নামাজের গুরুত্ব ও সৌন্দর্য
আবরার নাঈম
প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ইমানের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত নামাজ। কুরআনের বিরাশি জায়গায় নামাজের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কোথাও উল্লেখ করা হয়েছে নামাজ ত্যাগকারী জন্য কঠিন হুঁশিয়ারি আবার কোথাও উল্লেখ করা হয়েছে নামাজের প্রতি যত্নশীলদের প্রসংশা ও পুরস্কার। নামাজ হচ্ছে ইমান ও কুফরির মাঝে পার্থক্য সৃষ্টিকারী। হাদিস শরিফে রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, বুরায়দা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন : রাসূল (সা.) বলেছেন, আমাদের এবং কাফিরদের মধ্যে পার্থক্যকারী আমল হলো সালাত। যে সালাত ছেড়ে দিল সে কুফরি করল (সুনানে নাসায়ী, ৪৬৩)। অন্য হাদিসে হজরত জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত নবি (সা.) বলেছেন, কুফর ও ইমানের মধ্যে পার্থক্য হলো নামাজ ত্যাগ করা (তিরমিজি, ২৬১৮)।
নামাজ তরককারীরা সাক্বর নামক জাহান্নামে যাবে। কিয়ামত দিবসে বিচারকার্য সমাপ্ত হওয়ার পর নেককাররা জান্নাতে আর অপরাধীরা জাহান্নামে চলে যাবে। তখন জান্নাতিদের একে অপরকে অথবা ফেরেশতাদের অপরাধীদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবে। তারা অপরাধীরা কোথায়? তাদের দেখছি না যে। পরবর্তীতে জান্নাতিরা জানবে যে, তারা তাদের পাপের কারণে জাহান্নামে নিপতিত হয়েছে। জান্নাতিদের প্রশ্ন, কোন জিনিস তোমাদের জাহান্নামে প্রবেশ করাল? জাহান্নামিদের জবাব ‘আমরা নামাজ পড়তাম না’ (সূরা মুদ্দাসসির-৪২-৪৩)।
আমরা অনেকেই নামাজ পড়ি। অমনোযোগ, অলসতা ও গাফিলতির সঙ্গে। দেহ মসজিদে অন্তর বাইরে থাকে। ফলে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার পরও নানা অপরাধে লিপ্ত হই। কথা বা কাজে মানুষকে কষ্ট দেই। পরের হক আত্মসাৎ করি। মোটকথা নামাজ আমাদের কোনো ধরনের পাপ থেকে বিরত রাখে না। অথচ আল্লাহতায়ালা বলেন, নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীলতা ও মন্দকাজে বাধা প্রদান করে (সূরা আন কাবুত-৪৫)।
নামাজ যেহেতু পাপ কাজ থেকে আমাদের বিরত রাখতে পারছে না তাই প্রশ্ন হতে পারে কুরআন কি অসত্য? উত্তর হলো না। আল্লাহর কথা কি কখনো মিথ্যা হতে পারে। তাহলে নিশ্চিত ধরে নিতে হবে যে, আল্লাহতায়ালা যেভাবে নামাজ পড়তে বলেছেন আমাদের নামাজটাই সেভাবে হচ্ছে না। কারণ যারা অলসতা ও গাফিলতির সঙ্গে নামাজ পড়ে তাদের সম্পর্কে কুরআনে এসেছে কঠিন ধমকি ও হুঁশিয়ারি। আল্লাহতায়ালা বলেন-অতএব, দুর্ভোগ সেই নামাজিদের জন্য, যারা নিজেদের নামাজ সম্বন্ধে উদাসীন (সূরা মাঊন-৪-৫)।
আর যারা নিজেদের নামাজের প্রতি যত্নবান। যারা নামাজকে মনে করে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত এবং সে অনুযায়ী নামাজ পড়ে তারাই প্রকৃতপক্ষে সফলকাম। তাদের সফলতার সার্টিফিকেট আল্লাহতায়ালা দিয়েছেন। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছ-নিশ্চয়ই সফলকাম হয়েছে মুমিনরা। যারা নিজেদের নামাজে বিনয়াবনত (সূরা মুমিনুন-১-২)। দ্বিতীয় আয়াতে খুশু-এর অর্থ হলো কারও সামনে ভয়-ভীতির কারণে স্থির ও বিনীত হওয়া। এ জন্যই ইবনে আব্বাস (রা.) খুশুর তাফসির করেছেন খায়িফুন ও সাকিনুন শব্দ দ্বারা। অর্থ হলো ভীত ও স্থির। অর্থাৎ আল্লাহতায়ালার সামনে সম্পূর্ণ বিনয় ও একাগ্রতার সহিত দাঁড়ানো।
