Logo
Logo
×

খবর

ইয়ুথ সম্মেলনে ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ

শিক্ষার পচন শুধু কমিশন করে রোধ সম্ভব নয়

জনগণের সম্মতি ছাড়া কোনো উদ্যোগই বেশিদূর এগোতে পারে না-হোসেন জিল্লুর

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা এত খারাপ অবস্থায় যে, কেবল কয়েকজন বিশেষজ্ঞ দিয়ে একটি শিক্ষা কমিশন বানালেই সমস্যার সমাধান করা যাবে না। শিক্ষায় এত পচন ধরেছে যে, মৌলিক জায়গায় আগে ঠিকঠাক না করলে কমিশন করে কোনো সমাধান সম্ভব নয়। বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে তরুণদের নিয়ে আয়োজিত ‘ইউথ পারসপেকটিভস অন স্যোশাল প্রগ্রেস : গ্রাসরুটস, নেটওয়ার্কস অ্যান্ড লিডারশিপ ভয়েসেস’ শীর্ষক সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) সম্মেলনের আয়োজন করে।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘আমরা যখন দায়িত্ব নিয়েছিলাম তখন ৫৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অভিভাবকবিহীন ছিল। শিক্ষা কমিশন এগুলো ঠিক করতে পারত না। কয়েকজন মানুষকে ওপরে বসিয়ে শিক্ষা ভালো করতে বলাটা তাদের জন্যও বিব্রতকর হতো।’

এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে তিনটি শিক্ষা কমিশন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ওই রিপোর্টগুলোতে অনেক ভালো সুপারিশ আছে। সেগুলো না মেনে নতুন কমিশন কেন করতে হবে?’

পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, ‘বর্তমানে তরুণদের মধ্যে এক ধরনের মানসিক অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। এর কারণ জুলাই আন্দোলনে নৃশংস দৃশ্য ও স্বজনদের মৃত্যু। যারা আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন, তারা দেশের জন্য কিছু করতে চাইছেন। তবে ঠিক কীভাবে করবেন, তা বুঝে উঠতে পারছেন না। সেক্ষেত্রে প্রবীণদের সহযোগিতা প্রয়োজন।’

তিনি বলেন, ‘অস্থিরতার একটি নেতিবাচক দিক হলো দাবি আদায়ে মহাসড়ক অবরোধ। আর ইতিবাচক দিক হলো আগের আন্দোলনগুলোর সময়কার গাড়ি ভাঙচুরের সংস্কৃতি বিদায় নিয়েছে। তবে অবরোধ থেকে গেছে।’ উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যায় এখন বয়সের দিক থেকে তরুণদের সংখ্যা অনেক বেশি; যা এক ধরনের ‘ইয়ুথ পাওয়ার’ সৃষ্টি করেছে। এ সুযোগ ১৫ বছর ধরে শুরু হয়েছে এবং আগামী আরও ১৫ বছর থেকে ২ দশকের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। এ সময়ের মধ্যে তরুণদের নিজেদের গড়ে তোলার পাশাপাশি দেশকে গড়ে তুলতে হবে।’

সম্মেলনে আয়োজক সংস্থার নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘জনগণের সম্মতি ছাড়া কোনো উদ্যোগই বেশিদূর এগোতে পারে না। গণতন্ত্র চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, জনগণকে সেটা মেনে নিতে হবে। কারণ জনগণই সমাজের সর্বশেষ অভিভাবক। গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে হলে নাগরিকদের সক্রিয় হতে হবে। নাগরিকদের সক্রিয়তা ছাড়া, চর্চা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। হতাশা আসতে পারে, কিন্তু সমস্যা থাকা সত্ত্বেও পরিবর্তন করা সম্ভব-এ আত্মবিশ্বাস বজায় রাখা ও পরিবর্তনের জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি।

তিনি বলেন, তরুণদের কথা শোনা ও তাদের আকাঙ্ক্ষাগুলোকে বোঝার চেষ্টা করতে হবে। তরুণরা কীভাবে সমাজে সম্পৃক্ত হচ্ছেন, সমাজের পরিবর্তনগুলোর কোন কোন দিকে তারা গুরুত্ব দিচ্ছেন, সেই প্রক্রিয়ায় তারা কীভাবে অংশগ্রহণ করবেন-সেই বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলতে হবে। ২৪-এর আন্দোলনের পর যে পরিবর্তন হয়েছে, সেখানে ‘ইনক্লুসিভিটি অ্যান্ড জাস্টিস’ ও ‘কালেক্টিভ অ্যাকশন’ হচ্ছে মূল কথা। সমাজে একটি শুভ পরিবর্তন আনতে এবং বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করতে হলে কেবল তরুণ নয়, সব প্রজন্মের ভূমিকা জরুরি।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম