Logo
Logo
×

ইসলাম ও জীবন

সূরা ইখলাসের ফজিলত

Icon

সফিউল্লাহ

প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

কিছু ইহুদি নেতা রাসূল (সা.)-এর কাছে এসে বলল, তুমি আমাদের তোমার রব সম্পর্কে বলত-তার কিছু বিবরণ দাও। আল্লাহতায়ালা তাওরাতে তার পরিচয় তুলে ধরেছেন এবং কতিপয় গুণাবলি বর্ণনা করেছেন। সুতরাং তুমি আমাদের বল, তিনি কিসের তৈরি? কোন শ্রেণিভুক্ত তিনি? তিনি কি স্বর্ণ না রৌপ্য নাকি তাম্র? তিনি কি খাবার ও পানীয় গ্রহণ করেন? পৃথিবীর উত্তরাধিকার তিনি কার থেকে পেয়েছেন আর তার উত্তরাধিকারীই বা হবে কে? এর জবাবে আল্লাহতায়ালা সূরা ইখলাস নাজিল করেছেন। (তাফসিরে ইবনে কাসির)।

ফজিলত ও মর্যাদাপূর্ণ সূরা ইখলাস। এ সূরাকে যে ভালোবাসে আল্লাহও তাকে ভালোবাসেন। ‘আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত। একবার নবি (সা.) এক ব্যক্তিকে একটি সেনাদলের সেনাপতি করে পাঠালেন। সে তার সঙ্গীদের সালাত আদায় করাত এবং ‘কুল হুওয়াল্ল-হু আহাদ’ দিয়ে সালাত শেষ করত। তারা মদিনায় ফেরার পর নবি (সা.)-এর কাছে এ কথা উল্লেখ করেন। তিনি (সা.) বললেন, তাকে জিজ্ঞেস কর কি কারণে সে তা করে। সে বলল, এর কারণ এতে আল্লাহর গুণাবলির উল্লেখ রয়েছে। আর আমি আল্লাহর গুণাবলি পড়তে ভালোবাসি। তার উত্তর শুনে নবি (সা.) বললেন, তাকে জানিয়ে দাও, আল্লাহতায়ালাও তাকে ভালোবাসেন। (সহিহ বোখারি, হাদিস-৭৩৭৫)।

সূরা ইখলাস ছোট একটি সূরা। সবার জন্য পড়া সহজ। কিন্তু সওয়াবের দিক থেকে তুলনাহীন। একবার পড়লে কুরআনের এক তৃতীয়াংশ তেলাওয়াতের সওয়াব লাভ হয়। আবু সাঈদ খুদরী (রা.) বলেন, নবিজি বলেছেন-তোমাদের প্রত্যেকেই কি প্রতি রাতে কুরআনের এক তৃতীয়াংশ তেলাওয়াত করতে পারে না? বিষয়টি সাহাবিদের কাছে কঠিন মনে হয়েছে। তাই তারা বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের মধ্যে কে আছে, যে তা পারবে? নবি (সা.) বললেন, আমলটি সহজ কেননা, সূরা ইখলাসই কুরআন মজিদের এক তৃতীয়াংশ। (সহিহ বোখারি, হাদিস-৫০১৬)।

আবুল হাসান মুহাজির (রা.) বলেন, জনৈক সাহাবি বর্ণনা করেছেন, তিনি রাসূল (সা.)-এর সঙ্গে এক সফরে ছিলেন। একদিন তার কাছে এমনভাবে বসা ছিলেন যে, তার হাঁটু দুটি নবিজির হাঁটুদ্বয়ের সঙ্গে লেগে ছিল। এ অবস্থায় এক লোককে সূরা কাফিরুন তেলাওয়াত করতে শুনলেন, তা শুনে নবি (সা.) বললেন, সে শিরক থেকে পবিত্র হয়ে গেছে। আরেক লোককে শুনলেন, সূরা ইখলাস তেলাওয়াত করছে। তখন তিনি বললেন, তাকে মাফ করে দেওয়া হয়েছে। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস ২৩২০৬)।

আল্লাহর ভালোবাসা ও নেয়ামতে ভরপুর জান্নাতের প্রসাদ পেতে নিয়মিত সূরা ইখলাসের আমল করা জরুরি। নেয়ামতে ভরপুর জান্নাতের অট্টালিকা পেতে সূরা ইখলাসের আমল অতীব জরুরি। রাসূল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি সূরা ইখলাস দশবার পড়বে তার জন্য জান্নাতে একটি অট্টালিকা নির্মাণ করা হবে। যে বিশবার পড়বে তার জন্য দুটি অট্টালিকা তৈরি করা হবে। আর যে ত্রিশবার পড়বে তার জন্য তিনটি অট্টালিকা প্রস্তুত করা হবে। নবিজির এ কথা শুনে উমর ইবনে খাত্তাব (রা.) বললেন, তাহলে তো আমরা অনেক অট্টালিকার মালিক হয়ে যাব। রাসূল (সা.) বললেন, আল্লাহতায়ালার দান এর চেয়ে আরও প্রশস্ত। (সুনানে দারেমী, হাদিস-৩৪৭২)। আল্লাহতায়ালা আমাদের সূরা ইখলাস বেশি বেশি পড়ার তাওফিক দান করুন, আমিন!

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম