jugantor
ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে রূপগঞ্জ রণক্ষেত্র
অবরোধ ভাংচুর আহত ৫

  রূপগঞ্জ প্রতিনিধি  

১১ সেপ্টেম্বর ২০১৩, ০০:০০:০০  | 

রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি ভেঙে দেয়ার জের ধরে ছাত্রলীগের বিক্ষোভে অচল হয়ে উঠেছে পুরো উপজেলা। মঙ্গলবার দুপুরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপজেলার ঢাকা-সিলেট এবং এশিয়ান হাইওয়ে মহাসড়কসহ স্থানীয় কাঞ্চন সেতু ও রূপগঞ্জ ফেরীতে অবস্থান নিয়ে তা বন্ধ করে দেয়। সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে টায়ারে অগ্নিসংযোগ করাকালে পুলিশ বাধা দিলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটে। পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হয় ছাত্রলীগের ৫ কর্মী। পরে ঘটনাস্থল থেকে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতিসহ ৩ জনকে পুলিশ আটক করলে ছাত্রলীগ কর্মীরা ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আটক নেতাদের মুক্তি দেয় পুলিশ। ছাত্রলীগের অবরোধের কারণে ২ মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়কে হাজার হাজার যানবাহন আটক থাকে। বিকাল ৩টার দিকে তারা এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের কালাদি এলাকায় দুই শতাধিক যানবাহন ভাংচুর করে। মঙ্গলবার বেলা ১১ থেকে অবরোধের সূত্রপাত ঘটে এবং এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা বহাল রয়েছে। পুলিশ, ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত সোমবার কেন্দ ীয় ছাত্রলীগের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে রূপগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের পুরনো কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মঙ্গলবার দুপুর ১১টার দিকে পুরনো কমিটির নেতাকর্মী ও তাদের অনুসারীরা কাঞ্চন সেতু এলাকায় জড়ো হয়ে এশিয়ান হাইওয়ে মহাসড়ক বন্ধ করে দেয়। পরে তারা দুপুর ১২টার দিকে গোলাকান্দাইল এলাকার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে টায়ারে অগ্নিসংযোগ করে মহাসড়কটি বন্ধ করে দেয়। একই সময় ছাত্রলীগের কর্মীরা সুলতানা কামাল সেতু ও রূপগঞ্জ ফেরি অবরোধ করে। দুপুর দেড়টার দিকে পুলিশ তাদের মহাসড়ক থেকে ওঠে যেতে বললে পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর বেধড়ক লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পুলিশের লাঠিচার্জে বাবু, শফিউল্লাহ, আসাদ, সুমন ও রাজু নামে ছাত্রলীগের ৫ কর্মী আহত হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুম চৌধুরী অপু, ভুলতা ইউনিয়নের সভাপতি হানজালা, সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহকে আটক করে। ছাত্রলীগ নেতাদের আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার নেতাকর্মীরা আবার ভুলতায় জড়ো হয়ে আটককৃতদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য ভুলতা ফাঁড়ির সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে । পরে নেতাকর্মীদের চাপের মুখে পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয়। মুক্তি পাওয়ার পর তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভুলতা এলাকায় মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকে। এ সময় তারা স্থানীয় এমপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেয়।

এদিকে বিকাল ৩টার দিকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কাঞ্চন, গোলাকান্দাইল, টেংরারটেক এলাকায় দুই শতাধিক গাড়ি ভাংচুর করে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

এ ব্যাপারে পুরনো কমিটির সভাপতি মাসুম চৌধুরী অপু বলেন, যেসব অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ড হচ্ছে তা নিরসন না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাব। নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান সজিব বলেন, সম্পূর্ণ গঠনতান্ত্রিক মোতাবেক ও কেন্দ ীয় ছাত্রলীগের অনুমোদনক্রমেই কমিটি হয়েছে।

একাধিক সূত্র জানায়, পুরনো কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে হত্যা, খুন, অসামাজিক কার্যকলাপের একাধিক মামলা রয়েছে।

রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান মীর বলেন, ছাত্রলীগের ছেলেরা কমিটি ভাঙ্গার ঘটনা রাস্তায় নেমে এসেছে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে। দুই শতাধিক গাড়ি ভাংচুর হয়নি। তবে কিছু গাড়ি ভাংচুর হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতীক) বলেন, বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে পুরনো কমিটি ভেঙে দিয়ে দক্ষ ও পরিশ্রমী এবং সাংগঠনিক ছেলে দিয়ে নতুন কমিটি করা হয়েছে।


 

