জেলে যাব, দেশ ছেড়ে পালাব না: ওবায়দুল কাদের

 যুগান্তর প্রতিবেদন 
০৫ নভেম্বর ২০২২, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

আওয়ামী লীগের পালানোর ইতিহাস নেই জানিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পালানোর ইতিহাস বিএনপির নেতাদের। আমাদের কেউ পালিয়ে যায়নি। আওয়ামী লীগ ছয় দফা আন্দোলন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা মোকাবিলা করেছে। বঙ্গবন্ধু বলেছেন, ‘এই দেশেতে জন্ম আমরা এই দেশেতে মরব।’ আমাদের জন্ম এই দেশে আমরা এই দেশেই মরব। জেলে যাব, কিন্তু পালানোর পথ খুঁজব না। এই দেশ থেকে পালাব না।

শুক্রবার রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপকমিটির চতুর্থ শিল্পবিপ্লব নিয়ে আন্তর্জাতিক সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, মুচলেকা দিয়ে আর রাজনীতি করব না বলে দেশ থেকে সুদূর লন্ডনে পালিয়ে গেছে আপনাদের নেতা, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। পালানোর ইতিহাস তো আপনাদের, আমরা যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করব। বঙ্গবন্ধুর সৈনিকরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা আমাদের আদর্শ, এজেন্ডা ও কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে যাব।

ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী কী প্রতিহিংসার রাজনীতি করবে? বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রতিহিংসার রাজনীতি শুরু করেছে। প্রতিহিংসা তো তাদের, যারা একাত্তরের প্রতিশোধ নিতে পঁচাত্তর ঘটিয়েছে, পনেরোই আগস্ট ঘটিয়েছিল যারা তারাই প্রতিহিংসাপরায়ণ। তাদের থেকে প্রতিহিংসা কার বেশি? তিনি আরও বলেন, ৩ নভেম্বর গেল। জেলের মধ্যে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছিল। প্রতিহিংসাপরায়ণ তো তারা। শেখ হাসিনাকে প্রাইম টার্গেট করে যারা ২১ আগস্ট ঘটিয়েছিল, তাদের চেয়ে প্রতিহিংসাপরায়ণ বাংলাদেশে আর কে? আজকে সত্য বলতেই হবে।

আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপির আন্দোলনে বাধা দেবে না জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী আন্দোলনের বিরুদ্ধে বলেননি। তিনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বলেছেন, বিরোধী দল আন্দোলন করছে, বাধা দেবে না। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না এবং হবেও না। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আমরা মেনে আন্দোলন করতে দিচ্ছি। এখন এখানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আন্দোলনের নামে বাড়াবাড়ি করছেন, আপনাদের নেত্রীকে তো আপনারা জেল থেকে মুক্ত করেননি। খালেদা জিয়ার নামে কে মামলা করেছে? তত্ত্বাবধায়ক সরকার কার লোক? বেগম জিয়ার লোক। তারা মামলা দিয়েছে। আসলে তারা লাফায় কেন সেটাও তো বুঝি না। তাদের দুই প্রধান নেতাই দণ্ডিত আসামি। একজন মুচলেকা দিয়ে জীবনেও রাজনীতি করবে না বলে কাপুরুষের মতো দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।

বাস মালিকরা আগুন সন্ত্রাসের ভয়ে বাস বন্ধ করলে আওয়ামী লীগ সরকারের কী করার আছে-এমন প্রশ্ন রেখে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী বলেন, বাস মালিকরা বাস বন্ধ করে দিয়েছে, সেখানে আমাদের কী করার আছে? ২০১৩-১৪ সালে বিএনপি সারা দেশে যে আগুন সন্ত্রাস করেছে সেজন্য বাস মালিকরা বাস বন্ধ রেখেছে, এখানে আমাদের কী করার আছে। আমরা তো আন্দোলনে বাধা দিচ্ছি না।

স্বাগত বক্তব্যে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর বলেন, ২০ ক্যাটাগরিতে ৬৬২টি পেপার ও পোস্টার জমা পড়েছে। শুধু বাংলাদেশের গবেষকরা নন, ইউরোপ, আমেরিকা, ইন্ডিয়া, জাপান, চীন, অস্ট্রেলিয়া থেকেও গবেষকরা শতাধিক পেপার জমা দিয়েছেন। এখান থেকে প্রায় ২৫০টি পেপার উপস্থাপন করা হবে।

উপকমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. হোসেন মনসুরের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। কনফারেন্সের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে যাত্রা এবং ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়ন।’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর আইইবি অডিটোরিয়ামে কনফারেন্সের প্রথম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, দ্বিতীয় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন থাইল্যান্ডের এআইটির বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রফেসর ড. জয়শ্রী রায়। এছাড়া আলাদা আলাদা ১০টি ভেন্যুতে টেকনিক্যাল সেশন অনুষ্ঠিত হয়।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন