ঐতিহ্যে ইসলাম
২৩০ বছরের আজগর আলী মসজিদ
মুহাম্মাদ রাহাতুল ইসলাম
প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ঐতিহাসিকদের মতামত বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, হিজরি প্রথম শতকেই ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলামের আগমন ঘটে। পরবর্তীতে খ্রিষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীতে ভারতবর্ষে ইসলামি শাসন শুরু হয় মুহাম্মদ বিন কাসিমের সিন্ধু জয়ের মাধ্যমে। আরব্য ব্যবসায়ীদের যাতায়াতের ফলে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর সুপ্রসিদ্ধ হয়ে ওঠে। বাগদাদ, বসরাসহ আরব বণিকরা এ এলাকায় প্রায়ই সফর করতেন। বণিক ছাড়াও বহু সুফি দরবেশ আসেন এ অঞ্চলে। এখানে বসতি স্থাপন করেন তাদের অনেকেই। এসব পির-বুজুর্গ ও ধর্ম প্রচারক মনীষীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের বদৌলতে ইসলামের সুমহান বাণী ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। গড়ে ওঠে অসংখ্য মসজিদ মাদ্রাসা ও বিশাল বিশাল স্থাপনা। বারো আউলিয়ার পুণ্যভূমিখ্যাত চট্টগ্রামে এমন অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক স্মৃতিচিহ্ন রয়েছে যেগুলোর বয়স ২০০ থেকে ৭০০ বছরেরও বেশি। যদিও অযত্নে অবহেলায় পুরোনো ঐতিহ্যের এসব স্মারক হারিয়ে যাওয়ার পথে।
মোগল আমলের তৈরি এমনই এক মসজিদের নাম-চট্টগ্রামের উত্তর হালিশহরের চৌধুরীপাড়ায় অবস্থিত আজগর আলী চৌধুরী জামে মসজিদ। নগরীর আগ্রাবাদ থেকে আনুমানিক ৭-৮ কিলোমিটার দূরে হালিশহরের চৌধুরীপাড়া। ১৭৯৫ সালে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম নকশা আর চুন-সুরকির দৃষ্টিনন্দন সংমিশ্রণে নির্মাণ করা হয় ‘আজগর আলী চৌধুরী জামে মসজিদ’। মসজিদটি নির্মাণ করেন হালিশহরের সম্ভ্রান্ত চৌধুরী পরিবারের প্রয়াত আজগর আলী চৌধুরী।
ভারতের তাজমহলের আদলে নির্মিত আজগর আলী মসজিদটির সামনেই রয়েছে পুকুর, পাশেই কবরস্থান। এ ছাড়া মসজিদের ছাদে রয়েছে বড় তিনটি গম্বুজ ও বেশ কয়েকটি মিনার। মসজিদের দেওয়ালে পোড়ামাটির বিভিন্ন কারুকাজে নির্মিত নানা রকম নকশা যা দর্শনার্থীদের নজর কাড়ে। দেশ-বিদেশের অসংখ্য মানুষ ছুটে আসেন হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যের এ নিদর্শন দেখতে। বর্তমানে আজগর আলী চৌধুরীর উত্তরসূরিরাই মসজিদটির দেখাশোনা করছেন। তবে মসজিদটিতে এখন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় বন্ধ রয়েছে। ঐতিহ্য ধরে রাখতে মসজিদ ভবনটি অক্ষুণ্ন রেখে পাশে গড়ে তোলা হয়েছে নতুন একটি মসজিদ।