সাবমিট

ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে রূপগঞ্জ রণক্ষেত্র

অবরোধ ভাংচুর আহত ৫
 রূপগঞ্জ প্রতিনিধি 
১১ সেপ্টেম্বর ২০১৩, ১২:০০ এএম  | 

রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি ভেঙে দেয়ার জের ধরে ছাত্রলীগের বিক্ষোভে অচল হয়ে উঠেছে পুরো উপজেলা। মঙ্গলবার দুপুরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপজেলার ঢাকা-সিলেট এবং এশিয়ান হাইওয়ে মহাসড়কসহ স্থানীয় কাঞ্চন সেতু ও রূপগঞ্জ ফেরীতে অবস্থান নিয়ে তা বন্ধ করে দেয়। সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে টায়ারে অগ্নিসংযোগ করাকালে পুলিশ বাধা দিলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটে। পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হয় ছাত্রলীগের ৫ কর্মী। পরে ঘটনাস্থল থেকে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতিসহ ৩ জনকে পুলিশ আটক করলে ছাত্রলীগ কর্মীরা ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আটক নেতাদের মুক্তি দেয় পুলিশ। ছাত্রলীগের অবরোধের কারণে ২ মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়কে হাজার হাজার যানবাহন আটক থাকে। বিকাল ৩টার দিকে তারা এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের কালাদি এলাকায় দুই শতাধিক যানবাহন ভাংচুর করে। মঙ্গলবার বেলা ১১ থেকে অবরোধের সূত্রপাত ঘটে এবং এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা বহাল রয়েছে। পুলিশ, ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত সোমবার কেন্দ ীয় ছাত্রলীগের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে রূপগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের পুরনো কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মঙ্গলবার দুপুর ১১টার দিকে পুরনো কমিটির নেতাকর্মী ও তাদের অনুসারীরা কাঞ্চন সেতু এলাকায় জড়ো হয়ে এশিয়ান হাইওয়ে মহাসড়ক বন্ধ করে দেয়। পরে তারা দুপুর ১২টার দিকে গোলাকান্দাইল এলাকার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে টায়ারে অগ্নিসংযোগ করে মহাসড়কটি বন্ধ করে দেয়। একই সময় ছাত্রলীগের কর্মীরা সুলতানা কামাল সেতু ও রূপগঞ্জ ফেরি অবরোধ করে। দুপুর দেড়টার দিকে পুলিশ তাদের মহাসড়ক থেকে ওঠে যেতে বললে পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর বেধড়ক লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পুলিশের লাঠিচার্জে বাবু, শফিউল্লাহ, আসাদ, সুমন ও রাজু নামে ছাত্রলীগের ৫ কর্মী আহত হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুম চৌধুরী অপু, ভুলতা ইউনিয়নের সভাপতি হানজালা, সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহকে আটক করে। ছাত্রলীগ নেতাদের আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার নেতাকর্মীরা আবার ভুলতায় জড়ো হয়ে আটককৃতদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য ভুলতা ফাঁড়ির সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে । পরে নেতাকর্মীদের চাপের মুখে পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয়। মুক্তি পাওয়ার পর তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভুলতা এলাকায় মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকে। এ সময় তারা স্থানীয় এমপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেয়।

এদিকে বিকাল ৩টার দিকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কাঞ্চন, গোলাকান্দাইল, টেংরারটেক এলাকায় দুই শতাধিক গাড়ি ভাংচুর করে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

এ ব্যাপারে পুরনো কমিটির সভাপতি মাসুম চৌধুরী অপু বলেন, যেসব অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ড হচ্ছে তা নিরসন না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাব। নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান সজিব বলেন, সম্পূর্ণ গঠনতান্ত্রিক মোতাবেক ও কেন্দ ীয় ছাত্রলীগের অনুমোদনক্রমেই কমিটি হয়েছে।

একাধিক সূত্র জানায়, পুরনো কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে হত্যা, খুন, অসামাজিক কার্যকলাপের একাধিক মামলা রয়েছে।

রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান মীর বলেন, ছাত্রলীগের ছেলেরা কমিটি ভাঙ্গার ঘটনা রাস্তায় নেমে এসেছে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে। দুই শতাধিক গাড়ি ভাংচুর হয়নি। তবে কিছু গাড়ি ভাংচুর হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতীক) বলেন, বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে পুরনো কমিটি ভেঙে দিয়ে দক্ষ ও পরিশ্রমী এবং সাংগঠনিক ছেলে দিয়ে নতুন কমিটি করা হয়েছে।


 

 
শনি
রোব
সোম
মঙ্গল
বুধ
বৃহ
শুক্র