jugantor
ছাত্রলীগের দু’পক্ষে সংঘর্ষ
ভাসানী ভার্সিটিতে সব পরীক্ষা স্থগিত ১৫ ছাত্র বহিষ্কার

  টাঙ্গাইল প্রতিনিধি  

২১ অক্টোবর ২০১৪, ০০:০০:০০  | 

ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে টাঙ্গাইলে মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। দীর্ঘদিন এককভাবে দখলে রাখার পর ছাত্রলীগের ক্যাডার সুমন ফকির গ্রুপকে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করেছে ছাত্রলীগের অপর পক্ষ মুশারফ গ্রুপ। রোববার থেকে তারা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মিছিল সমাবেশের মধ্য দিয়ে ক্যাম্পাস দখলে রেখেছে।

ছাত্রলীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষ, উত্তেজনা ও অস্থিতিশীল পরিবেশের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের সেমিস্টার পরীক্ষা ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে রোববার রাতে এক সভায় শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে ছাত্রলীগের সুমন ফকির গ্র“পের প্রধান ও সিপিএস বিভাগের সুমন ফকিরসহ বিভিন্ন বিভাগের ১৫ ছাত্রকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়। ভিসির সভাকক্ষে শিক্ষক, বিভাগীয় প্রধান ও অফিস প্রধানদের এক যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগ।

বহিষ্কৃত অপর ছাত্ররা হলেন- সিপিএস বিভাগের রাকিব হাসান, জিএম মামুন, আতাউর রহমান সংগ্রাম, জহিরুল ইসলাম, নাইমুর রহমান সীমান্ত, আবুল আনাস পারভেজ, বিবিএ বিভাগের মো. আলামিন, আরিফ সরদার, রাকাতুর রহমান, সিএইচ বিভাগের জাবির ইকবাল, বিজিই বিভাগের মেহেদী হাসান, পূর্ণেন্দু বসু পার্থ ও এফটিএনএস বিভাগের অভিজিৎ মুৎসুদ্দিসহ আরও একজন ছাত্র।

সাধারণ ছাত্ররা জানায়, ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শনিবার রাতে ছাত্রলীগের ক্যাডার সুমন ফকির গ্র“পের সঙ্গে মুশারফ গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। এ সময় মুশারফ গ্র“পের ছাত্ররা সুমন ফকিরের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে সুমন গ্রুপ ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য হয়। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস মুশারফ গ্রুপের দখলে চলে যায়। এরপর থেকেই ছাত্রলীগের বিজয়ী গ্রুপ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে মহড়া দিচ্ছে। ছাত্রলীগের ব্যানার নিয়ে তারা দফায় দফায় ক্যাম্পাসে মিছিল ও সমাবেশ করছে।

সাধারণ ছাত্রদের অনেকের অভিযোগ, টাঙ্গাইলের সন্তোষে প্রতিষ্ঠিত মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পূর্ণ রাজনীতি ও ধূমপানমুক্ত একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের একশ্রেণীর শিক্ষক ও বিভাগীয় প্রধান নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত করতে সাধারণ ছাত্রদের ব্যবহার করে বিভিন্ন সময়ে ফায়দা লুটেছে। পরিকল্পিতভাবে ছাত্রদের ব্যবহার করে তারা ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে। ফলে এক সময় আওয়ামী ঘরানার সুবিধাবাদী ওই চক্রের কাছে ভিসিসহ সবাই অসহায় হয়ে পড়েন। যদিও বর্তমান ভিসি অধ্যাপক ড. আলাউদ্দিন দায়িত্ব নেয়ার পর কিছু কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণে এখন ওই চক্রটি অনেকটা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে।

মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর জেলা ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে তাদের কর্তৃত্ব গড়ে তুলতে মরিয়া হয়ে পড়ে। সিপিএস বিভাগের ছাত্র সুমন ফকিরের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে একক আদিপত্য গড়ে তোলা হয়। তাদের অত্যাচারে সাধারণ শিক্ষার্থীরা গত কয়েক বছরে অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারাও বাড়িঘর ছেড়ে এখন চলে যাওয়ার মতো অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় ক্যাম্পাস থেকে সুমন গ্রুপের বিদায়ের কারণে আপাতত ভুক্তভোগীরা কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছে।



