
ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনমুক্ত হয়ে ধর্মের ভিত্তিতে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়। একটি ভারত এবং অন্যটি পাকিস্তান। স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যতবার যুদ্ধ হয়েছে তার বেশিরভাগই ঘটেছে কাশ্মীরকে ঘিরে। দেশভাগের কয়েক মাস পরেই প্রথম সংঘাতের সূচনা হয়েছিল।
পরে ১৯৪৯ সালে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় কাশ্মীরকে দুই ভাগে বিভক্ত করে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে। এরপর ১৯৬৫ সালে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ভারতশাসিত কাশ্মীরে প্রবেশ করলে পুরোদস্তর যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। তার কয়েক বছর পর ১৯৭১ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে স্বাধীনতা যুদ্ধকে ঘিরে সংঘাতের আঁচ পড়ে ভারতেও। দীর্ঘ বিরতি দিয়ে ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানি সেনারা পুনরায় ভারত শাসিত জম্মু কাশ্মীরে অনুপ্রবেশ করলে সংঘর্ষ শুরু হয়; যা কার্গিল যুদ্ধ নামে পরিচিত।
পরবর্তীতে ২০১৬ সালে উরি সেনাঘাঁটিতে হামলার জবাবে ভারত পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ চালায়। ২০১৯ সালে পুলওয়ামায় আত্মঘাতী বোমা হামলার পর বালাকোটে বিমান হামলা চালায় ভারত, যার পাল্টা জবাবে পাকিস্তানও বিমান হামলা করে।
গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ পর্যটক নিহত হন। এ ঘটনায় পাকিস্তানকে দোষারোপ করে ভারত। এ নিয়ে দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে ০৭ মে মধ্যরাতে ‘অপারেশন সিঁদুর’র অভিযানে পাকিস্তানের ৬ শহরের ৯ টার্গেটের ২১ স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। পালটা প্রতিশোধে ১০ মে ভোররাতে ‘বুনইয়ানুম মারসুস’ নামে ভারতের সামরিক স্থাপনায় সমন্বিত ও পরিকল্পিত হামলা চালায় পাকিস্তান। হামলা-পাল্টা হামলায় উভয় দেশেরই অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ১০ মে বিকাল ৫টা থেকে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। তবে সংঘাতের এই কয়েক দিনে যে ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে, তা দুই দেশের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় অধ্যায় হিসাবে থেকে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকরা।