কমিটি গঠন নিয়ে দ্বন্দ্ব
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
১৭ অক্টোবর ২০১৪, ০০:০০:০০ |
গোপালগঞ্জে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতিসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। ছাত্রলীগের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার সময় স্থানীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ সংঘর্ষ হয়। পুলিশ ১০ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহতদের মধ্যে ৩ জনকে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন- জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুল হামিদ (২৬), বনি ভুইয়া (২৪) ও মাসুদ রানা (২৩)। আহত জেলা যুবলীগের সদস্য নিজাম উদ্দিন খান ও অপর আহতরা বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা একটি মিছিল নিয়ে শহরের প্রেস ক্লাবের সামনে এসে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে। এ সময় তারা ছাত্রলীগের সদর উপজেলা, শহর ও কলেজ কমিটি বাতিলের দাবিসহ নেতাদের বিরুদ্ধে অগঠনতান্ত্রিক কার্যকলাপের অভিযোগ তুলে সোগান দেয়। একই সময় সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ ক্যাম্পাস থেকে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আবদুল হামিদের নেতৃত্বে আরেকটি মিছিল শহর প্রদক্ষিণ শেষে পোস্ট অফিস মোড় ঘুরে প্রেস ক্লাবের সামনে এসে শো-ডাউন দিতে গেলে দু’গ্র“প মুখোমুখি অবস্থান নেয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে দু’গ্র“প সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় তারা লাঠিসোঁটা নিয়ে একে অপরের উপর আক্রমণ, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দও শোনা যায় সেখানে। শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক, পোস্টঅফিস মোড় ও প্রেস ক্লাবের সামনেসহ ৩-৪টি পয়েন্টে বিক্ষিপ্তভাবে এ সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় ১ ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আবদুল হামিদসহ অন্তত ২৫ জন আহত হন। পুলিশ ১০ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়ে সংঘর্ষকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বেশ কিছুদিন ধরে ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ে কমিটি গঠন নিয়ে নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এর জের ধরে কয়েকদিন আগে এক গ্র“প অপর গ্র“পের বিরুদ্ধে শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও শো-ডাউন করে। সম্প্রতি ছাত্রলীগের সদর উপজেলা, শহর ও কলেজ কমিটি ঘোষণার পর এ দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রূপ নেয়। ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি রেয়াজুল ইসলাম প্রিন্স বলেন, আমরা জেলা ছাত্রলীগের অধিকাংশ নেতাকর্মী নতুন আহ্বায়ক কমিটি সম্পর্কে কিছুই জানি না। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাদের নিজেদের ইচ্ছা মাফিক সম্মেলন না করে সম্পূর্ণ গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কমিটি ঘোষণা করায় আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এর প্রতিবাদ করেছি। আমরা ওই কমিটি বাতিল দাবি করছি।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেছেন, গঠনতন্ত্র মেনে নিয়মমাফিক সবার মতামতের ভিত্তিতে কমিটি গঠিত হয়েছে।
এদিকে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে শহরে টান-টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোনো সময় সংঘর্ষের আশংকা করছে সাধারণ মানুষ। গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মোল্লা জাকির হোসেন বলেন, পরিস্থিতি এখন শান্ত। শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কেউ আইন না মানলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
কমিটি গঠন নিয়ে দ্বন্দ্ব
গোপালগঞ্জে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে আহত ২৫
গোপালগঞ্জে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতিসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। ছাত্রলীগের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার সময় স্থানীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ সংঘর্ষ হয়। পুলিশ ১০ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহতদের মধ্যে ৩ জনকে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন- জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুল হামিদ (২৬), বনি ভুইয়া (২৪) ও মাসুদ রানা (২৩)। আহত জেলা যুবলীগের সদস্য নিজাম উদ্দিন খান ও অপর আহতরা বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা একটি মিছিল নিয়ে শহরের প্রেস ক্লাবের সামনে এসে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে। এ সময় তারা ছাত্রলীগের সদর উপজেলা, শহর ও কলেজ কমিটি বাতিলের দাবিসহ নেতাদের বিরুদ্ধে অগঠনতান্ত্রিক কার্যকলাপের অভিযোগ তুলে সোগান দেয়। একই সময় সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ ক্যাম্পাস থেকে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আবদুল হামিদের নেতৃত্বে আরেকটি মিছিল শহর প্রদক্ষিণ শেষে পোস্ট অফিস মোড় ঘুরে প্রেস ক্লাবের সামনে এসে শো-ডাউন দিতে গেলে দু’গ্র“প মুখোমুখি অবস্থান নেয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে দু’গ্র“প সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় তারা লাঠিসোঁটা নিয়ে একে অপরের উপর আক্রমণ, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দও শোনা যায় সেখানে। শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক, পোস্টঅফিস মোড় ও প্রেস ক্লাবের সামনেসহ ৩-৪টি পয়েন্টে বিক্ষিপ্তভাবে এ সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় ১ ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আবদুল হামিদসহ অন্তত ২৫ জন আহত হন। পুলিশ ১০ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়ে সংঘর্ষকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বেশ কিছুদিন ধরে ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ে কমিটি গঠন নিয়ে নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এর জের ধরে কয়েকদিন আগে এক গ্র“প অপর গ্র“পের বিরুদ্ধে শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও শো-ডাউন করে। সম্প্রতি ছাত্রলীগের সদর উপজেলা, শহর ও কলেজ কমিটি ঘোষণার পর এ দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রূপ নেয়। ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি রেয়াজুল ইসলাম প্রিন্স বলেন, আমরা জেলা ছাত্রলীগের অধিকাংশ নেতাকর্মী নতুন আহ্বায়ক কমিটি সম্পর্কে কিছুই জানি না। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাদের নিজেদের ইচ্ছা মাফিক সম্মেলন না করে সম্পূর্ণ গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কমিটি ঘোষণা করায় আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এর প্রতিবাদ করেছি। আমরা ওই কমিটি বাতিল দাবি করছি।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেছেন, গঠনতন্ত্র মেনে নিয়মমাফিক সবার মতামতের ভিত্তিতে কমিটি গঠিত হয়েছে।
এদিকে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে শহরে টান-টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোনো সময় সংঘর্ষের আশংকা করছে সাধারণ মানুষ। গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মোল্লা জাকির হোসেন বলেন, পরিস্থিতি এখন শান্ত। শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কেউ আইন না মানলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।