Logo
Logo
×

ইসলাম ও জীবন

আখেরাতে নামাজের হিসাব আগে

Icon

মিজান ইবনে মোবারক

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

নামাজ ইসলামের পঞ্চম রোকনের দ্বিতীয় রোকন। দ্বীন ও ইসলামের ভিত্তি। কুরআনে আল্লাহতায়ালা অসংখ্য স্থানে নামাজের নির্দেশ দিয়েছেন। অসংখ্য হাদিসে নামাজের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। নামাজ এমন একটি ফরজ ইবাদত, যার কোনো বিকল্প নেই। একজন অসুস্থ বা মুসাফির ব্যক্তি রোজা না রেখে পরেও রাখতে পারে। একেবারে অক্ষম হলে ফিদিয়া বা কাফফারা দিতে পারে। কিন্তু নামাজের ক্ষেত্রে সে বিধান নেই। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর নামাজ ফরজ। কোনো ওজর না থাকলে পূর্ণ নিয়মানুযায়ী দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করতে হবে। তা না হলে বসে, তাও সম্ভব না হলে শুয়ে, তাও যদি সম্ভবপর না হয় তাহলে ইশারায় নামাজ আদায় করতে হবে। কাপড় না থাকলে বিবস্ত্র অবস্থায় নামাজ আদায় করতে হবে। কিন্তু তবুও নামাজ পরিত্যাগের সুযোগ নেই। হ্যাঁ, একান্ত ওজরের কারণে শরিয়তের পক্ষ থেকে ব্যক্তিবিশেষের প্রতি শিথিলতা প্রদর্শন করা হয়েছে। যেমন-মহিলাদের মাসিক ঋতুস্রাবের দিনগুলোতে এবং সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরবর্তী সর্বোচ্চ চল্লিশ দিন পর্যন্ত আল্লাহতায়ালা তাদেরকে নামাজ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।

যে ব্যক্তি নামাজকে হেফাজত করে, এ নামাজ কিয়ামতের দিন তার জন্য নুর হবে, দলিল হবে এবং নাজাতের কারণ হবে। যে ব্যক্তি ঠিকভাবে নামাজ আদায় করে না, তার জন্য কিয়ামতের দিন নামাজ নুর হবে না, দলিল হবে না এবং নাজাতের উপায়ও হবে না। আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘তোমরা নামাজের প্রতি যত্নবান হও, বিশেষ করে মধ্যবর্তী নামাজের প্রতি এবং আল্লাহর সামনে বিনীতভাবে দণ্ডায়মান হও’ (সূরা বাকারা : ২৩৮)। নামাজ হলো আল্লাহতায়ালা ও বান্দার মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের বিশেষ মাধ্যম। বান্দা নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহতায়ালার সম্মান এবং তার আনুগত্য পালনার্থে স্বীয় সম্মানিত অঙ্গগুলো আল্লাহতায়ালার সামনে ঝুঁকায়। এর দ্বারা বান্দা মহামহীয়ান আল্লাহতায়ালার সামনে নিজেকে তুচ্ছ জ্ঞান করার পাশাপাশি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী মহান প্রভুর দাসত্বের প্রকাশ ঘটে। নামাজ মুমিনের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। নামাজের প্রতি রয়েছে তাদের অপরিসীম গুরুত্ব। নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘ইমান ও কুফরের ব্যবধান হলো সালাত (নামাজ) পরিত্যাগ করা।’ (তিরমিজি : ২৬১৯)। বুরায়দা (রা.) থেকে বর্ণিত; রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘(মুনাফিকদের জান-মাল রক্ষার জন্য) তাদের ও আমাদের মাঝে চুক্তির শর্ত হলো সালাত (নামাজ)। যে ব্যক্তি সালাত (নামাজ) পরিত্যাগ করল সে কুফরি করল’ (তিরমিজি : ২৬২২)।

অন্য এক হাদিসে এসেছে, কিয়ামতের দিন বান্দার আমলের মধ্যে প্রথম হিসাব নেওয়া হবে নামাজের। যদি তা সঠিক বলে গণ্য হয়, তবে সে হবে কল্যাণপ্রাপ্ত ও সফলকাম। আর যদি তা সঠিক বলে গণ্য না হয়, তবে সে হবে ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত। ফরজের মধ্যে যদি কোনো ত্রুটি দেখা যায়, তাহলে আল্লাহতায়ালা বলবেন, ‘লক্ষ কর, আমার বান্দার কোনো নফল আমল আছে কিনা? তা দিয়ে তার ফরজের যতটুকু ত্রুটি আছে তা পূরণ করে দাও। অতঃপর এমনই হবে তার অন্যান্য আমলের অবস্থা’ (তিরমিজি : ৪১৩)।

কেবল মুনাফিক, ফাসেক ব্যক্তিরাই নামাজে অলসতা করে এবং নামাজ ত্যাগ করার মতো দুঃসাহস করে। যে ব্যক্তি নামাজ নষ্ট করে, সে তার দ্বীন নষ্ট করে এবং নিজেকে ধ্বংসের মুখে পতিত করে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয়ই মুনাফিকরা আল্লাহকে ধোঁকা দেয়। আর তিনি তাদের ধোঁকায় ফেলেন। আর যখন তারা নামাজে দাঁড়ায় তখন অলসভাবে দাঁড়ায়, তারা লোকদের দেখায় এবং তারা আল্লাহকে কমই স্মরণ করে’ (সূরা নিসা : ১৪২)।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম