পেয়ে তোমাদের ওপর চেপে বসবে, ফলে তোমরা অর্থাৎ মুমিনরা ইমান হারিয়ে ফেলতে পার)। এ আয়াত থেকে আরও বোঝা গেল, ঐক্য শক্তির মূলনীতি আর বিচ্ছিন্ন শক্তিকে দুর্বল করে। আফসোস! ষড়যন্ত্রকারীরা কোরআন রিসার্চ করে ঠিকই বুঝতে পারল, বিভাজনের মাধ্যমেই মুসলমানদের দুর্বল করে রাখা যাবে। কিন্তু আলেম সমাজ কোরআন রিসার্চ করে বুঝল না, ঐক্য মুসলমানদের ভিত শক্ত করে। তার কারণ কী? উত্তর : ক্ষমতা আর অর্থ। যার মোহে আলেম সমাজ আজ ঘোর বিভক্তিতে বিভক্ত। ঐক্য ছেড়ে বিভাজন হয়েছে। এখন কথা হল, ঐক্যের ফায়দা কী? আর বিচ্ছিন্নের ক্ষতি কী? শুধু কি আলেমরা কোরআন রিসার্চ করে? উত্তর : না। ষড়যন্ত্রকারীরা কোরআন রিসার্চ করে মুসলমানদের ক্ষতির দিকগুলো চিহ্নিত করে, অতঃপর মুসলমানদের পেছনে দাবা চালে। এরা উল্লিখিত আয়াতের মর্ম ভালো করে উপলব্ধি করতে পেরেছে বলেই ইসলামের শুরু থেকেই আজ পর্যন্ত এই বিভাজনের ষড়যন্ত্র করে আসছে। অথচ এদের মোকাবিলায় এখনও কোনো আলেম তৈরি হয়নি। যাদের সিনায় আর জবানে কোরআন চর্চা থাকে দিনে-রাতে। আমাকে কেউ যদি প্রশ্ন করে, আলেম সমাজ কতটা পিছিয়ে? উত্তরে আমি বলব, ইসলামের ষড়যন্ত্রকারীরা ষড়যন্ত্র করে যতটুকু অগ্রসর হয়েছে, আলেম সমাজ ততটুকু ষড়যন্ত্রের মোকাবিলা করে অগ্রসর হতে অন্তত ৫০ বছরের প্রয়োজন। তার কারণ কী? উত্তর : বিভাজন। সর্বশেষ ষড়যন্ত্রের বিভাজন তাবলিগ জামাত। কিন্তু কেন এই বিভাজন হল? কারা ষড়যন্ত্র করেছে? তার উত্তরণের উপায় কী? কী কারণে? কার মোহে পড়ে? এখন কী করলে জাতির মাঝে বিভেদ হবে না। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভাই ভাই একসঙ্গে তাবলিগ প্রচারে নিয়োজিত হবে সেই ফিকির না করে একটু মিডিয়ায় আর সড়কে কিংবা ময়দানে সাময়িক সমাবেশ করে মারামারিতে লিপ্ত হলে ষড়যন্ত্রকারীরা হাসবে না কাঁদবে ভেবে দেখুন! তারচেয়ে বেশি উপকার হবে যদি মূল সমস্যা সমাধানের ফিকির করা যায়।
লেখক : প্রাবন্ধিক
