jugantor
যবিপ্রবি ছাত্র রিয়াদ হত্যাকাণ্ড
ছাত্রলীগ নেতার হুমকির অডিও নিয়ে তোলপাড়

  যশোর ব্যুরো, ১৭ সেপ্টেম্বর  

১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ১৯:২৫:৪৯  | 

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) ছাত্র নাইমুল ইসলাম রিয়াদ হত্যাকাণ্ডের আগে হুমকির একটি অডিও রেকর্ডিং ক্লিপের কথপোকথন ফাঁস হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল মোবাইল ফোনে নাইমুল ইসলাম রিয়াদকে হুমকি দেন। সেটি মোবাইল ফোনে রেকর্ড করা হয়েছিলো। সম্প্রতি সেই রেকর্ডিং রিয়াদের সহপাঠীদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে। এক মিনিট উনচল্লিশ সেকেন্ডের অডিও রেকর্ডিং ক্লিপটি এখন পুলিশ, গণমাধ্যম কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে। অডিও ক্লিপ শুনে চলছে সমালোচনার ঝড়।
নাইমুল ইসলাম রিয়াদের পিতা কাজী মনিরুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, অডিওতে যে কণ্ঠস্বর শোনা যাচ্ছে, সেটি নাইমুল ইসলাম রিয়াদ ও আনোয়ার হোসেন বিপুলের আমরা নিশ্চিত। হত্যাকাণ্ডের আগে কোন একদি রিয়াদকে মোবাইল ফোনে হুমকি দেয়া হয়। হত্যকাণ্ডের পর রিয়াদের বন্ধুদের কাছ থেকে অডিও রেকর্ড উদ্ধার করেছি।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটির বিপক্ষে অবস্থান নেয়ায় তাকে হুমকি দেয়া হয়েছিলো বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। অডিও রেকর্ডের সূত্র ধরেই পুলিশ তদন্ত করছে বলে জানা গেছে। অডিও রেকর্ডিং হুবহু নিচে তুলে ধরা হলো:
বিপুল: কি করলা জানো না। আমি বলছি, তোমাদের সবগুলোরে হাড়হাড্ডি ভেঙে সব বাড়ি পাঠিয়ে দেব। ঠিক আছে না। তোমাদের পড়ার সাধ মিটিয়ে দিবানে।
......(মুখ খিস্তি) ফিরে চলার জায়গা পাওনা তাইনা? এই সোহাগ ভাই রাজু ভাই কমিটিতে এসে এই কমিটি তোরা মানিস নে, তোদের এত বড় সাহস দিল কিডারে ?
রিয়াদ:ভাই আমরা তো- সেক্রেটারি ভাই...(কথা থামিয়ে দেন নেতা)।
আনোয়ার হোসেন বিপুল:: এই তোরা মানিস নে তো আবার সাংবাদিক সম্মেলন করছিস, একেক জনের হুমকি দিচ্ছিস। কালকের থেকে ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে যাবি। তোদের কোন বাপ ক্যাম্পাসে ঢুকোয় কাল থেকে আমি দেখে নেব। আমি ঢাকায় ছিলাম....।
রিয়াদ: ভাই ভাই.....(কথা থামিয়ে দেন নেতা)।
আনোয়ার হোসেন বিপুল:: এই আমি যেইডে বলব সেইডে শোন, তুই কোনো কথা বলবি নে। তুই শুধু শুনবি। এই তোদের ভিসি ঠেকাতে পারবে ? তোদের ভিসির চেয়ার থাকবে ? ফাজলামি পাইছো তাইনা। কালকের থেকে হল ছেড়ে দিবি। যতদিন পর্যন্ত আমি তোদের না বলব ততদিন পর্যন্ত তুই ক্যাম্পাসে আসবিনে। কাল সকালে যেন আমি দেখি তুই হল ছেড়ে দিয়ে বাড়ি চলে গেছিস। আর তা না হলে তুই কিন্তু হসপিটালে ভর্তি হবি। আমি স্টেইট বলে দিচ্ছি। কথাটা মনে রাখিস। কাল সকাল ১০ টার মধ্যি ক্যাম্পাস ছেড়ে দিবি। তোর হলের থেকে সব গুছিয়ে নিয়ে ভিসিরে জানিয়ে দিবি বিপুল ভাই বলেছে, সকাল ১০ টার মধ্যে আমার ক্যাম্পাস ছাড়তে। পারলি ভিসিরে বলিস যে, তোর ঠেকাতে ঠিক আছে? আর ভিসির সাথে সংস্পর্শে যদি থাকিস তুই হসপিটালে ভর্তি হবি কথাটা মনে রাখিস।
রিয়াদ: ভাই এবার আমি একটা কথা....(কথা থামিয়ে দেয়া হয়)।
আনোয়ার হোসেন বিপুল:১০ টার মধ্যে চলে যাবি। তোর কোন কথা আমি শোনবো না।
রিয়াদ: ভাই আমি দুই মিনিট কথা বলব।
বিপুল: তোদের আর কোন কথা শোনবো না। অনেক বুঝাইছি, তোদের আর বোঝাবো না। আমি তোর এক মিনিট কথা শোনবো না। এটা আমার শেষ কথা...(এই বলে সংযোগ কেটে দেন নেতা)।
রিয়াদ: ভাই ভাই....(এরপর আর কোন কথা শোনা যায়নি)।
ছাত্রলীগের ইফতার মাহফিলে উপস্থিত না হওয়ার জের ধরে গত ১৪ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ফটকের সামনে নাইমুল ইসলাম রিয়াদকে হত্যা করা হয়। এরপর দিন রিয়াদেও মামা বাদী হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সুব্রত বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক এসএম শামীম হাসান, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুলসহ ৮ ছাত্রলীগ নেতাসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ ও আরও দুইজনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করা হয়। গত দুই মাসে মামলার অগ্রগতি না হওয়ায় ১০ সেপ্টেম্বর সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়েছে।
যশোর পুলিশের মুখপাত্র সহকারী পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন জানান, সবকিছু মিলিয়ে সিআইডি মামলাটি তদন্ত করছে।
সাবমিট
যবিপ্রবি ছাত্র রিয়াদ হত্যাকাণ্ড

ছাত্রলীগ নেতার হুমকির অডিও নিয়ে তোলপাড়

 যশোর ব্যুরো, ১৭ সেপ্টেম্বর 
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ০৭:২৫ পিএম  | 
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) ছাত্র নাইমুল ইসলাম রিয়াদ হত্যাকাণ্ডের আগে হুমকির একটি অডিও রেকর্ডিং ক্লিপের কথপোকথন ফাঁস হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল মোবাইল ফোনে নাইমুল ইসলাম রিয়াদকে হুমকি দেন। সেটি মোবাইল ফোনে রেকর্ড করা হয়েছিলো। সম্প্রতি সেই রেকর্ডিং রিয়াদের সহপাঠীদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে। এক মিনিট উনচল্লিশ সেকেন্ডের অডিও রেকর্ডিং ক্লিপটি এখন পুলিশ, গণমাধ্যম কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে। অডিও ক্লিপ শুনে চলছে সমালোচনার ঝড়।
নাইমুল ইসলাম রিয়াদের পিতা কাজী মনিরুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, অডিওতে যে কণ্ঠস্বর শোনা যাচ্ছে, সেটি নাইমুল ইসলাম রিয়াদ ও আনোয়ার হোসেন বিপুলের আমরা নিশ্চিত। হত্যাকাণ্ডের আগে কোন একদি রিয়াদকে মোবাইল ফোনে হুমকি দেয়া হয়। হত্যকাণ্ডের পর রিয়াদের বন্ধুদের কাছ থেকে অডিও রেকর্ড উদ্ধার করেছি।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটির বিপক্ষে অবস্থান নেয়ায় তাকে হুমকি দেয়া হয়েছিলো বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। অডিও রেকর্ডের সূত্র ধরেই পুলিশ তদন্ত করছে বলে জানা গেছে। অডিও রেকর্ডিং হুবহু নিচে তুলে ধরা হলো:
বিপুল: কি করলা জানো না। আমি বলছি, তোমাদের সবগুলোরে হাড়হাড্ডি ভেঙে সব বাড়ি পাঠিয়ে দেব। ঠিক আছে না। তোমাদের পড়ার সাধ মিটিয়ে দিবানে।
......(মুখ খিস্তি) ফিরে চলার জায়গা পাওনা তাইনা? এই সোহাগ ভাই রাজু ভাই কমিটিতে এসে এই কমিটি তোরা মানিস নে, তোদের এত বড় সাহস দিল কিডারে ?
রিয়াদ:ভাই আমরা তো- সেক্রেটারি ভাই...(কথা থামিয়ে দেন নেতা)।
আনোয়ার হোসেন বিপুল:: এই তোরা মানিস নে তো আবার সাংবাদিক সম্মেলন করছিস, একেক জনের হুমকি দিচ্ছিস। কালকের থেকে ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে যাবি। তোদের কোন বাপ ক্যাম্পাসে ঢুকোয় কাল থেকে আমি দেখে নেব। আমি ঢাকায় ছিলাম....।
রিয়াদ: ভাই ভাই.....(কথা থামিয়ে দেন নেতা)।
আনোয়ার হোসেন বিপুল:: এই আমি যেইডে বলব সেইডে শোন, তুই কোনো কথা বলবি নে। তুই শুধু শুনবি। এই তোদের ভিসি ঠেকাতে পারবে ? তোদের ভিসির চেয়ার থাকবে ? ফাজলামি পাইছো তাইনা। কালকের থেকে হল ছেড়ে দিবি। যতদিন পর্যন্ত আমি তোদের না বলব ততদিন পর্যন্ত তুই ক্যাম্পাসে আসবিনে। কাল সকালে যেন আমি দেখি তুই হল ছেড়ে দিয়ে বাড়ি চলে গেছিস। আর তা না হলে তুই কিন্তু হসপিটালে ভর্তি হবি। আমি স্টেইট বলে দিচ্ছি। কথাটা মনে রাখিস। কাল সকাল ১০ টার মধ্যি ক্যাম্পাস ছেড়ে দিবি। তোর হলের থেকে সব গুছিয়ে নিয়ে ভিসিরে জানিয়ে দিবি বিপুল ভাই বলেছে, সকাল ১০ টার মধ্যে আমার ক্যাম্পাস ছাড়তে। পারলি ভিসিরে বলিস যে, তোর ঠেকাতে ঠিক আছে? আর ভিসির সাথে সংস্পর্শে যদি থাকিস তুই হসপিটালে ভর্তি হবি কথাটা মনে রাখিস।
রিয়াদ: ভাই এবার আমি একটা কথা....(কথা থামিয়ে দেয়া হয়)।
আনোয়ার হোসেন বিপুল:১০ টার মধ্যে চলে যাবি। তোর কোন কথা আমি শোনবো না।
রিয়াদ: ভাই আমি দুই মিনিট কথা বলব।
বিপুল: তোদের আর কোন কথা শোনবো না। অনেক বুঝাইছি, তোদের আর বোঝাবো না। আমি তোর এক মিনিট কথা শোনবো না। এটা আমার শেষ কথা...(এই বলে সংযোগ কেটে দেন নেতা)।
রিয়াদ: ভাই ভাই....(এরপর আর কোন কথা শোনা যায়নি)।
ছাত্রলীগের ইফতার মাহফিলে উপস্থিত না হওয়ার জের ধরে গত ১৪ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ফটকের সামনে নাইমুল ইসলাম রিয়াদকে হত্যা করা হয়। এরপর দিন রিয়াদেও মামা বাদী হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সুব্রত বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক এসএম শামীম হাসান, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুলসহ ৮ ছাত্রলীগ নেতাসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ ও আরও দুইজনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করা হয়। গত দুই মাসে মামলার অগ্রগতি না হওয়ায় ১০ সেপ্টেম্বর সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়েছে।
যশোর পুলিশের মুখপাত্র সহকারী পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন জানান, সবকিছু মিলিয়ে সিআইডি মামলাটি তদন্ত করছে।

 
শনি
রোব
সোম
মঙ্গল
বুধ
বৃহ
শুক্র