থাইরয়েডকে অসংক্রামক রোগ ঘোষণার দাবি

 যুগান্তর প্রতিবেদন 
২৭ মে ২০২৪, ০২:১০ এএম  |  অনলাইন সংস্করণ

থাইরয়েড সমস্যাজনিত রোগগুলো অসংক্রামক, অর্থাৎ থাইরয়েড রোগাক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসলেই কেউ এতে আক্রান্ত হয় না। এটি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। বর্তমান বিশ্বে মোট মৃত্যুর ৭০ শতাংশই হচ্ছে অসংক্রামক রোগে। অন্যদিকে বিশ্বে ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন মানুষ থাইরয়েড আক্রান্তের ঝুঁকিতে রয়েছে। এর পরও থাইরয়েডকে অসংক্রামক রোগ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে না। এমন বাস্তবতায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচিত থাইরয়েডকে নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ বা অসংক্রামক রোগ ঘোষণা দেওয়া। তাছাড়া বিশ্ব থাইরয়েড দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘থাইরয়েড গ্রন্থির রোগসমূহ সংক্রামক ব্যাধি নয়’।

বিশ্ব থাইরয়েড দিবসÑ২০২৪ উপলক্ষ্যে রোববার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) আয়োজিত এক সায়েন্টিফিক সেমিনারে বিশেষজ্ঞরা এ কথা বলেন। এর আগে সকালে বাংলাদেশ থাইরয়েড সোসাইটির (বিটিএস) উদ্যোগে বিএসএমএমইউ’র ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড অ্যালাইড সাইন্সেস (নিনমাস) ক্যাম্পাসে সচেতনমূলক শোভাযাত্রা আয়োজন করা হয়। বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নুরুল হক শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন। দুপুরে নিনমাসের অধ্যাপক ডা. কামালউদ্দিন আহমেদ মিলনায়তনে বিটিএস সভাপতি অধ্যাপক ডা. ফওজিয়া মোসলেমের সভাপতিত্বে বৈজ্ঞানিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বিটিএস সহসভাপতি অধ্যাপক ডা. মিজানুল হাসান, অধ্যাপক ডা. বেলায়েত হোসেন সিদ্দিকী, অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান তালুকদার, মহাসচিব অধ্যাপক ডা. ফরিদুল আলম, নিনমাসের পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফাতিমা বেগম, যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক ডা. এ কে এম ফজলুল বারী, নিনমাসের থাইরয়েড বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. আবু বক্কর সিদ্দিকি প্রমুখ।

সেমিনারে ‘থাইরয়েডগ্রন্থির রোগসমূহ সংক্রামক ব্যাধি নয়’ শীর্ষক বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিটিএস’র বৈজ্ঞানিক সম্পাদক অধ্যাপক ডা. নাসরিন সুলতানা। সেমিনারে বিশেষজ্ঞরা বলেন, বিশ্বে মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ১০ শতাংশ অর্থাৎ ৭১ কোটির বেশি মানুষ থাইরয়েডগ্রন্থির রোগে আক্রান্ত। বাংলাদেশে এই সংখ্যা প্রায় ৫ কোটি। রোগীদের ৮০ ভাগ থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতিজনিত হাইপোথাইরয়েডিজমে ভুগছে। নবজাতক এবং বাড়ন্ত শিশুরাও এই রোগে আক্রান্ত হয়। প্রতিবছর ২ হাজার ৩০০ নবজাতকের মধ্যে এক শিশু জš§গত হাইপোথাইরয়েডিজমে আক্রান্ত। থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি হলে শিশুদের শারীরিক এবং মানসিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করলে বৃদ্ধিবৃত্তির বিকাশ স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হাইপারহাইরয়েডিজম, থাইরয়েড গ্রন্থির প্রদাহ থাইরয়েড ক্যানসার এবং গলগণ্ড রোগ হতে পারে। সাব-ক্লিনিকাল হাইপোথাইরয়েডিজম সাধারণত চিকিৎসায় সম্পূর্ণ ভালো হয় না। এজন্য সমন্বিত চিকিৎসা দরকার হয়।

বিটিএস’র যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক ডা. একেএম ফজলুল বারী বলেন, থাইরয়েড অসংক্রামক হলেও রোগটির বিস্তারে বংশগতির প্রভাব রয়েছে। পরিবারের কারও থাইরয়েড হলে তার সন্তানদের ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে রোগটি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। থাইরয়েড প্রতিরোধে সচেতনতা তৈরির পাশাপাশি সবাইকে স্ক্রিনিংয়ের আওতায় আনা জরুরি।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন