বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন

চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হবে ৬.৪ শতাংশ

 যুগান্তর ডেস্ক 
১৩ জানুয়ারি ২০২২, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৪ শতাংশ হতে পারে।

আর আগামী অর্থবছর অর্থাৎ ২০২২-২৩-এ প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াতে পারে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ।

বিশ্বব্যাংকের ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস ২০২২’ বা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সম্ভাবনা শীর্ষক এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি নিয়ে নতুন এ পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনটি মঙ্গলবার রাতে ওয়াশিংটন থেকে প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রফতানি বাণিজ্যের পালে জোর হাওয়া লেগেছে, বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতের প্রবৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক।

এ খাতের নেতৃত্বেই রফতানি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এর সঙ্গে দেশীয় চাহিদাও বেড়েছে। শ্রম আয় ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধির কারণে এটি ঘটেছে। বিশ্বব্যাংক বলছে, প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি হচ্ছে দেশীয় চাহিদা বৃদ্ধি। তবে এই চাহিদা ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে।

এর আগে গত বছরের জুন মাসে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি নিয়ে যে পূর্বাভাস দিয়েছিল বিশ্ব ব্যাংক, জানুয়ারি মাসে সেটা বৃদ্ধি করেছে তারা।

চলতি অর্থবছরের জন্য তারা প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস বৃদ্ধি করেছে ১ দশমিক ৩ শতাংশ এবং আগামী অর্থবছরের জন্য বৃদ্ধি করেছে শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ। প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস বৃদ্ধির অর্থ হলো, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে বিশ্বব্যাংক আশাবাদী।

প্রতিবেদনে তবে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির হার ২০২১-২৩ সময়ে অনেকটাই কমে আসবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ২০১০-১৯ সালে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির হার ছিল ৪ শতাংশ, কিন্তু ২০২১-২৩ সালে তা কমে ২ শতাংশের নিচে নেমে আসবে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছর শেষে ভারতের প্রবৃদ্ধি দাঁড়াবে ৮.৩ শতাংশে আর ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা দাঁড়াবে ৮.৭ শতাংশে। পাকিস্তানে চলতি অর্থবছর প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ৩.৪ শতাংশে আর ২০২২-২৩ অর্থবছরে গিয়ে তা দাঁড়াবে ৪ শতাংশে।

২০২১ সাল ছিল অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের বছর। কিন্তু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির হার কমে যেতে পারে, ২০২১ সালে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ২০২২ সালে ৪ দশমিক ১ শতাংশে নেমে আসতে পারে।

২০২৩ সালে তা আরও কমে ৩ দশমিক ২ শতাংশে নেমে আসতে পারে। ২০২০ সালের অপূর্ণ চাহিদার ভার কমে যাচ্ছে। আবার অনেক দেশ মহামারিজনিত প্রণোদনা তুলে নিচ্ছে। এসব কারণে চলতি বছর থেকে প্রবৃদ্ধির হার কমে আসবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি হোঁচট খাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মতো বড় দেশের চাহিদা কমে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে উন্নয়নশীল দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর সাধারণ মানুষের জীবন আরও দুর্বিষহ করতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি আরও অনেক দিন থাকবে বলেই ধারণা করছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস জানান, বিশ্ব অর্থনীতি একই সঙ্গে কোভিড-১৯, মুদ্রাস্ফীতি এবং নীতির অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান বৈষম্য এবং নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বিশেষভাবে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন