পেটের দায়ে পথে পথে গাজার শিশুরা
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
পরিবারের জন্য খাবার নিয়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিনি শিশু। শনিবার দেইর আল-বালাহ অঞ্চলে -এএফপি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার রাস্তায় থার্মোস হাতে হাঁটছে কিশোর মোহাম্মদ আশুর। পথচারীদের কাছে এক কাপ কফি বিক্রির জন্য সারা দিন দাঁড়িয়ে থাকে সে। রাস্তার এ মাথা থেকে ও মাথা পর্যন্ত ছুটে বেড়ায়। ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। ঘরে খাবার নেই। পেটে দানাপানি নেই। আলজাজিরা।
১৫ বছরের মোহাম্মদ এখন স্কুলে সহপাঠীদের সঙ্গে থাকার কথা। কিন্তু ইসরাইলের হামলায় বাবা নিহত হওয়ার পর তাকে পড়াশোনা ছেড়ে এই বয়সেই হাল ধরতে হয়েছে সংসারের। পরিবারের প্রধান উপার্জনকারীর ভূমিকা নিতে হয়েছে। এই গল্প শুধু মোহাম্মদের নয়, বরং গাজার প্রতিটি গলিতেই মিলবে এমন কিশোর। পেটের দায়ে পথে পথে শ্রম দিচ্ছে গাজার এমন হাজারো শিশুর। এ দৃশ্য এখন গাজার নিত্যদিনের।
দুই বছরেরও (৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে) বেশি সময় ধরে চলা ইসরাইলের নৃশংস হামলায় গাজার অন্তত ৩৯ হাজার শিশু এতিম হয়ে গেছে। কেউ শুধু মা অথবা বাবা; কেউ হারিয়েছে দুজনকেই! বিধ্বস্ত অর্থনীতিতে এখন আট বছরের শিশুরাও পরিবারের জন্য কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। হারাচ্ছে শিক্ষা ও শৈশব। মোহাম্মদের মা আতাদ আশুর জানালেন, ‘ছেলের পড়াশোনা বন্ধ হওয়া তাদের নিজের ইচ্ছা নয়। ওর বাবা নিহত হওয়ার পর আমাদের আর কোনো আয় ছিল না। ও এখনো শিশু। পরিস্থিতিই আমাদের এদিকে ঠেলে দিয়েছে।’ জাতিসংঘ শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) মুখপাত্র টেস ইংগ্রাম বলেন, ‘আমরা দেখছি, শিশুরা আবর্জনার স্তূপে কাঠের টুকরো খুঁজে বেড়াচ্ছে বিক্রি করার জন্য। কেউ আবার কফি বিক্রি করছে।’ রামাল্লা থেকে সেভ দ্য চিলড্রেনের গাজা মানবিক সহায়তা পরিচালক রাচেল কামিংস বলেন, যুদ্ধ পরিবার কাঠামো ভেঙে দিয়েছে। ফলে শিশুদের ভাইবোন বা বৃদ্ধ সদস্যদের দেখভালের দায়িত্ব নিতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘গাজার পরিবার ব্যবস্থা পুরোই বিপর্যস্ত। শিশুরা সবচেয়ে অসহায়’। সেভ দ্য চিলড্রেনের তথ্য অনুযায়ী-অবরুদ্ধ গাজার ৬ লাখ ৬০ হাজারের বেশি শিশু এখন শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। এছাড়াও প্রায় ১ লাখ ৩২ হাজার শিশু চরম অপুষ্টিতে ভুগছে।