সাবমিট
ছাত্রলীগের দু’পক্ষে সংঘর্ষ

ভাসানী ভার্সিটিতে সব পরীক্ষা স্থগিত ১৫ ছাত্র বহিষ্কার

 টাঙ্গাইল প্রতিনিধি 
২১ অক্টোবর ২০১৪, ১২:০০ এএম  | 
ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে টাঙ্গাইলে মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। দীর্ঘদিন এককভাবে দখলে রাখার পর ছাত্রলীগের ক্যাডার সুমন ফকির গ্রুপকে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করেছে ছাত্রলীগের অপর পক্ষ মুশারফ গ্রুপ। রোববার থেকে তারা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মিছিল সমাবেশের মধ্য দিয়ে ক্যাম্পাস দখলে রেখেছে।

ছাত্রলীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষ, উত্তেজনা ও অস্থিতিশীল পরিবেশের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের সেমিস্টার পরীক্ষা ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে রোববার রাতে এক সভায় শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে ছাত্রলীগের সুমন ফকির গ্র“পের প্রধান ও সিপিএস বিভাগের সুমন ফকিরসহ বিভিন্ন বিভাগের ১৫ ছাত্রকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়। ভিসির সভাকক্ষে শিক্ষক, বিভাগীয় প্রধান ও অফিস প্রধানদের এক যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগ।

বহিষ্কৃত অপর ছাত্ররা হলেন- সিপিএস বিভাগের রাকিব হাসান, জিএম মামুন, আতাউর রহমান সংগ্রাম, জহিরুল ইসলাম, নাইমুর রহমান সীমান্ত, আবুল আনাস পারভেজ, বিবিএ বিভাগের মো. আলামিন, আরিফ সরদার, রাকাতুর রহমান, সিএইচ বিভাগের জাবির ইকবাল, বিজিই বিভাগের মেহেদী হাসান, পূর্ণেন্দু বসু পার্থ ও এফটিএনএস বিভাগের অভিজিৎ মুৎসুদ্দিসহ আরও একজন ছাত্র।

সাধারণ ছাত্ররা জানায়, ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শনিবার রাতে ছাত্রলীগের ক্যাডার সুমন ফকির গ্র“পের সঙ্গে মুশারফ গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। এ সময় মুশারফ গ্র“পের ছাত্ররা সুমন ফকিরের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে সুমন গ্রুপ ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য হয়। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস মুশারফ গ্রুপের দখলে চলে যায়। এরপর থেকেই ছাত্রলীগের বিজয়ী গ্রুপ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে মহড়া দিচ্ছে। ছাত্রলীগের ব্যানার নিয়ে তারা দফায় দফায় ক্যাম্পাসে মিছিল ও সমাবেশ করছে।

সাধারণ ছাত্রদের অনেকের অভিযোগ, টাঙ্গাইলের সন্তোষে প্রতিষ্ঠিত মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পূর্ণ রাজনীতি ও ধূমপানমুক্ত একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের একশ্রেণীর শিক্ষক ও বিভাগীয় প্রধান নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত করতে সাধারণ ছাত্রদের ব্যবহার করে বিভিন্ন সময়ে ফায়দা লুটেছে। পরিকল্পিতভাবে ছাত্রদের ব্যবহার করে তারা ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে। ফলে এক সময় আওয়ামী ঘরানার সুবিধাবাদী ওই চক্রের কাছে ভিসিসহ সবাই অসহায় হয়ে পড়েন। যদিও বর্তমান ভিসি অধ্যাপক ড. আলাউদ্দিন দায়িত্ব নেয়ার পর কিছু কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণে এখন ওই চক্রটি অনেকটা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে।

মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর জেলা ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে তাদের কর্তৃত্ব গড়ে তুলতে মরিয়া হয়ে পড়ে। সিপিএস বিভাগের ছাত্র সুমন ফকিরের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে একক আদিপত্য গড়ে তোলা হয়। তাদের অত্যাচারে সাধারণ শিক্ষার্থীরা গত কয়েক বছরে অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারাও বাড়িঘর ছেড়ে এখন চলে যাওয়ার মতো অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় ক্যাম্পাস থেকে সুমন গ্রুপের বিদায়ের কারণে আপাতত ভুক্তভোগীরা কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছে।



 
শনি
রোব
সোম
মঙ্গল
বুধ
বৃহ
শুক্র