Logo
Logo
×

লাইফ স্টাইল

গ্রেড–২ ফ্যাটি লিভার কি ভালো হয়? যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

Icon

লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:১৯ পিএম

গ্রেড–২ ফ্যাটি লিভার কি ভালো হয়? যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

ছবি: সংগৃহীত

লিভার মানবদেহের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা ডিটক্সিফিকেশন, মেটাবলিজম, হজম, রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ এবং পুষ্টি সংরক্ষণসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, স্থূলতা ও ডায়াবেটিসের হার বৃদ্ধির কারণে ফ্যাটি লিভার রোগ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে।

ফ্যাটি লিভার সাধারণত তিনটি গ্রেডে ভাগ করা হয়। যেখানে গ্রেড–১ এ হালকা চর্বি জমা দেখা যায়, সেখানে গ্রেড–২ নির্দেশ করে মাঝারি মাত্রার চর্বি জমা—যা সময়মতো নিয়ন্ত্রণে না আনলে গুরুতর লিভার ক্ষতির দিকে অগ্রসর হতে পারে। পরবর্তী ধাপে তা ফাইব্রোসিস বা সিরোসিস পর্যন্ত গড়াতে পারে।

গ্রেড–২ ফ্যাটি লিভার

গ্রেড–২ ফ্যাটি লিভার মানে লিভারের উল্লেখযোগ্য অংশে চর্বি জমে গেছে। এ অবস্থাটি সাধারণত স্থূলতা, দীর্ঘদিনের ডায়াবেটিস, অস্বাভাবিক লিপিড লেভেল বা অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে সম্পর্কিত। 

বিশেষজ্ঞরা বলেন, গ্রেড–২ ফ্যাটি লিভারে লিভারে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে চর্বি জমে। দীর্ঘদিন ফ্যাট জমে থাকলে এক বা দুই দশকের মধ্যে সিরোসিস বা লিভার ফেলিওরের ঝুঁকি তৈরি হয়।

গ্রেড–২ ফ্যাটি লিভারের কারণ

  • স্থূলতা
  • শারীরিক পরিশ্রমের অভাব
  • অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
  • ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স
  • অ্যালকোহল গ্রহণ
  • কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ
  • জিনগত প্রবণতা

গ্রেড–২ ফ্যাটি লিভার কি উল্টানো সম্ভব?

বিশেষজ্ঞদের মতে, উপযুক্ত সময়ে চিকিৎসা শুরু করলে গ্রেড–২ ফ্যাটি লিভার সম্পূর্ণ উল্টানো সম্ভব। 

ড. মাদান বলেন, এ নিয়ে অতিরিক্ত উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। প্রাথমিক পর্যায়ে ৯৫%–৯৯% রোগীই সঠিক চিকিৎসা ও জীবনযাপনের পরিবর্তনে এই অবস্থা উল্টাতে পারেন।

তিনি আরও বলেন, ফ্যাটি লিভার মূলত অতিরিক্ত চর্বি জমার কারণে হয়। তাই শরীর থেকে চর্বি কমানোর দিকেই জোর দিতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম, কম ক্যালোরির এবং উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাদ্য গ্রহণ ফ্যাট কমাতে ও পেশি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। চিনি, ক্যালোরি ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট কমিয়ে দিতে হবে। পাশাপাশি কফি লিভারকে সুরক্ষা দিতে পারে—এটি গবেষণায় প্রমাণিত।

চিকিৎসকদের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ

  • নিয়মিত ব্যায়াম
  • উচ্চ প্রোটিন, কম ক্যালোরি ও কম চিনি–তৈলজাত খাদ্য
  • পর্যাপ্ত পানি পান
  • অ্যালকোহল এড়িয়ে চলা
  • ওজন কমানো
  • ডায়াবেটিস ও কোলেস্টেরলের নিয়ন্ত্রণ

কখন চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে

ফ্যাটি লিভার সাধারণত নীরব রোগ—অধিকাংশ সময়ই লক্ষণ প্রকাশ পায় দেরিতে। তাই রিপোর্টে ফ্যাটি লিভার ধরা পড়লে দ্রুত পরীক্ষা করা জরুরি।

ড. মাদান বলেন, ফ্যাটি লিভার ধরা পড়লে লিভার ফাংশন টেস্ট (রক্ত পরীক্ষা) এবং ফাইব্রোস্ক্যান করানো উচিত। এতে লিভারে কতটা চর্বি জমেছে ও কতটা ক্ষতি হয়েছে তা বোঝা যায়।

তার মতে, সময়মতো রোগ শনাক্ত করে চিকিৎসা নিলে বেশিরভাগ রোগীই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যেতে পারেন।

গ্রেড–২ ফ্যাটি লিভার কোনও স্থায়ী রোগ নয়—সঠিক জীবনযাপন, নিয়মিত ব্যায়াম, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললে এটি উল্টানো সম্ভব। তাই ঝুঁকি থাকলে এখনই সচেতন হওয়া প্রয়োজন।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম